somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আইলো রে আইলো, নোবেল আইলো বাংলাদেশে!!! :) :D B-) ;) :-*

৩১ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১০:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রত্যেকবছর অক্টোবর মাস আসলেই নোবেল নিয়ে সারা বিশ্বে মাতম ওঠে। এই নোবেল মানে আবার মডেল নোবেল না, এ হচ্ছে আলফ্রেড নোবেল প্রবর্তিত ‘নোবেল প্রাইজ।’ :)
সারা পৃথিবীর মানুষের মধ্যে থেকে কয়েকজনকে মোটমাট মাত্র ৬ টা বিষয়ে নোবেল দেওয়া হয়। অথচ আমাদের দেশে এমনও কিছু মানুষ আছেন যারা নিত্য এমন কিছু করেন যার জন্য তারা ওই ৬ টা বিষয় ছাড়াও আরো বিষয়ে দিব্যি নোবেল পাওয়ার যোগ্যতা রাখেন। কিন্তু বিষয় বাড়ানোর উপায় যে নেই। কেননা নোবেলের প্রাইজমানিটা যে অঙ্কে নেহাত কম নয়। বেশী বিষয় হলে তো.........

সে যা হোক। সমস্ত পৃথিবী খুঁজে মাত্র কয়েকজনকে পাওয়া যায় নোবেল দেওয়ার জন্য, অথচ এ নোবেল প্রাইজ যদি শুধুমাত্র আমাদের দেশে দেওয়া হতো তবে তা কে কে কোন কোন বিষয়ে পেত সেটাই জেনে আস যাক।

প্রথমেই সাহিত্য

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত দেশের বিখ্যাত উপন্যাস ও কলেজের বাংলা সহপাঠ্য ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ কে হার মানানো নতুন উপন্যাস প্লাস নাটক ‘পদ্মা নদীর ব্রীজের কারিগর’। এ উপন্যাস প্লাস নাটক রচনার জন্য এ বিভাগের নোবেল দেওয়া হতে পারে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে।
সমস্যার কথা হচ্ছে মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এ পুরস্কার গ্রহণ কে করবেন তা নিয়ে একটু ঝামেলা হতে পারে। কেননা এ উপন্যাস প্লাস নাটক রচনার সময়কালে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন প্রাক্তন-নতুন দুই জন মন্ত্রী। এখন কে যাবেন এই পুরস্কার আনতে। চিন্তার বিষয়!!!



আসেন টস করি। হেড-টেল যে যার ইচ্ছেমত ভাগাভাগি করে প্রাক্তন-নতুন যাকে ইচ্ছে তাকে দিয়ে টস করে নিজ দায়িত্বে দেখেন কে পেল এই বিভাগের নোবেল। ;)




এবারে পদার্থবিজ্ঞান

বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিজ্ঞানী দ্বারা প্রবর্তিত ‘গতিবিদ্যার সূত্রবলী’ গুলোর মুখে ছাই দিয়ে রাস্তায় নিত্য যে বেপরোয়া ভাব নিয়ে বাস-ট্রাক ড্রাইভাররা গাড়ি চালায় ও একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটিয়ে দেশের থেকে উজ্জ্বল প্রতিভাধর মানুষসহ আরো নাম না জানা মানুষ মারছে, তা বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন।



তাছাড়াও মিটারযুক্ত সিএনজি চালকেরা কি এমন কারসাজি যে তাদের মিটারে করে রাখেন, যার জন্য তিন কিলো পথ গেলেই বিল উঠে যায় চার’শ পাঁচ’শ টাকা। তাই এখন সিএনজি চালকেরা যতই মিটারে যেতে চাক না কেন, প্যাসেঞ্জাররা কেউই আর মিটারের উপরে ভরসা রাখতে না পেরে ভাড়া ঠিক করে গন্তব্যের দিকে যাত্রা করেন।



এহেন নানাবিধ বুদ্ধিমত্তার কাজের জন্য সকল ড্রাইভার গোষ্ঠীকে এই বিভাগের পুরস্কারটা দেওয়া যেতে পারে। (প্রাইজমানি নিয়ে তাদের মধ্যে গাড়ি ভাংচুর হলে কোনভাবেই কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকিবে না ;) )


