অদৃষ্টের অন্তরালে, তীক্ষ্ণধার অথচ নীরব খঞ্জর তুমি, স্বপ্নতমা, তোমার জিঘাংসা-রোষে এভাবেই অনবরত বিস্ময়স্তম্ভিত করে রাখো আমাকে! নৈঃশব্দ্যের ভেতর থেকে উৎসারিত তোমার সেই তীব্র ভৎর্সনা বিষমাখা তীরের মত গেঁথে যাচ্ছে আমার হৃৎপিণ্ডে; তা সত্বেও, ক্রন্দনরত অজস্র মানুষের বিনম্র মুখের কাছে মুখ থুবড়ে এই যে আমার পড়ে থাকা__ এ কেবলই বিরহমাত্র নয়__ ব্যক্তিগত ক্রন্দনে নুয়ে-পড়া বিকেলের বিধ্বস্ত মাঠ থেকে বহু আগেই উঠে দাঁড়িয়েছি আমি। আমার চারপাশে থমথমে মুখ নিয়ে বসে আছে মেঘাচ্ছন্ন ভাগ্যের বিষন্ন স্বদেশ; অস্থির, উজ্জ্বল ও কম্পমান নক্ষত্রের নিচেও এক রাত্রিঘন শতাব্দী, যার অপরিমেয় অন্ধকার ক্রমশ একটা খাঁচার ভেতরে পুরে ফেলছে আমাদের ভবিষ্যত।
সুদূরতমা, নিকট অতীতের স্ফটিক স্নিগ্ধতাকে অস্বীকার ক'রে ভবিষ্যতহীন এক বর্তমানের চূড়ায় উঠে দাঁড়ানো লাগামহীন তোমার অহমিকা, বিবর্ণ-বিদীর্ণ করছে আমাকে; প্রণয়-উদ্যানে, অন্তরালের রক্তপায়ী নীরব ঘাতক তুমি, স্বপ্নতমা, ত্রাণলাবণ্যের পুষ্পডালা ফুঁড়ে উদ্ভাসিত তোমার অদৃশ্য খঞ্জরে, পারো যদি, এফোঁড় ওফোঁড় করে দাও আমার স্বপ্নকে; অথবা প্রস্তুত হও, মুখোশ উন্মোচনের দিনে নিজস্ব মরীচায় নিজেরই মৃত্যুকে স্বাগত জানাবে ব'লে।