শুষ্ক ত্বকে শীতের প্রভাব
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
ইতোমধ্যে শীতের আগমনী বার্তা শুরু হয়ে গেছে। আবহওয়ায় লেগেছে ঋতু পরিবর্তনের ছোঁয়া। শীত শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই ত্বক শুষ্ক হতে শুরু করে। শীতের সময় বাতাসে জলীয়বাষ্প কমে যাওয়ায় ত্বক থেকে পানি শুষে নেয় এবং এর প্রভাবে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। আবহাওয়া পরিবর্তন ছাড়াও আরও নানাবিধ কারণে ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যেতে পারে। চিকিৎসা পরিভাষায় এটিকে Xerosis বলা হয়ে থাকে। এটি এমন একটি সমস্যা যাতে কমবেশি সব বয়সীই আক্রান্ত হতে পারেন। সাধারণভাবে হাত, পা এবং পেটের উভয় দিক আক্রান্ত হয় বেশি। তবে অন্য স্থানেও এ পরিবর্তন হয়।
কিভাবে হয় : ত্বকের 'ইপিডার্মিস'-এ 'স্ট্যাটম কর্নিয়াম' নামে একটি স্তর থাকে। এটি অনেকটা পলিথিনের আবরণের মতো আমাদের শরীরকে আবৃত রাখে। এই স্তরই পানি ধারণ করে ত্বককে মসৃণ রাখতে সাহায্য করে এবং ক্ষতিকর পদার্থ শরীরে প্রবেশে বাধার সৃষ্টি করে। কোনো কারণে এই স্তর ক্ষতিগ্রস্ত/ পাতলা হয়ে গেলে পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যায় এবং সমস্যাটি তৈরি হয়।
কারণ : নানা কারণে ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হতে পারে যেমন-
আবহাওয়া : ঋতু পরিবর্তনে বাতাসে জলীয়বাষ্প কমে গেলে, ত্বক থেকে পানি শুষে নেয় এবং ত্বক রুক্ষ ভাব ধারণ করে। শীতে শুষ্ক ত্বকের প্রবণতা এ কারণেই হয়ে থাকে। এ ছাড়া ব্যবহৃত রুম হিটার, এয়ারকন্ডিশনারের কারণেও রুমের জলীয়বাষ্প কমে গিয়ে ত্বক শুষ্ক হয়।
বয়স : সাধারণত পঞ্চাশোধর্্ব বয়সীদের ত্বকের ইপিডার্মিস পাতলা হতে শুরু করে এবং ত্বকের পানি ধারণক্ষমতা কমে যায়। এর ফলে ত্বকও শুষ্ক এবং রুক্ষ হতে শুরু করে। যাদের বয়স ষাটোধর্্ব তারাই বেশি আক্রান্ত হন। মহিলাদের মাসিক বন্ধ মোনোপজ) হওয়ার পর এ সমস্যা প্রকাশ পেতে থাকে।
সূর্যালোক : সরাসরি সূর্যালোকের কারণে যে কোনো ঋতুতেই ত্বক শুষ্ক হতে পারে। কারণ সূর্যের উত্তাপে ত্বকের পানি ও নিঃসরিত তেল শুকিয়ে যায়।
সাবান ও ডিটারজেন্ট : সাবান, ক্লিনজার ও ডিটারজেন্ট ত্বকের ময়লা পরিষ্কার করার সময় ত্বকের পানি ও তেল শুষে নেয়। এর ফলে ত্বক শুকিয়ে যায়। এগুলো যতবেশি ক্ষারীয় ততবেশি তেল ও পানি শুষে নেয়।
রোগজনিত কারণ : শরীরে কিছু রোগে ত্বকের পানি ধারণক্ষমতা কমে যায় এবং ত্বক রুক্ষ হয়। ত্বকের রোগ যেমন এটপিক ডার্মাটাইসিস, সোরাইয়াসিস, ইকথায়োসিস ইত্যাদিতে ত্বক রুক্ষ হয়। তবে এসব ক্ষেত্রে রুক্ষতা ছাড়াও চুলকানি, ত্বক ফেটে যাওয়া, ত্বকে প্রদাহ এবং স্কেলিং লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া কিডনিজনিত রোগ এবং ভিটামিন (এ/ই)-এর ঘাটতিতে ত্বক রুক্ষ হতে পারে।
