somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রত্যেকেরই সত্য ধর্মে থাকা উচিত- বাপ দাদার ধর্ম বলে অন্ধ অনুসরণ নয় ।

০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সকল ধর্মাবলম্বী মানুষ তার নিজের ধর্মকে ভালোবাসে । এটা মানুষের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া । আল্লাহ মানুষকে এভাবেই সৃষ্টি করেছেন যে, সে তার ধর্মকে ভালোবাসবে । কুরআনে আল্লাহ বলেছেন যে, আমি প্রত্যেকের নিকট তার ধর্মকে সুশোভিত বা আকর্ষণীয় করে দিয়েছি । এই কথার অর্থ কি ? এটার অর্থ হলো মানুষ মাত্রই তার ধর্মকে আপন মনে করে এবং অন্যের ধর্মকে পর মনে করে । কিন্তু খুব কম মানুষই এই আকর্ষণকে ঠেকিয়ে রেখে চিন্তা করে যে, আমি কি ঠিক ধর্মে আছি ? যারা চিন্তা করে তারা অন্ধের মতো অনুসরণ না করে জানতে চেষ্টা করে ।

এখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ ধর্ম পায় বাপ দাদার কাছ থেকে । তারা সেটা নিয়েই খুশী থাকে । কারণ তারা একটা সমাজ এবং সংস্কৃতির অর্ন্তভূক্ত হয়ে যায় ।

কিন্তু মানুষের জীবনের অন্য দিক চিন্তা করলে দেখা যায় অনেকে আবার বাপ দাদার পেশাগ্রহণ করেনা - সেখানে যুক্তি তর্ক খাটায় । বাপ দাদা হালচাষ করছে কিন্তু তারা শহুরে চাকুরীজীবি হতে চায় । কারণ যে কোন কারণে হোক সে এই পেশাকে নিজের পেশা হিসেবে মেনে নিতে চায় না । কিন্তু ধর্মের বেলায় মানুষ এরকম যুক্তি তর্ক খুব কমই খাটায় । মহানবী (সাঃ) যখন কাফের মুশরেকদের ইসলামের দাওয়াত দিয়েছিলেন তারা উত্তর দিয়েছিলো - আমরা বাপ -দাদার ধর্ম ত্যাগ করব ?

এর উত্তরে আল্লাহপাক-পবিত্র কুরআনে বলেছেন- মানুষ বলে আমরা কি বাপ দাদার ধর্ম ত্যাগ করব ? এখন বাপদাদা ভূল পথে থাকলেও কি তারা তা অনুসরণ করবে ?

প্রত্যেকের-ই উচিত তার নিজের ধর্মকে ভালোভাবে জানা এবং যদি সম্ভব হয অন্য ধর্ম সম্পর্কেও । ধর্ম একটা লাইফ ষ্টাইল নয় বরং এটা একটা পরিচিতি এবং বিশ্বাস । আপনি যদি মুসলমান হন তাহলে ঈদ পালন করা আপনার লাইফ স্টাইল নয় বরং এটা আপনার ধর্মীয় উৎসব উদযাপন । যে রোজা রাখেনা কিন্তু রোজার ঈদ পালন করে লাইফ স্টাইল হিসেবে সে ধর্মকে সংস্কৃতির সাথে মিলিয়ে ফেলেছে । ইসলাম ধর্ম অনুসারে যারা রোজ রাখে তাদেরই একমাত্র ঈদ ।

আপনি যদি ভূল বিশ্বাসে থাকেন , ভূল পথে জীবন পরিচালিত করেন তবে আপনার পুরো জীবনটাই ভূলের উপর গেল । যেমনঃ আপনি রওনা দিয়েছেন নিউইয়র্ক আর যদি সিডনীর প্লেনে উঠেন আপনি আপনার গন্তব্যে পৈাছতে পারবেন না । এমন অনেক বিষয় আছে যে, জীবনের একটি ভূলের কারণে সারা জীবন পস্তাতে হয় । শত চেষ্টা করেও তার ক্ষতিপূরণ হয় না । মৃত্যু সবাইকেই গ্রাস করবে , যা কঠিন সত্য । এখন যে ভূল ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে মৃত্যু বরণ করল তার ক্ষতি মৃত্যুর পরে আর পুষিয়ে নেওয়া যাবেনা । সারা জীবন নেচে গেয়ে কাটিয়ে দিলাম অথবা অর্থের পিছনে কাটিয়ে দিলাম আর মৃত্যুর কথা মনে হলেই এই বলে মনকে শান্ত্বনা দিতাম যে সবার যা হবে আমারও তাই হবে - সেটা কি আপনি অন্য বিষয়ের ক্ষেত্রেও করেন ? ছাত্র বয়সে পড়ালেখা না করে যদি বলেন সবার যা হবে আমারও তাই হবে - তা কি আপনার জীবনটাকে ধ্বংস হওয়া ঠেকিয়ে রাখতে পারবে ?

