somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জোরে হাঁটুন....জানুন এর উপকারিতা

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সূত্র হতে পড়তে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করতে পারেন

আমাদের অনেকেরই জীবন-যাত্রায় এখন কায়িক শ্রমের স্থান নেই বললেই চলে। এর ফলাফলটাও দেখা যাচ্ছে ইতোমধ্যেই। ডায়াবেটিস, ব্লাডপ্রেসার, স্ট্রোক ও হার্টের রোগে আক্রান্ত্ম আজ আমরা অনেকেই। একটু কায়িকশ্রম-নিদেনপক্ষে একটু হাঁটা আমাদেরকে এ সকল রোগের হাত থেকে অনেকটাই রক্ষা করতে পারে।

হাঁটার জন্য কোন যন্ত্রপাতির প্রয়োজন নেই। এতে স্বাস্থ্য ঝুকিও কম। সাধারণতঃ বয়স্ক কারোরই হাঁটতে বাধা নেই। তবে আগে থেকেই কারো হার্টের রোগ, বাত, হাঁপানী ইত্যাদি থাকলে হাঁটা শুরু করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া চাই। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটা চাই। ৪০ থেকে ৬০ মিনিট হলে আরো ভালো। সকাল/ বিকাল যেকোন সময় আপনি হাঁটতে পারেন-আপনার সুবিধা মতো। একজোড়া হাঁটার জুতো পায়ে দিয়ে বেড়িয়ে পড়-ন রাস্ত্মায়। খোলা মাঠ পেলে তো খুবই ভালো। হাঁটার রাস্ত্মাটা গোলাকার বা বর্গাকার হলে ভাল হয়। তাহলে হাঁটবেন ঠিকই কিন্তু বাড়ী থেকে বেশী দূরে যাবেন না। শীতের দিনে একটু বাড়তি কাপড়-চোপড় পরে নিন যাতে ঠান্ডা না লাগে। আস্ত্মে আস্ত্মে হাঁটার গতি বাড়ান। দৃষ্টি থাকবে সামনের দিকে। হাত দুটো দুই পাশে দোলবে। এমন ভাবে হাঁটুন যাতে আপনার সামনের লোকটাকে ধরে ফেলতে পারেন। হার্ট রেট বাড়তে দিন। এক সময় দেখবেন আপনি ঘেমে গেছেন, হার্টরেট ১২০ এর কোঠায়, শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হচ্ছে। কথা বলতে পারছেন ঠিকই কিন্তু গান গাইতে পারছেন না। এভাবে হাঁটতে থাকুন পুরো সময়টা। শেষের দিকে গতি আস্ত্মে আস্ত্মে কমিয়ে বাড়ী ফিরে আসুন। কত পা হাঁটলেন তাও মাপতে পারেন। একটা ‘পেডোমিটার’ কিনে নিলেই হ’ল। দেখতে অনেকটা মোবাইল ফোনের মতো। পকেটে রেখে দিন। কত পা হাঁটলেন তা দেখা যাবে এতে। যদি ২৪ ঘন্টায় ১০,০০০(দশ হাজার) পা হাঁটতে পারেন তা হলে খুবই ভালো। সময় ধরে হাঁটা ছাড়াও আপনি হাঁটতে পারেন সারাদিনই। অফিসের কাছাকাছি গাড়ী থেকে নেমে বাকী পথটুকু হেঁটে যান। লিফ্‌ট ব্যবহার না করে ৪/৫ তলা পর্যন্ত্ম হেঁটেই উঠা-নামা করুন। প্রতিদিন বাজার করাটা হেঁটে হেঁটেই সেরে নিন। ধারে-কাছে বেড়াতে গেলে হেঁটে-হেঁটে যান। তাহলেই দেখবেন রাতে ঘুমুতে যাওয়ার আগে ১০,০০০(দশ হাজার) পা হাঁটা হয়ে গেছে। রাতে ঘুম ভাল হবে। শরীরের খারাপ চর্বির মাত্রা কমে যাবে, ভাল চর্বির মাত্রা বাড়বে। ফলে হার্ট এটাকের ঝুঁকিও কমে যাবে। প্রতিদিন হাঁটলে প্রায় ২০০ কিলো-ক্যালরি খরচ হয়। এতে শরীরে জমা অতিরিক্ত চর্বি পুড়বে-ওজন কমবে। স্লিম থাকার জন্য পয়সা খরচ করে জিমে যাওয়া লাগবে না।

হাঁটার সময় মাংসপেশী গুলির সঞ্চালণের ফলে কোষগুলির গ্লুকোজ ব্যবহার বেড়ে যায়। শরীরের ইনসুলিন রস বেশী ব্যবহূত হয়। এর ফলে রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণ করা যায় সহজেই। হাঁটলে সারা শরীরে বেশী রক্ত সঞ্চালিত হয়। হার্ট ও মস্ত্মিষ্ক বেশী করে অক্সিজেন পায়। হার্ট এটাক কমে যায় এবং মস্ত্মিষ্কের কর্ম ক্ষমতা বেড়ে যায়। আপনি অনেক কিছু তখন মনে রাখতে পারবেন।

হাঁটলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে। ষ্ট্রোক ও কিডনী ফেইলুর এর মতো মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। হাঁটা মনকে উজ্জীবিত করে। মানসিক চাপ,উদ্বেগ ও বিষন্নতা কমায়। সকালের হাঁটা আপনাকে সারাটা দিন ফুরফুরে মেজাজে রাখবে।

আপনি হয়তো ভাবছেন আপনার রোজকার ব্যাস্ত্ম সিডিউল থেকে ৩০-৪০ মিনিট খামাকা নষ্ট করছেন। তা কিন্তু নয় মোটেই। হেঁটে হেঁটেও আপনি কাজ করতে পারেন। সারাদিনের কর্ম-পরিকল্পনাটা হাঁটতে হাঁটতেই সেরে ফেলুন না। দিনশেষে দেখবেন সারাটা দিন কত কাজে লাগাতে পেরেছেন। অনেক সমস্যার সমাধান আপনি হাঁটতে হাঁটতে বের করে নিজেই অবাক হয়ে যাবেন। হাঁটা বোরিং লাগছে? কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে একসাথে হাঁটুন। চলার পথে আপনার পছন্দের গানগুলি শুনতে পারেন একটার পর একটা মোবাইল ফোন বা এমপি-৩ পেস্নয়ার থেকে।

নিয়মিত হাঁটলে আপনার আয়ু বাড়বেই। গবেষণা করে এর প্রমান পাওয়া গেছে। আপনি দ্রুত বুড়িয়ে যাবেন না। শরীরটা একদম ফিট থাকবে।

লেখক :ডা . দীপক লাল বণিক
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১২ রাত ৮:০৪
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×