হায় রে জীবন, দু মুঠো অন্নের জোগান দিতে যে সব যুবক ছুটে গেলো মালয়েশিয়ার পথে, পাথরের সাথে ধাক্কা লেগে যাদের ট্রলার ডুবে গেলো, সে সাথে ডুবে গেলো তাদের কষ্ট ও স্বপ্ন। তাদের কথা ভাবতেই খারাপ লাগছে। ৬ জন হায়াত পেয়ে জীবিত ফিরেছেন। বাকিদের ভগ্য অজানা।
এমন এক দেশে আমাদের এ তরুণ স্বজনদের জন্ম, যে দেশ ভাত কাপড়ের নিরাপদ সংস্থান করতে পারে না। অথচ এ দেশটিরই পরতে পরতে দুর্নীতি আর কালো টাকা। রাজধাণীর পথগুলোতে কত রঙ্গের গাড়ি চোখে পড়ে। কাল রাতে দেখলাম হুডখোলা এক গাড়িতে দুই তরুণী চিতকার করছে। আর চালক গাড়ি এলোমেলো ড্রাইভ করছে। এটা তাদের আনন্দের প্রকাশ। এমন আনন্দে বাধা নেই। কিন্তু সেই রাতেই সেন্টমার্টিনের কাছে তরুণরা ডুবে গেলো।
মা বাবার চোখের জল দেখতে দেখতে যারা বিদেশ যাত্রা করেছে, জেনে শুনে যারা বিষপান করেছে, ট্রলার যোগে রওয়ানা করেছে তাদের জন্য সত্যি কষ্ট হচ্ছে। বনি আদমের এমন দুর্ভোগ আর কষ্ট এবং জীবন বাজি রেখে অনন্ত বেঁচে থাকার সংগ্রাম আর অন্যদিকে ভিন্ন গোছের কিছু বণি আদমের অঢেল সম্পদ আর দুর্নীতির কালো থাবা এই সমাজে সৃষ্টি করেছে বড় এক বৈষম্য। সেই বৈষম্যের দেয়াল ভাঙবে বলে কোনো রাজনৈতিক দল কথা দিয়েছে বলে আমার ৩৩ বছরের জীবনে শুনিনি। আমার শোনার ভাগ্য হবে কিনা জানি না। আমার সন্তানরাও তা শুনবে না। কারণ বিত্ত বৈভবে যারা ভাসবেন তাদের পক্ষে সমাজ রাষ্ট্র আইন কোট কাছারি এবং রাজনীতি।
গরিবের পক্ষে কেবল বিপদ। সব জায়গা আপদ হিসাবে চিহ্নিত হওয়া। তবুও আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি এ দেশটা বদলে যা্ক, যে দেশটি স্বাধীন করার জন্য এত রক্ত, এত ইজ্জ্ত গেলো সে দেশের এমন বৈষম্যের অবসান হবেই, হতেই হবে, আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়ে দেশ স্বাধীন করেছি।