somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তখন আর প্রতিবাদ করার কেউ থাকবে না।

০৭ ই নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সময়টা ১৯৩৯-১৯৪৫। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নারকীয় ভয়াবহতার সময়কাল। জার্মান কবি (Nicmoller) এ ভয়াবহতাকে তুলে ধরেছন তার অমর সৃষ্টি First they came for the Jews কবিতার মাধ্যমে । নিরবতা একটি জাতিকে কিভাবে শেষ করে দেয় তা তিনি তুলে ধরেছেন এভাবে

First they came for the Jews
And I did not speak out
Because I was not a Jew
Then they came for the communist
And I did not speak out
Because I was not a communist
Then they came for the trade union
And I did not speak out
Because I was not a trade unionist
Then at last they came for me
And there was no one left to
Speak out for me.

তারা প্রথমে ইহুদীদের ধরতে এসেছিল,
কিন্তু আমি প্রতিবাদ করিনি,
কারণ আমি তো ইহুদী ছিলাম না।
তারপর তারা কমিউনিষ্টদের ধরতে এসেছিল
তখনও আমি প্রতিবাদ করিনি
কারণ আমি তো কমিউনিষ্ট নই
তারপর তারা ট্রেড শ্রমিকদের ধরতে এসেছিল
তখনও আমি কথা বলিনি
কারণ আমি তো ট্রেড শ্রমিক নই
তারপর অবশেষে তারা আমাকে ধরতে এসেছিল
তখন আমার পক্ষে কথা বলার
আর কেউ অবশিষ্ট ছিল না।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেই কথাগুলো আজকের বাংলাদেশীদের মানুষদের জন্য ক্রমেই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে। ফ্যাসিজমের চর্ত্রিই হচ্ছে ধ্বংস করা, কোন কিছু গড়া তার স্বভাব বিরুদ্ধ। তবে ফ্যাসিজম তার চরিত্রকে এক সাথে প্রকাশ করে না। ধীরে ধীরে একের পর এক ভিন্ন মতকে দমন করে একটা পর্যায়ে ফ্যাসিজম স্বরূপে আবির্ভাব হয়। আজ বাংলাদেশের ঘাড়ে ফ্যাসিজম তার বিষাক্ত নিংশ্বাস ফেলছে। অত্যন্ত পরিকল্পিত ভাবে ভিন্ন মতকে নিভিয়ে দেবার চেষ্টা চলছে। সমস্যাটা হলো ফ্যাসিবাদ বিরোধীরা অন্যের বিপদে নিজেকে গুছিয়ে রাখছে। ঘরপসড়ষষবৎ এর কবিতার মতো কারো বিপদে কেউ এগিয়ে আসছে না। এর পরিণতি কি হবে? সব মত, আদর্শকে দমন করার পর এক সময় সর্বশেষ আদর্শটিকে যখন আঘাত করা হবে , তখন তার জন্য কথা বলার আর কেউ অবশিষ্ট থাকবে না। বাংলাদেশের ইসলাম পন্থিদের নানা ইস্যুতে ফ্যাসিবাদীরা নাজেহাল করছে। ইসলামী তাহজীব –তামাদ্দুনকে শাহজালালের পূণ্যভুমি থেকে উৎখাত করতে চাইছে। বোরকা, হিন্দু-মুসলমান বিয়ে, কোরআন বিরোধী নারী নীতি, সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ এবং আল্লাহর প্রতি আস্থা তুলে দেয়া , ইসলামের বন্টননীতিসহ শরীয়ার গুরুত্বপূর্ণ বিধানসমূহে তাগুতী হাতের ছোবল দিচ্ছে ফ্যাসিবাদীরা। উদ্দেশ্য একটাই- ইসলামী চেতনাকে ও আদর্শকে পরাজিত করে ফ্যাসিজমকে বিজয়ী করা।
ঠিক এসময় সাংবাদিক , শ্রমিক, বুদ্ধিজীবীরা হাসছে। তারা নিজেদের নিরাপদ ভাবছে। ভুল। সবই ভুল। সাগর রুনির হত্যাকান্ড, মাহমুদুর রহমান ও আমার দেশের উপর ফ্যাসবাদী আক্রমণ,ইকরামুল হক ও শীর্ষ নিউজ নিষিদ্ধকরণ, চ্যানেল ওয়ান , যমুনা টিভির লাইসেন্স বাতিল করার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে ইসলামী শক্তিকে আপাত দুর্বল করে এবার ফ্যাসিজমের নগ্ন থাবা জার্নালিজমকে খামছে ধরেছে। ফ্যাসিজমের সম্প্রসারণে সাংবাদিক সমাজ বড় অন্তরায়। সুতরাং টার্গেট জার্নালিজম।

তখনও হাসছে সুশীল ! বুদ্ধিজীবি সমাজ,বড় রাজনৈতিক দল। ড. মুহাম্মদ ইউনুস, আর স্যার ফজলে হাসান আবেদকে নাকানি চুবানী খাওয়ানোর পর রফিকুল হক সাহেবরা বুঝতে পারলেন “ কত বড় বেকুবের দেশে আছি।” আমি বলি মশাই- ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে সম্মিলিত লড়াই না করলে বেকুব হওয়ার আরও ঢের বাকি আছে। এবার আমি বড় রাজনৈতিক দল জাতীয়তাবদী দলের কথায় আসি। ইসলামী শক্তি ,ছোট বড় ব্যবসায়ী, শেয়ারবাজার , সীমান্তে হত্যাকান্ড , বিডিআর ধ্বংস, হত্যা ,গুম, আর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস দেখে জাতীয়তাবাদী শক্তি ভাবছে “ঐ দেখা যায় বঙ্গভবন, ঐ আমাদের গণভবন।”
হরতালের গাড়ি ভাংচুরের মামালায় তাদের ৩৩ জন নেতাকে খোয়াড়ে ঢুকতে হবে কল্পনাও করেনি তারা। আমি বলি এখানেই ফ্যাসিজম সফল। একের পর একটি শক্তিকে ফ্যাসিবাদীরা দমন করছে। বড় দল হিসাবে জাতীয়তাবদীরা আশু বিপদ উপলব্ধি করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। স্বরণ রাখা দরকার ক্ষমতার দ্বন্ধে ফ্যাসিবাদের মূল প্রতিদ্বদ্বী জাতীয়তাবাদী শক্তি। ফ্যাসিজমকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে অব্যশই ন্যাশনালিজমকে পরাজিত করতে হবে। সুতরাং ফ্যাসিজমের মূল টার্গেটকেই তো ন্যাশনালিজম। ন্যাশনালিজমকে চূড়ান্ত আঘাত করার আগে ট্রায়াল ম্যাচে পথের কিছু আবর্জনা পরিষ্কার করলো ফ্যাসিবাদীরা। অপেক্ষায় থাকুন । চূড়ান্ত আঘাত আসছে। ইলিয়াস আলীকে গুম কারার মাধ্যমে সে আঘাতের সূচনা হয়েছে। ৩৩জন নাবিককে একত্রে বন্দী করলে জাহাজের যাত্রীদের কি হবে –এখনই বুঝা দরকার। চাই সম্মিলিত লড়াই। সাধু সাবধান। নইলে বলতে হবে

Then at last they came for me
And there was no one left to
Speak out for me.
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আইনের ফাঁকফোকর-০৩

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২

যেকোনো চাকরির নিয়োগের পরীক্ষা চলছে। সেটা পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বা উপজেলা পর্যায়ের কোনো কার্যালয়ে হতে পারে। এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×