ঈদে গিয়েছিলাম গ্রামের বাড়ি। বেজায় আনন্দ হয় বাড়িতে। আর ঈদের আনন্দ মিলে খুশির বান ছোটে ঘরে ঘরে। কোরবানীর ঈদ। প্রধান আকর্ষণ হলো কোরবানীর গরু বা ছাগল। আব্বু আর চাচ্চুরা মিলে বাজার থেকে কিনে আনলেন এক গরু। সে কি আনন্দ। গলায় মালা। শিং-এ রঙ্গিন ঝালর। কপালে নেকলেছ। দুপাশে দুই দড়িতে বাধা গরুটি। তারপরেও মানুষ দেখলে লাফ মারে আর তেড়ে আসে গুঁতু মারতে। আমরা ভয়ে ভয়ে দূরে দাঁড়িয়ে দেখছি। সে এক আনন্দ। সবার মুখে হাসি। পছন্দ হয়েছে গরুটি।
ঈদে বাড়ি-ঘর, কাপড়চোপড়, মানুষ-পশু সবই নতুন চকচকে লাগে। চারদিকে সাজুগুজু ভাব। ঈদের খুশিতে আমরা সকল কষ্টই ভুলে যাই। থাকে খালি আনন্দ আর আনন্দ।
ঈদের এতসব আনন্দের মাঝে আমার মনে পড়েছে মালালাকে। তখন ধপ করে আনন্দটা নেমে আসে কষ্টের ভেতরে। ১৪ বছরের কিশোরী সে। গুলি খেয়ে পড়ে আছে হাসপাতালে। কোথায় তার ঈদ কোথায় তার আনন্দ।
আচ্ছা কী অপরাধ করেছিলেন মালালা? সবাই জানি।ইক্করা বিইছমি রাব্বিকাল্লাজি খালাক...। পড়ো...। মালালা তো পড়তেই চায়। মহান আল্লাহ তো পড়তেই বলেছেন। পড়ালেখার অপরাধে কোনো মানুষ কি এভাবে গুলি করতে পারে? মালালা পড়ালেখা করে তো আল্লাহকে জানবে। ভালো আর মন্দ সম্পর্কে জানবে। কোনটা ন্যায় আর কোনটা অন্যায় তা জানবে। সত্য আর মিথ্যা সম্পর্কে জানবে। তারপরেই না মালালা হবে আদর্শ মানুষ। আর তাকে এই অপরাধে গুলি করে মেরে ফেলতে হবে? কী ভয়ানক!
ঈদের আনন্দের মাঝে নামাজ পড়ে দোয়া করেছি মালালার জন্য। মালালা আল্লাহর রহমতে তুমি বেঁচে উঠবেই। কারণ তুমি কোনো অপরাধ করোনি। তুমি ঠিক আছো। আর তোমার পক্ষে আছে সারা দুনিয়ার মানুষ আছে তাঁদের দোয়া।
অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়, অসত্যের বিরুদ্ধে সত্য যেমন মাথা তুলে দাঁড়ায় আর জয়লাভ করে তুমিও দাঁড়াবে তেমন। জয় তোমার হবেই মালালা। তোমার জন্য শুভকামনা।