somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফিরে আসেনি বেলা বোস।কারণ বেলা বোসেরা কখনও ফিরে আসেনা

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১২ রাত ১১:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুটির নাম আরিফ।আমরা স্কুল থেকে এক সাথেই পড়েছি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত।একসময় এক বালিকা ওর গভীর প্রেমে পড়েছিল।আমরা তার নাম দিয়েছিলাম ৩২২৯১।আমি আর আমার বন্ধু এভাবেই তার এই নাম দেই যাতে আমরা ৩২২৯১ এর ব্যপারে কথা বল্লেও বন্ধুর বাসার কেউ কখনো বুঝতে না পারে বা আমদের অন্যান্য বন্ধুরাও বুঝতে না পারে।মেয়েটি আইডিয়েল স্কুলে তখন ৭ম শ্রেণিতে পড়ত।আর আমরা তখন এস এস সি পরীক্ষা দিচ্ছিলাম।আমি যদিও বন্ধুর প্রেম করার বিরোধী ছিলাম।কারণ আমি আবার বিয়ের পরে প্রেমে বিশ্বাসী।মেয়েটি আবার আমার এই মনোভাবের কথা জানতো এবং এটাও জানতো যে আমি ওর প্রেমিকের খুবই প্রিয় বন্ধু।আমি চাইতাম না আমার বন্ধু বিয়ের আগে আর দশটা ছেলে মতো প্রেমিককে নিয়ে রাস্তায় ঘুরুক।প্রেম করছে ভাল কথা ঘুরবে বিয়ে করার পর।মেয়েটি চাইতো অন্তত মাঝে মাঝে হলেও তারা ঘুরবে।আমি তখন বন্ধুকে হুমকি দিতাম মেয়েটিকে নিয়ে ঘুরতে বের হলেই তোর বাসায় বলে দিব।একদিকে আমার হুমকি আর একদিকে ওই মেয়ের অনুরোধ রাখা নিয়ে বন্ধুর তখন চরম বিপদ।মাঝে মাঝে আমাকে ফাকি দিয়ে সাবধানে বের হত।আমার কানে এই খবর আসলেই আমি সরাসরি বব্ধুর বাসায় ওর আম্মাকে বলে দিতাম।ফলাফল স্বরুপ রাতে বন্ধু বাসায় আসলে মার খেতে হত।ওইটা যখন ওই মেয়ের কানে যেত তখন বেচারী আমার উপর রাগে ফেটে পড়ত।

মেয়েটি যখন ১০ম শ্রেণীতে পড়ত তখন তার বাবা তখনকার ও এখনকার প্রধানমন্ত্রী সাথে আমেরিকা সফরে যান।আমেরিকা থেকে মেয়ের জন্য চমতকার একটা ডায়েরী নিয়ে আসেন।ওই ডায়েরী জুড়ে ছিল আমার প্রিয় বন্ধুকে নিয়ে ওর যত আবেগের প্রকাশ।আর ছিল কিছু কবিতা।ওই ডায়রীতা আমার পড়ার সুযোগ হয়েছিল।আমার এখনো ওই ডায়রীতে লিখা কথাগুলো চোখের সামনে ভাসে।ওই ডায়েরীতে বন্ধুকে ওর ভালবাসার কথা আর তাদের ভবিষ্যতের সপ্ন নিয়ে লেখার পাশে আমার উপর যে তার কত রাগ সেটাও লিখা ছিল।যাহোক আমি ওই ডায়রী পড়ার পর মনে হয়েছিল এমন প্রেম আসলেই আসাধারণ।আমার বন্ধুটি ভাগ্যবান এমন মেয়ে পেয়েছে বলে।উপরের কবিতাটি ওই ডায়েরী থেকেই আমার ডায়েরীতে টুকে রেখেছিলাম।সেখান থেকেই এখানে লিখা বাস্তবের এই প্রেমের কবিতাটি।

অতৃপ্ত বাসনা
---৩২২৯১

বেনারশীর লাল পাড়ের আড়ালে
নিজেকে ক্ষণে ক্ষণে শুধু সাজিয়েই যাই
কখনো নববধু রুপে
কখনও কপট রাগে
কখনো চিরাচরিত সেই অভিমানীনীর ছায়ায়
অথবা লজ্জার শ্রোতধারায়।

আমার এই সাজের সপ্নে আমিই নায়িকা
ভাগ বাসানোর কেউ নেই।
কিন্তু তবুও আমি অতৃপ্ত
আমার নতুন বসনে,নতুন ভূষনে
কেমন যেন অষ্পষ্টতার ছায়া
বোধহয় কোথাও ফাক রয়ে গেছে
শুধু মনে হয়-
দুরে যেন আরো ভাল সাজ আমার প্রতীক্ষা করছে
তাই ভয় হয়।

পথ ভুলে যদি তোমাকে এড়িয়ে যাই
আর এই ভয়ই হয়তো আমার অতৃপ্ততা
তবু আমি সপ্ন দেখে যাই-
তোমার বধু হবার
তোমার সংগীনী হবার
তবে সে দিন বোধ হয় খুব বেশী দূরে নয়
যেদিন আর কল্পনার আয়নায় নয়
বাস্তবের আয়নায় দেখতে পাব নিজেকে
কোন এক নতুন সাজে
তখনই বুঝতে পারব-
বাস্তবের সাথে কল্পনার মিল কতটুকু-
আর তা এখন শুধু-
“সময়ের আপেক্ষা”।
(রাত ১টা ৪০ মিঃ)

আমার প্রিয় বন্ধুটির ভুলেই সে ওই মেয়েকে হারিয়েছে।বর্তমানে ৩২২৯১ বি সি এস ক্যাডারের ঘরনী আর আমার প্রিয় বন্ধুটি অনার্স করার পরই বেলজিয়াম প্রবাসী হয়।প্রবাস জীবনে তার সবচেয়ে বড় সম্পদ মেয়েটির দেয়া ওই ডায়েরীটি।যেদিন বন্ধুটি চলে যাবে তার আগের দিনও বন্ধুটি ওই মেয়েকে ফোন দিয়েছিল রিলেশনটা ঠিক রাখার জন্য।ঘন্টাখানেক ফোনে কাদতে কাদতে কত অনুনয় বিনয় করেছিল।আমার প্রিয় বন্ধুটির কষ্টে আমার সেদিন বুক ফেটে যাচ্ছিল।কিছুই হয়নি।ফিরে আসেনি বেলা বোস।কারণ বেলা বোসেরা কখনও ফিরে আসেনা

ব্লগে কবিতাটি লেখিকার অনুমতি না নিয়েই প্রকাশ করা হলো।এত বছর পরে মনে হয় কবিতাটিতেই মেয়েটি নিজের আজান্তেই তাদের রিলেশন যে ভবিষত এ থাকবে না সেটাই প্রকাশ করেছে যদিও ওই বয়সে আমার বন্ধু বা আমার কাছে কবিতাটির অর্থটা সেই রকম মনে হয়নি।বয়সের সাথে সাথে মনে হয় একই কবিতার অর্থও পরিবর্তন হয়ে যায়।কবিতাকেও বয়সে ধরে নাকি!!!!!
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ সকাল ৯:১৯
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরী

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরীঃ


১। নিজের সিভি নিজে লেখা শিখবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করার অভ্যাস থাকতে হবে। কম্পিউটারের দোকান থেকে সিভি বানাবেন না। তবে চাইলে, প্রফেশনাল সিভি মেকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×