সময়টা ঠিক মনে নেই।অনেক দিন ধরে ফেসবুক ব্যবহার করি।হটাৎ একটি নোটিফিকেশন দেখলাম আমার বগুড়া মেডিকেল এর এক ফ্রেন্ড লাইক করেছে একটি পেজ নাম ভালোবাসার গল্প।যদিও ভালবাসার ব্যাপারগুলি অধিকাংশই ন্যাকামি মনেহয় তবুও পেজৈ ওপেন করে লাইক করলাম।কারন ছোটবেলা থেকেই আমার গল্পের বই পড়ার তুমুল নেশা,তাই ভাবলাম আর যাই হোক কিছু গল্পতো পড়া যাবে।সেখান থেকে শুরু।একের পর এক গল্প পড়তাম।ধীরে ধীরে যেন এক ইন্দ্রজালে বন্দী হয়ে গেলাম।কিছু লেখা পড়ে অজান্তেই চোখ ভারী হয়ে আসত,কিছু পড়ে মনটা ভরে উঠত।লেখগুলো যেন বার বার পড়া যায় এজন্য শুরু করলাম এম এস ওয়া্রড ডকুমেন্ট আকারে লেখাগুলো সেভ করা।আমার সংরক্ষনে সবচেয়ে পুরনো গল্পটি হল (রাত্রি
by ভালবাসার গল্প on Monday, June 6, 2011 at 2:23pm)।ধীরে ধীরে পরিচিত হলাম অসাধারন প্রতিভাবান কিছু লেখকের।তাদের মধ্যে সাদ আহমেদ,একুয়া রেজিয়া,তৃপ্তসুপ্ত,শিহাব,অনিক,জয় কবির,আয়শা কাশফী,পম্পি,ও হ্যা ফারহানা নিম্মী,মেঘলা তাসনিম,আসিফ শুভ।এরা যে কখন আত্মার সঙ্গী হয়ে গিয়েছেন বুঝিনি।ও জুন ৬ থেকে আজ পর্যন্ত যতগুলো গল্প প্রকাশিত হয়েছে প্রায় সবগুলোই আমার কালেকশনে আছে।
আমার একটু ট্র্যাজিক টাইপের গল্প ভাললাগে।মনখারাপের সঙ্গী হিসেবে অসংখ্য দূর্বল মূহূর্তের,অসংখ্য গোপন অশ্রুর সাক্ষী এই পেজের লেখাগুলো।পড়তাম আর ভাবতাম ইস আমিও যদি এরকম লিখতে পারতাম।বুকের গভীরে অসম্ভব মায়া পুষে রাখি,অতি সংবেদনশীল মন নিয়ে চলি,গভীর আবেগ পুষে রাখি,কিন্ত প্রকাশ করতে পারি না।অথচ অবাক ব্যাপারটা হল আমি একজন ডাক্তার।রাতে এই পেজের গল্প পড়ে চোখ ভেজাই।দিনে ডিউটি করি মানুষের করুন ভোগান্তি কাছ থেকে দেখি।সাধ্যমত প্রতিকারের চেষ্টা করি।এত কঠিন পরিস্থিতিতেও মনের সংবেদনশীলতা হারিয়ে যেতে দেই নি।
মাঝে মাঝে খুব অবাক লাগে একুয়াপু,ফারহানাপু এত সুন্দর করে দৈনিন্দন জীবনের কথাগুলো কিভাবে অবলীলায় হৃদয়স্পর্শী করে কিভাবে লিখেন?শিহাব ভাই এর লেখা পরে বাবাকোয়ার মত একটি ফ্যামিলি পেতে খুব ইচ্ছে করে।জয় কবির,সাদ ভাইয়া এদের লেখা পড়ে শুধু ভাবি আমিও এক দিন..অবাক হলাম আয়শা আপু,পম্পিদি মেডিকেল এ পড়েন।এই কঠিন মেডিকেল লাইফের মধ্যেও তারা যেভাবে মনের সজীবতাটুকু ধরে রেখেছেন এটা অ্যামেজিং।ভালবাসায় সিক্ত থাক সবসময় অচেনা কিন্তু অসম্ভব কাছের মানুষগুলো।
