somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার কলকাতা ভ্রমণ ১ম পর্ব

৩১ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১১:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইন্ডিয়ার ভিসা পেয়েছিলাম প্রায় দ্বেড় মাস আগে। যাব যাব করে আর যাওয়া হচ্ছিলনা। অবশেষে গত ২৩ অক্টোবর রাতে সোহাগ পরিবহনে ঢাকা থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। ঢাকা থেকে বাস ছাড়ার কথা ছিল রাত ১২টায়। কিন্তু বাংলাদেশ বলে কথা। ১২টার বাস কি আর ১২টায় ছাড়ে? সেই বাস ছাড়ল রাত পোনে ১টায়। বেনাপোল গিয়ে পৌছলাম সকাল সাড়ে ৯টায়। কাষ্টমসের আনুষ্ঠানিকতা এবং কাষ্টমসের এপাড় ওপাড়ের দালালদের খুশি করে ১০টার সময় পৌছলাম পেট্রাপোলে সোহাগ পরিবহনের বাস কাউন্টারে। যাত্রী কম তাই বাস ছাড়তে দেরি হবে। বাস ছাড়ল ১১টায় কলকাতার উদ্দেশ্যে। রাস্তায় আবার ২০ মিনিটের যাত্রা বিরতি। আজাদ হাইন্ড ধাবা হোটেল দুপুরের খাবার সেরে নিলাম। ইন্ডিয়াতে আমার প্রথম খাবার। হোটেলটি নদীয়া জেলার বিরহী'তে অবস্থিত। যাত্রা বিরতি শেষে বাস ছাড়ল আবার কলকাতার উদ্দেশ্যে। কলকাতায় গিয়ে পৌছলাম বেলা আড়াইটার দিকে। বাস থামল মারকুইস স্ট্রীটে। তখন সবকিছুই অচেনা। যাবার সময় ইন্টারনেট থেকে কলকাতার একটা সিটি ম্যাপ প্রিন্ট করে নিয়ে গিয়েছিলাম এটাই সম্বল। দেখলাম মারকুইস স্ট্রীটের প্রবেশ মুখেই মির্জা গালিব স্ট্রীট। আমাকে যেতে হবে বৌবাজারে। একজনের কাছে কিছু পত্রিকা দিয়ে আসতে হবে। পরে দিলেও চলত,তবুও বাস থেকে নেমেই হেটে রওনা হলাম বৌবাজার এর উদ্দেশ্যে। যদি তাঁর কাছ থেকে থাকার কোন সহযোগিতা পাই। অনেক কষ্ট করে হেটে হেটে বৌবাজার থানা খুঁজে বের করলাম এবং কাঙ্খিত ঠিকানায় গিয়ে পৌছলাম। পত্রিকাগুলো দিয়ে খালি মুখেই ফিরে এলাম। কলকাতার লোক সম্পর্কে আমাদের দেশে যে প্রবাদটি প্রচলন আছে তার ২০০% বাস্তবতা উপলব্দি করলাম। ভদ্রলোক আমাকে বলল "কষ্ট করে এসেছেন যখন একটু চায়ের অর্ডার দেই?" মানে হল আপনে না খেলে অর্ডার দেওয়ার দরকার নেই। আমি বললাম না দাদা অনেক জার্নি করে এসেছিতো, ট্রায়াড হয়ে গেছি, আগে হোটেলে রুম নিয়ে ফ্রেশ হতে হবে। বলেই ভদ্রলোকের অফিস থেকে বের হয়ে আবার হাটা দিলাম মির্জা গালিব স্ট্রীটের দিকে। মির্জা গালিব স্ট্রীটের পাশেই চৌরঙ্গী লেন। এখানের একটা হোটেলের কার্ড ঢাকা থেকে নিয়ে গিয়েছিলাম। খুঁজে পেতে খুব কষ্ট হলনা। ৪০০ (চারশো) রুপিতে একটা সিঙ্গেল রুম নিলাম। রাতে আর কোথাও বের হলাম না। খাওয়া দাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়লাম।
দ্বিতীয় দিন: খুব সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই নাস্তা সেরে বেরিয়ে পড়লাম কলকাতা শহর দেখতে। ফোর্ট উলিয়াম, ইন্ডিয়ান যাদুঘর বিদ্যা সাগর ব্রীজ (হুগলী ব্রীজ), প্রিন্সেস ঘাট সৌধ, গঙ্গাঘাট (প্রিন্সেসঘাট সৌধ হতে মিলেনিয়াম পার্ক পর্যন্ত মমতা সরকার ক্ষমতায় আসার পর গুগলী নদীর তীর স্থানীয়ভাবে যার নাম গঙ্গাতীর সৌন্দার্যয়িত করা হয়েছে। সন্ধ্যার সময় এখানেও আমাদের টিএসসি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মত ইয়ং বয়সী জনসংখ্যার চাপ একটু বেরে যায়), ইডেন গার্ডেন ক্রিকেট স্টেডিয়াম, নেতাজী সুভাষ ইনডোর স্টেডিয়াম, পুলিশ মেমোরিয়াল, ধর্মতলা, কলকাতা আকাশবানী ভবন, কলকাতা হাইকোর্ট বিল্ডিং, বিধান সভা, রাজভবন, টাউন হল, ইত্যাদি ঘুরে প্রবেশ করলাম মিলেনিয়াম পার্কে। সবই আমার নিজের চাকার উপর ভর করে অর্থাৎ পায়ে হেঁটে। হোটেল থেকে বের হওয়ার সময়ই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যেহেতু রাস্তাঘাট চিনি না, তাই কোন যানবাহনে ছড়বনা। মিলেনিয়াম পার্কের প্রবেশ মুখেই দেখতে ফেলাম ফেরিঘাট। এখান থেকে মাত্র ৪ রুপি দিয়ে হাওড়া যাওয়া যায়। প্রায় ৬-৭ ঘন্টা হাটার পর আর ভালো লাগছিলনা, তাই ৪ রুপি দিয়ে টিকেট কেটে ফেরিতে উঠলাম ( ঠিক ফেরি না লঞ্চের মতই)। এই ৪ রুপিতে নদী ভ্রমণও হল আবার আমার একটু রেষ্ট নেওয়া হল। ২০ মিনিটের মধ্যে শেষ হয়ে গেল আমার নদী ভ্রমণ। ওপাড়ে চলে আসলাম। হেঁটে হেঁটে হাওড়া রেল ষ্টেশন পুরোটা ঘুরে দেখলাম। স্টেশনের তথ্য কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন ট্রেনের সময় সূচী জেনে স্টেশন থেকে বের হয়ে আবার হাটা ধরলাম হাওড়া ব্রীজের ওপর দিয়ে। ব্রীজের শেষ প্রান্তে এসে আর আমার দু'চাকার গাড়ী চলে না। উঠলাম শিয়ালদাহ গাড়ীতে ৬ টাকা দিয়ে নামবো পার্ক স্ট্রীট মোড়ে। পার্ক স্ট্রীট মোড় থেকে হেটে মির্জা গালিব স্ট্রীটে যাওয়া যায়। রুমে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। ফ্রেশ হয়ে খাবার খেতে গেলাম। আসার সময় চাঁদপুরের এক ভদ্রলোকে সাথে পরিচয় হল, ভদ্রলোক ঢাকা থেকে একা এসেছেন, আমিও একা। আলাপ আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নিলাম পরের দিন শান্তিনিকেতন যাব। চলবে ::আগামী পর্বে থাকবে আমাদের শান্তিনিকেতন ভ্রমণ কাহিনী::
ছবি দেখার জন্য এখানে ক্লিক করতে পারে
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০১২ রাত ১২:০৪
১১টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মায়ের নতুন বাড়ি

লিখেছেন সাদা মনের মানুষ, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২২

নতুন বাড়িতে উঠেছি অল্প ক'দিন হলো। কিছু ইন্টরিয়রের কাজ করায় বাড়ির কাজ আর শেষই হচ্ছিল না। টাকার ঘাটতি থাকলে যা হয় আরকি। বউয়ের পিড়াপিড়িতে কিছু কাজ অসমাপ্ত থাকার পরও পুরান... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। শিল্পী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৮










চিত্রকলার কোন প্রথাগত শিক্ষা ছিলনা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। ছোট বেলায় যেটুকু শিখেছিলেন গৃ্হশিক্ষকের কাছে আর পাঁচজন শিশু যেমন শেখে। সে ভাবে আঁকতেও চাননি কোন দিন। চাননি নিজে আর্টিস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাহান্নামের শাস্তির তীব্রতা বনাম ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে অমুসলিম উপস্থাপিত বিবিধ দোষ

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৪



জাহান্নামের শাস্তির তীব্রতার বিবেচনায় মুমিন ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে অমুসলিম উপস্থাপিত দোষারোপ আমলে নেয় না। আমার ইসলাম সংক্রান্ত পোষ্ট সমূহে অমুসলিমগণ ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে বিবিধ দোষের কথা উপস্থাপন করে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শ্রান্ত নিথর দেহে প্রশান্তির আখ্যান..... (উৎসর্গঃ বয়োজ্যেষ্ঠ ব্লগারদের)

লিখেছেন স্বপ্নবাজ সৌরভ, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৪২



কদিন আমিও হাঁপাতে হাঁপাতে
কুকুরের মত জিহবা বের করে বসবো
শুকনো পুকুর ধারের পাতাঝরা জামগাছের নিচে
সুশীতলতা আর পানির আশায়।

একদিন অদ্ভুত নিয়মের ফাঁদে নেতিয়ে পড়বে
আমার শ্রান্ত শরীর , ধীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×