কিভাবে মুক্ত থাকবেন : কুসুম গরম পানিতে স্বল্প সময়ে গোসল শেষ করুন। গোসলের সময় কোমলভাবে সারা শরীর পানিতে ধুয়ে ফেলুন, কখনোই শরীর ঘষবেন না। সাবান ও ক্লিনজার যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করুন, ত্বকের ধরন অনুযায়ী এগুলো নির্বাচন করুন। গোসলের পর শরীরে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। রুমের ভেতর 'হিউমোডিফায়ার' ব্যবহার করুন। প্রচুর পানি পান করুন। খাদ্য তালিকায় সব সময় তৈলাক্ত মাছ রাখুন। সাবান ক্লিনজার ও ময়েশ্চারাইজার নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
লেখক : কনসালটেন্ট, চর্ম ও কসমেটিকজনিত রোগ, এশিয়ান জেনারেল হাসপাতাল। ফোন : ৯৮৮৬৯৭৩। ইতোমধ্যে শীতের আগমনী বার্তা শুরু হয়ে গেছে। আবহওয়ায় লেগেছে ঋতু পরিবর্তনের ছোঁয়া। শীত শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই ত্বক শুষ্ক হতে শুরু করে। শীতের সময় বাতাসে জলীয়বাষ্প কমে যাওয়ায় ত্বক থেকে পানি শুষে নেয় এবং এর প্রভাবে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। আবহাওয়া পরিবর্তন ছাড়াও আরও নানাবিধ কারণে ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যেতে পারে। চিকিৎসা পরিভাষায় এটিকে Xerosis বলা হয়ে থাকে। এটি এমন একটি সমস্যা যাতে কমবেশি সব বয়সীই আক্রান্ত হতে পারেন। সাধারণভাবে হাত, পা এবং পেটের উভয় দিক আক্রান্ত হয় বেশি। তবে অন্য স্থানেও এ পরিবর্তন হয়।
কিভাবে হয় : ত্বকের 'ইপিডার্মিস'-এ 'স্ট্যাটম কর্নিয়াম' নামে একটি স্তর থাকে। এটি অনেকটা পলিথিনের আবরণের মতো আমাদের শরীরকে আবৃত রাখে। এই স্তরই পানি ধারণ করে ত্বককে মসৃণ রাখতে সাহায্য করে এবং ক্ষতিকর পদার্থ শরীরে প্রবেশে বাধার সৃষ্টি করে। কোনো কারণে এই স্তর ক্ষতিগ্রস্ত/ পাতলা হয়ে গেলে পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যায় এবং সমস্যাটি তৈরি হয়।
কারণ : নানা কারণে ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হতে পারে যেমন-
আবহাওয়া : ঋতু পরিবর্তনে বাতাসে জলীয়বাষ্প কমে গেলে, ত্বক থেকে পানি শুষে নেয় এবং ত্বক রুক্ষ ভাব ধারণ করে। শীতে শুষ্ক ত্বকের প্রবণতা এ কারণেই হয়ে থাকে। এ ছাড়া ব্যবহৃত রুম হিটার, এয়ারকন্ডিশনারের কারণেও রুমের জলীয়বাষ্প কমে গিয়ে ত্বক শুষ্ক হয়।
বয়স : সাধারণত পঞ্চাশোধর্্ব বয়সীদের ত্বকের ইপিডার্মিস পাতলা হতে শুরু করে এবং ত্বকের পানি ধারণক্ষমতা কমে যায়। এর ফলে ত্বকও শুষ্ক এবং রুক্ষ হতে শুরু করে। যাদের বয়স ষাটোধর্্ব তারাই বেশি আক্রান্ত হন। মহিলাদের মাসিক বন্ধ মোনোপজ) হওয়ার পর এ সমস্যা প্রকাশ পেতে থাকে।
সূর্যালোক : সরাসরি সূর্যালোকের কারণে যে কোনো ঋতুতেই ত্বক শুষ্ক হতে পারে। কারণ সূর্যের উত্তাপে ত্বকের পানি ও নিঃসরিত তেল শুকিয়ে যায়।
সাবান ও ডিটারজেন্ট : সাবান, ক্লিনজার ও ডিটারজেন্ট ত্বকের ময়লা পরিষ্কার করার সময় ত্বকের পানি ও তেল শুষে নেয়। এর ফলে ত্বক শুকিয়ে যায়। এগুলো যতবেশি ক্ষারীয় ততবেশি তেল ও পানি শুষে নেয়।