মানুষকে আল্লাহ তার নিজের ধর্মের প্রতি আকর্ষিত করে দেয়ার মানে আবার এই না যে আল্লাহ চান যে মানুষ যে যে ধর্মে আছে সেই ধর্ম পালন করুক । তাহলে আর যুগে যুগে এত নবী রাসূল উনি পাঠাতেন না । দুনিয়াতে দুইটা শক্তির খেলা চলছে - একটা সত্যের আরেকটা মিথ্যার । সত্যটার পিছনে স্রষ্টার হাত থাকে আর মিথ্যার পিছনে থাকে শয়তানের । শয়তান সব সময় বিভিন্ন ভাবে সত্যটাকে চাপা দিতে বা বিকৃত করতে সচেষ্ট । স্রষ্টা সেই বিকৃতটাকে বা চাপা দেওয়া সত্যটাকে উপরে উঠিয়ে নিয়ে আসেন । শয়তানের শক্তি নেই স্রষ্টার সাথে পারে কিন্তু স্রষ্টা তাকে সুযোগ দিয়ে রেখেছেন মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য । শয়তানের কাজ কারবার খুবই লোভনীয় এবং আকর্ষণীয় । তা উপেক্ষা করতে সতর্কতার প্রয়োজন - স্রষ্টার সাহায্য প্রয়োজন । যেমনঃ খারাপ দিকে যাওয়া খুবই সহজ । কিন্তু খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে সাধনা এবং প্রার্থনার প্রয়োজন । আপনি না চাইতেই যদি স্রষ্টা আপনাকে রক্ষা করেন তবে আপনি ভালোর মূল্য বুঝবেন না । সত্য পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করতে হয় আর মিথ্যা আপনি পায়ে এসে পড়ে থাকে । সত্য উপর থেকে দেখতে কদর্য মনে হতে পারে কিন্তু ভিতরে মধুর মত মিস্টি । আর মিথ্যা উপরে চাকচিক্যময় কিন্তু ভিতরে তিতা । এজন্য দেখা যায় যারা সত্য ধর্মে থাকে - সত্যের দেখা পায় তাদেরকে সত্য থেকে কোন ভাবেই বিচ্যুত করা যায় না । আর মিথ্যার তো কোন নীতি-ই নেই । সে যে কোন ভাবে টিকে থাকতে চায় । টিকে থাকাই তার লক্ষ্য, নীতি রক্ষা তার লক্ষ্য নয় । কিন্তু সত্যের ক্ষেত্রে বিষয়টা বিপরীত । নীতি রক্ষার ক্ষেত্রে তার কোন আপস নেই । এজন্য যে কোন মূল্য দিতে সে প্রস্তুত ।

এগুলো সবই হলো সত্য মিথ্যা নির্ণয়ের কিছু নমুনা । যারা অন্তর খোলা রেখে জীবনে চলে তারা সত্যের সন্ধান পায় আর যারা অন্তরকে অন্যের দাসে পরিণত করে ফেলে তারা অন্ধের মত অন্যকে অনুসরণ করে ।

শেষ বিচারের দিনে শয়তান আদম সন্তানকে বলবে - আমি তো তোমাদের কোন কিছু করতে বাধ্য করিনি । আমি তো কেবল তোমাদের আহ্বান করেছি- ডেকেছি । আর তোমরা আমার আহ্বানে সাড়া দিয়েছে । এখন আমাকে কেন দোষ দাও । এরকমই হবে মানুষের পরিণতি। মানুষ তার বিচার বুদ্ধিকে কাজে না লাগিয়ে যখন নিজের পরিপার্শ্বকে অন্ধের মত অনুসরণ করে জীবন পরিচালিত করে তখন তাকে এ কথাই তো শুনতে হবে । টাকা পয়সা বাড়ী-গাড়ী করতে তুমি কত হিসাব কর কিন্তু স্রষ্টার অনুসরণে কেন তখন অত সতর্ক হওনা ? তোমার সৃষ্টি কর্তার মূল্য কি তোমার কাছে এসব থেকে কম হয়ে গেল ? তাই যদি হয়, তবে শেষ বিচারের দিনে সৃস্টিকর্তাকে দোষ দিতে পারবেনা । তিনি জানেন মানুষের অজুহাত এবং তিনি ন্যায় বিচারক । যারা সত্য পথে থাকবে আর সঠিক কাজ করবে তাদের কর্মকে তিনি বৃথা করবেন না আর যারা উনার স্মরণকে অবহেলা করেছে, মিথ্যা নিয়েই সন্তুষ্ট থেকেছে তারা তাদের প্রতিদান পাবে । এই ব্যাপারে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই ।



সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:৫৫
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

লিখেছেন আবু ছােলহ, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৮

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

গুগল থেকে নেয়া ছবি।

সামুতে মাল্টি নিক নিয়ে অনেকেই কথা বলেন। অনেকের কাছে মাল্টি যন্ত্রণারও কারণ। শুধু যন্ত্রণা নয়, নরক যন্ত্রণাও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×