রসায়ন



খুব সোজা কথা। ব্যাপক ধড়পাকড়ের পরও সরকার, মোবাইল কোর্টের চোখে ধুলো দিয়ে নিত্য যারা শাকসব্জি-মাছ-মাংস এমনকি ইদানিং ফলমূলেও বিষাক্ত ফরমালিন দিচ্ছে, কিংবা কাপড রঙ করা রঙ দিয়ে রঙ্গিন আইসক্রিম (যাকে আল্লাদ করে ‘গোলা’ বলা হয়ে থাকে) বানানোর প্রক্রিয়া যাদের মাথায় আসে তাদের হাতে এ বিভাগের নোবেল তুলে দেওয়া যেতে পারে। ফরমালিনযুক্ত খাবারের বদৌলতে আমরা পাচ্ছি সদা টাটকা খাবার আর পরিণামে হচ্ছে নাম না জানা বিভিন্ন ধরনের ভয়াবহ রোগ। হোক! তাতে কি? রোগ হলেই তো ডাক্তার বেশী করে তাজা সব্জি-ফলমূল খেতে বলবেন। আবারো গরম ব্যাবসা চলবে ফরমালিন দেওয়া খাবারের। সুতরাং চালাকি করে খাবারে বিষ দিয়েও ব্যবসা টিকিয়ে রেখে নিজেদের রমরমা অবস্থা করে ফেলার জন্য এ বিভাগের নোবেল গোওজ টু ফরমালিন ব্যবসায়ী।

ফরমালিন নিয়ে আলোচনার পর এবারের বিষয় চিকিৎসা



একজন রোগীকে তার রোগ সম্পর্কে এক এক ডায়াগোনেস্টিক সেন্টার থেকে এক এক সময় এক এক রিপোর্ট দিয়ে তার রোগ সম্পর্কে চূড়ান্ত পর্যায়ে বিভ্রান্ত করার মত কাজ সম্পূর্ণ বিশ্বে একমাত্র আমাদের দেশেই সম্ভব। এছাড়াও এমনও হতে পারে যে আসলে হয়তো তার কোন রোগই নেই, অথচ রিপোর্ট বলছে তার হয়েছে কোন এক মরণব্যাধি। এসকল ঘটনা সারা বিশ্ব খুঁজেও একমাত্র আমাদের দেশ ছাড়া আর কোথাও পাওয়া যাবে না। সুতরাং, আর বলার অপেক্ষা রাখে না এ বিভাগের পুরস্কার দেশে এসকল কারসাজি করা ডায়াগোনেস্টিক সেন্টারগুলোরই ঝুলিতে যাচ্ছে।

অর্থনীতি



কোন কথা হবে না। This nobel goes to Destiny-2000.
(ব্যাকগ্রাউন্ডে সকল ডেস্টিনি কর্মকর্তার জোর করতালি শোনা যাবে)

এবারে এক নতুন বিভাগ। এদেশে মানুষের মাঝে প্রতিভার তো অভাব নেই। তাই যেহেতু প্রথমবারের মত সকল বিভাগে বাংলাদেশ নোবেল পাচ্ছে তাই শুধুমাত্র এবারের জন্য, আরো প্রতিভাকে প্রকাশ করার জন্য, নতুন বিভাগ গণিত এর জন্য নোবেল দেওয়া হতে পারে। B-)



হলমার্ক কর্তৃক সোনালী ব্যাংক হতে চার হাজার কোটি টাকার বিশাল অংক কে ‘মাত্র’ দিয়ে উচ্চারণ করতে পারে যে ব্যক্তি, সেই হলমার্কের কর্ণধার ‘তানভীর’ ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে যৌথভাবে এই বিভাগে পুরস্কার দেওয়া যেতে পারে। একদিকে তানভীরের কারসাজি অন্যদিকে অর্থমন্ত্রী যিনি নির্বিকারভাবে বলে গেছেন “পরিমাণটা বেশী নয়, মাত্র...” যার কাছে এত বড় বড় পরিমাণের হিসাব এত সহজ, সে তো গণিতে নজিরবিহীন সাফল্য অর্জন করার পাত্র। সুতরাং গণিতের নোবেল......... আরে আরে... এ বিভাগের নোবেলের জন্য যে আরো একজন দাবীদার। আমাদের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ‘৪৮ ঘন্টা’ র যে নতুন হিসাব আমাদের শিখিয়েছেন তা এ যুগের বাচ্চাদের কাছে অতি শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে। ;)
তাহলে গণিতের নোবেল পাচ্ছেন যৌথভাবে হলমার্ক গ্রুপের তানভীর, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং সাহারা খাতুন (বর্তমান ডাক ও টেলি যোগাযোগ মন্ত্রী) :P