রোগজনিত কারণ : শরীরে কিছু রোগে ত্বকের পানি ধারণক্ষমতা কমে যায় এবং ত্বক রুক্ষ হয়। ত্বকের রোগ যেমন এটপিক ডার্মাটাইসিস, সোরাইয়াসিস, ইকথায়োসিস ইত্যাদিতে ত্বক রুক্ষ হয়। তবে এসব ক্ষেত্রে রুক্ষতা ছাড়াও চুলকানি, ত্বক ফেটে যাওয়া, ত্বকে প্রদাহ এবং স্কেলিং লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া কিডনিজনিত রোগ এবং ভিটামিন (এ/ই)-এর ঘাটতিতে ত্বক রুক্ষ হতে পারে।
কিভাবে মুক্ত থাকবেন : কুসুম গরম পানিতে স্বল্প সময়ে গোসল শেষ করুন। গোসলের সময় কোমলভাবে সারা শরীর পানিতে ধুয়ে ফেলুন, কখনোই শরীর ঘষবেন না। সাবান ও ক্লিনজার যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করুন, ত্বকের ধরন অনুযায়ী এগুলো নির্বাচন করুন। গোসলের পর শরীরে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। রুমের ভেতর 'হিউমোডিফায়ার' ব্যবহার করুন। প্রচুর পানি পান করুন। খাদ্য তালিকায় সব সময় তৈলাক্ত মাছ রাখুন। সাবান ক্লিনজার ও ময়েশ্চারাইজার নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
লেখক : কনসালটেন্ট, চর্ম ও কসমেটিকজনিত রোগ, এশিয়ান জেনারেল হাসপাতাল। ফোন : ৯৮৮৬৯৭৩।
সরসঃ বিডি প্রতিদিন।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
এমপি আনারের মৃত্যু এবং মানুষের উষ্মা
সম্প্রতি ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার পর আনোয়ারুল আজীম আনার নামে একজন বাংলাদেশি এমপি নিখোঁজ এবং পরবর্তীতে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তার মরদেহের হাড়-মাংস আলাদা করে হাপিত্যেশ করে দেওয়া হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে “বাঘ” বলা বন্ধ করুন!!
দয়া করে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে “বাঘ” বলা বন্ধ করুন!! X( এরা ছাগলের দলই ছিল, তাই আছে, তাই থাকবে :-B !! এরা যেমন ধারার খেলা খেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন
নজরুলের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আমার গাওয়া ৩টি নজরুল গীতি শেয়ার করলাম
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রাণপুরুষ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৩০৬ সালের ১১ জ্যৈষ্ঠ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে এক গরিব পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন স্বাধীনতা ও সাম্যের... ...বাকিটুকু পড়ুন
মেট্রোরেল পেয়েছি অথচ হলি আর্টিজানে নিহত জাপানিজদের ভুলে গেছি
জাপানে লেখাপড়া করেছেন এমন একজনের কাছে গল্পটা শোনা৷ তিনি জাপানে মাস্টার্স করেছিলেন৷ এ কারণে তার অনেক জাপানিজ বন্ধু-বান্ধব জুটে যায়৷ জাপান থেকে চলে আসার পরেও জাপানি বন্ধুদের সাথে তার যোগাযোগ... ...বাকিটুকু পড়ুন
যুদ্ধে নিহত মনোজ দা’র বাবা
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
১৯৭১ সালের এপ্রিলের ছব্বিশ তারিখ। দেশে তখন ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়েছে। উচ্চ শিক্ষিত এবং কলেজ পড়ুয়া ছাত্রদের নিয়েই বেশি সমস্যা। তাদেরকে খুঁজে খুঁজে ধরে নিয়ে হত্যা করছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন