somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘেঁটু পুত্র কমলা – হতাশ হয়েছি, বিরক্ত হয়েছি ! X(

০৬ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গতকাল রাতে you tube এ দেখলাম ঘেঁটু পুত্র কমলা। দেখি দেখি করে বেশ দেরী হয়ে গেছে; এই ছবি নিয়ে কথা বলাটা মনে হয় একটু পুরাণ বিষয় হয়ে গেছে। তারপরও আমার প্রতিক্রিয়া না জানিয়ে পারছি না।
কোন ছবি খুব ভাল হবে এমন আশা নিয়ে দেখতে বসলে হতাশ হতে হয় – এটা আমার পুরাণ সূত্র। তাই ছবি দেখার আগে সাধারণত কারো কাছে ছবির কাহিনী আমি শুনতে চাইনা। ঘেঁটু পুত্র কমলা নিয়েও তেমনটা চেষ্টা করেছি; তারপরও হুমায়ূন আহম্মেদের শেষ ছবি- একটূ আশা ছিল বই কি! কিন্তু ছবি দেখার পর আমার পূরাণ সূত্র আবার সত্য প্রমানীত হলো।
ছবিটা দেখে আমি শুধু হতাশ হইনি, খুব বিরক্তও লেগেছে। আমার ধারণা ঘেঁটু সম্প্রদায় কে মানুষের কাছে পরিচিত করাটা তাঁর এই ছবির মূল উদ্দেশ্য; ছবির মহরত অনুষ্ঠানে সম্ভবত তিনি এমনটাই বলেছিলেন। সেটা অবশ্যই অত্যন্ত ভাল উদ্দেশ্য, কিন্তু সেটা করতে গিয়ে উনি যে কাহীনীটাকে বেছে নিয়েছেন তা এক কথায় জঘন্য। উনি অন্য ভাবেও এই সম্প্রদায়কে তুলে ধরতে পারতেন – সেই যোগ্যতা উনার ছিল। হ্যাঁ কাহিনী টা’ই আমার কাছে সবচেয়ে খারাপ লেগেছে। গা ঘিনঘিন করা একটা যৌন বিকৃতির গল্প, তাও একটা বাচ্চা ছেলেকে নিয়ে।
আমি আশা করেছিলাম ঘেঁটু দল যেহেতু গানের দল সেহেতু এই ছবিতে এমন কিছু ক্লাসিক গান থাকবে যা মানুষের মুখে মুখে ফিরবে। কিন্তু এখানে নতুন কোন ভাল গানতো নেই-ই বরং পুরানো কিছু প্রচলিত গান দিয়ে জোড়াতালি মারা হয়েছে।
হুমায়ূন আহমেদের সিনেমা, কিছু হাল্কা মজার বিষয় থাকবে – এটা আশাকরা নিশ্চয় খুব অন্যায় হবে না! সেখানেও একদম হতাশ হয়েছি।
ধারনা ছিল, ঘেঁটুদের জীবনযাপন সম্পর্কে ধারনা দেওয়ার জন্য খুব সুন্দর কোন লোকেশন থাকবে ছবিতে – এখানেও তথাকথিত কমার্শিয়াল পরিচালকদের মত এক চৌধুরী বাড়িতেই সুটিং শেষ করা হয়েছে। অবশ্য চৌধুরীর জীবনযাপন দেখানোর জন্য লোকেশনটা ভাল চয়েজ হয়েছে।
হুমায়ূন আহমেদ যা খাওয়াবেন পাবলিক তা গোগ্রাসে গিলবে - এমন ধারনা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে তাঁর সৃষ্টির মান কমতে শুরু করেছে। উনি একটা সবাক্ষাতকারে বলেছিলেন, পাবলিক নাকি বলে, অন্য লেখকদের লেখা দিন দিন ভাল হয় আর হুমায়ূন আহমেদের দিন দিন খারাপ হয়। উনি মজা করে বলেছিলেন এজন্যই অন্য লেখকদের থেকে উনি আলাদা। উনি মজা করেন আর যায় করেন, আমার ও ধারনা তাই; এই ছবিটা শুধু হুমায়ূন আহমেদের শেষ ছবি নয়, তাঁর নির্মিত সবচেয়ে বাজে ছবিও।
ঘেঁটু পুত্র কমলা সম্পর্কে আমার ওভারল কমেন্ট হচ্ছে – উনি বুঝতে পেরেছিলেন যে এই ছবির মধ্যে এমন কিছু নেই যে পাবলিক এর মনকে স্পর্শ করবে। তাই খুব স্থুল ভাবে একটা বিকৃত বিষয়কে সামনে এনে পাবলিকের মনে জোর করে দাগ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। সেটা করতে গিয়ে সিনেমার শেষে অপ্রয়োজনে বাচ্চাটাকে মেরেও ফেলা হয়েছে।
বিশিষ্ট সিনেমাবীদগন হয়ত চশমার উপর দিয়ে ভ্রু-কুচকে বিজ্ঞের মত বলবেন, “অহে মূর্খ তুমি কি বুঝবে এই সিনেমার ভিতরে কি গুঢ় মর্ম বিদ্যমান!” তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান পূর্বক আমি সবিনয়ে জানাব, জনাব! হুমায়ূন আহমেদ তো আপনাদের মত অতিবিজ্ঞ সাহিত্য বিশারদ দের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন না, উনি ছিলেন আমার মত কম জানা হালকা মেজাজের আমজনতাদের – আমরা কেন তাঁর সিনেমায় গুঢ় মর্ম খুজতে যাব??
যা হোক, সিনেমার সমালোচনা করতে গিয়ে আমিও মনে হয় আমার প্রিয় লেখকের প্রতি অনেকটা রুক্ষ হয়েছি (আল্লাহ্‌ তাঁকে শান্তিতে রাখুন!)।
আসলে গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত সিনেমা দেখে যখন আমার ছেলের (প্রায় কমলার সমবয়সী) পাশে গিয়ে শুয়েছি, আমার খুব খারাপ লেগেছে, আমার গা ঘিন ঘিন করছিল, এই সিনেমার কাহিনী মাথা থেকে দূর করতে আমার অনেক সময় লেগেছে। তাই বিরক্তিটা এখানে ঝাড়লাম!
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:৩০
২৩টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাকা ভাংতি করার মেশিন দরকার

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১০

চলুন আজকে একটা সমস্যার কথা বলি৷ একটা সময় মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা ছিল৷ চাইলেই টাকা ভাংতি পাওয়া যেতো৷ এখন কেউ টাকা ভাংতি দিতে চায়না৷ কারো হাতে অনেক খুচরা টাকা দেখছেন৷ তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেলা ব‌য়ে যায়

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩০


সূর্যটা বল‌ছে সকাল
অথছ আমার সন্ধ্যা
টের পেলামনা ক‌বে কখন
ফু‌টে‌ছে রজনীগন্ধ্যা।

বাতা‌সে ক‌বে মি‌লি‌য়ে গে‌ছে
গোলাপ গোলাপ গন্ধ
ছু‌টে‌ছি কেবল ছু‌টে‌ছি কোথায়?
পথ হা‌রি‌য়ে অন্ধ।

সূর্যটা কাল উঠ‌বে আবার
আবা‌রো হ‌বে সকাল
পাকা চু‌ল ধবল সকলি
দেখ‌ছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:১৪


কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়
আমার বাবা-কাকারা সর্বমোট সাত ভাই, আর ফুফু দুইজন। সবমিলিয়ে নয়জন। একজন নাকি জন্মের পর মারা গিয়েছেন। এ কথা বলাই বাহুল্য যে, আমার পিতামহ কামেল লোক ছিলেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×