শান্তি

এত হাউ কাউয়ের পর এবারে শান্তিতে নোবেল দিয়ে এ যাত্রা নোবেল দান শেষ করতে চাই।



সম্প্রতি New Economics Foundation সমস্ত বিশ্বের সুখী দেশগুলোর তালিকা প্রকাশ করলে দেখা যায় বাংলাদেশের নাম আছে ১১ নম্বরে। হাজার হাজার সমস্যা নিয়ে, প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সমস্যার সাথে লড়ে যে দেশের মানুষগুলো বেঁচে থাকে, সে দেশের মানুষ যদি পৃথিবীর ১১তম সুখী দেশ হিসেবে নিজের দেশের নাম প্রতিষ্ঠিত করতে পারে তাহলে এই তাদেরকে শান্তিতে নোবেল না দিলে বড়ই পাপ কাজ করা হয়ে যাবে। কেননা যেখানে বিশ্বের সব থেকে ধনী ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের নাম সবাই জানে, সেখানে সুখী দেশের তালিকায় সে দেশের নাম ঠাঁই পেয়েছে ১০০ পেরিয়ে কোন এক সংখ্যার ঘরে। (অট্টহাসি) =p~ =p~
সুতরাং শান্তির নোবেল সমগ্র বাঙ্গালী জাতির জন্য। ;) :P)

সমগ্র জাতি এক টন না হলেও সমগ্র জাতি কিন্তু শান্তিতে নোবেল পাওয়ার দাবিদার। কেননা, হাজার সমস্যার মাঝেও সুখী থেকে আমরা আমাদের কে জাতি হিসেবে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট দিচ্ছি। ;)

আর কোন কাহিনী নাই। নোবেল দেওয়া শেষ, পোস্টও এখানেই শেষ। :D

সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৩৩
৪১টি মন্তব্য ৪১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বর্গের নন্দনকাননের শ্বেতশুভ্র ফুল কুর্চি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ২২ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৭


কুর্চি
অন্যান্য ও আঞ্চলিক নাম : কুরচি, কুড়চী, কূটজ, কোটী, ইন্দ্রযব, ইন্দ্রজৌ, বৎসক, বৃক্ষক, কলিঙ্গ, প্রাবৃষ্য, শক্রিভুরুহ, শত্রুপাদপ, সংগ্রাহী, পান্ডুরদ্রুম, মহাগন্ধ, মল্লিকাপুষ্প, গিরিমল্লিকা।
Common Name : Bitter Oleander, Easter Tree, Connessi Bark,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচলের (সচলায়তন ব্লগ ) অচল হয়ে যাওয়াটই স্বাভাবিক

লিখেছেন সোনাগাজী, ২২ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬



যেকোন ব্লগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর, একটি ভয়ংকর খারাপ খবর; ইহা দেশের লেখকদের অদক্ষতা, অপ্রয়োজনীয় ও নীচু মানের লেখার সরাসরি প্রমাণ।

সচল নাকি অচল হয়ে গেছে; এতে সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

হরিপ্রভা তাকেদা! প্রায় ভুলে যাওয়া এক অভিযাত্রীর নাম।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২২ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৩


১৯৪৩ সাল, চলছে মানব সভ্যতার ইতিহাসের ভয়াবহ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। টোকিও শহর নিস্তব্ধ। যে কোন সময়ে বিমান আক্রমনের সাইরেন, বোমা হামলা। তার মাঝে মাথায় হেলমেট সহ এক বাঙালী... ...বাকিটুকু পড়ুন

তুমি বললে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৭

তুমি বললে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

খুব তৃষ্ণার্ত, তুমি তৃষ্ণা মিটালে
খুব ক্ষুধার্ত, তুমি খাইয়ে দিলে।
শ্রমে ক্লান্ত, ঘর্মাক্ত দেহে তুমি
ঠান্ডা জলে মুছে দিলে, ঊর্মি
বাতাস বইবে, শীতল হবে হৃদয়
ঘুম ঘুম চোখে পাবে অভয়।
তোমার আলপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনারই মেরেছে এমপি আনারকে।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল তারই ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার আক্তারুজ্জামান শাহীন!

এই হত্যার পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×