এবার কিছু পাগলামীর কথা বলি।এই গল্পগুলি বেশ কয়েকটা ডিভিডি রাইট করে রেখেছি যেন ল্যাপিটা হারিয়ে গেলেও লেখাগুলো না হারায়।কম্পিউটারে লেখা পড়বার সময় বা ধৈর্য্য মাঝে মাঝে থাকেনা বলে একদিন কালি আর এক রীম কাগজ কিনে অনেকগুলো গল্প প্রিন্ট করেয়েছি।নাইট ডিউটি করবার সময় ওগুলি পরে অনেক সময় পার করেছি।আমার রুমমেটরা বন্ধুরা পাগলভাবে এগুলো করতে দেখে।কিন্তু এগুলো পড়বার আনন্দটা ওরা বোঝে না।নিজেরেই অনেক সময় বলি ওই ব্যাটা তুই না ডাক্তার,তোর না হাতের উপর চোখের সামনে কত মানুষ প্রতিনিয়ত মারা যায়,এসব দেখে তো তোর দিল পাথর হয়ে যাবার কথা,তবুও এই সব পাগলামী করিস।কিন্তু কি আর করা মন মানে না।আমার অনুভূতিগুলো প্রকাশ করবার জন্য সামুর একাউন্ট থেকে লিখছি।কারন ওখানে টাইপ করা সোজা কি না।
এই পেজের মানুষগুলোর ছবি দেখে খুব অবাক হয়েছিলাম,আরে এগুলো তো আমার বয়সি বা একটু বড়।অথচ কি এদের লেখনী শক্তি।বেচে থাক এই পেজের লেখকগুলি।এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০০০ এর বেশি গল্পের বই পরেছি বলে এখন যে কোন লেখার মান সম্পর্কে বলতে পারি।এটাকে অনেকে অহংকার ভেবে থাকলে মাফ চাইছি।
পরিশেষে একটা ফ্যান্টাসীর কথা বলি,কেউ সিরিয়াসলি নিবেন না।ছোটবেলায় হূমায়ুন আহমেদ এর বই পড়তাম আর মনে করতাম ওনাকে চুরি করে এনে আমার কাছে লুকিয়ে যদি রাখতে পারতাম,আর উনি প্রচুর বই লিখতেন আর আমি মজা করে পড়তে পারতাম।আবার মাসে রহস্য পত্রিকার পেছনে যেই দেখতাম হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড এর বই বের হবে সেবা প্রকাশনী থেকে।ঐদিন থেকে আর দিন ফুরাত না।এখন ভয়ে আছি কবে না সেবা থেকে ঘোষনা আসে ওনার সব বই অনুবাদ শেষ।কাজীদার জন্যও একই অনুভূতি কাজ করে।আর ভালবাসার গল্পপেজের একুয়াপু,ফারহানাপু,সুপ্তপু,কাশফীপু এদেরকে বিয়ে করে ফেলতে খুব ইচ্ছা করে,যেন নিয়মিত তাদের গল্প পড়তে পারি হা..হা..যদিও তাদের অনেকেই আমার চেয়ে বড়।মেঘলাপু বাদ,উনি পচা আগেই বিয়ে করে ফেলেছেন।যাক মজা করলাম।
বেচে থাক এই একদল স্বপ্নবাজ তরুন তরুনীদের পথচলা।পাঠকদের হৃদয়ে দোলা দিয়ে যাক তাদের লেখনী।নষ্ট শহরে হৃদয়হীন সময়ে একচিলতে আশার আলো হয়ে প্রতিনিয়ত পাঠকহৃদয়কে সজীবতার পরশ বুলিয়ে যাক তারা।অনেক অনেক শুভকামনা তাদের জন্য।
(অনেক দিন পড় আজ হঠাৎ করেই
ধুলোদের ভিড়ে এক আর্কেয়োপট্রিক্স পাখি গল্পটি পড়ে মনে হল অনুভুতি গুলো জানিয়ে দেয়া দরকার।তাই না লিখে পারলাম না।ভাল থাকুক পেজের লেখক পাঠক সকলেই প্রতিদিন প্রতিক্ষন।ধন্যবাদ)
ফেবু আইডি:Kafi Chowdhury