somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিবির জামায়াতের যেভাবে উত্থান ঘটে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে...

২৫ শে অক্টোবর, ২০১২ সকাল ১০:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৬৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত চবিতে যত ধরনের অপ্রীতিকর রাজনৈতিক সহিংসতা সংঘটিত হয়েছে তার মূলে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ইন্ধন যুগিয়েছে। ইসলামী ছাত্র শিবির। চবিতে আতংকের আরেক নাম শিবির। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত চবিতে শিবির বলয় এমনিতে গড়ে ওঠেনি। এই সংগঠনটির এখানে দুর্গগড়তে বিভিন্ন ধরনের মানুষের সহযোগিতা পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও আশেÑপাশে এলাকার কিছু ব্যক্তির সহযোগিতার ফলে শিবিরের এ বলয় গড়ে তুলা সম্ভব হয়েছে। চট্টগ্রামে যেমন অনেক বাঘা বাঘা আওয়ামী লীগ নেতার রয়েছে, তেমন এক সময় এ স্থানটি বিএনপির দুর্গ ছিল। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে, এই নিষিদ্ধ দলটিকে ১৯৭৭ সালে মেজর জিয়াউর রহমান রাজনীতি করার সুযোগ দিয়ে যে ভুলাট করেছেন দেশবাসী এখনতা হাড়ে হাড়ে উপলদ্ধি করতে পারছে। এই সুযোগ পাওয়ার পর থেকে চবিতে ছাত্রদলের অস্তিত্ব আছে বলে আমার জানা নেই। চারদলীয় জোট ক্ষতা থাকার পরও আধিপত্য বিস্তার করেছে শিবির। শিবিরের ছাত্রদলের অবস্থাটা বুঝায় জন্য বোয়াল মাছের কাছে পুঁটি মাছের অবস্থার দৃশ্য দেখলে তা উপলদ্ধি করতে পারবেন। চবিতে শিবির ও ছাত্রলীগের মধ্যে অনেক নিহত হয়েছে। শিবিরের মধ্যে যারা নিহত হয়েছেস তারা আবার শহীদের মর্যাদা পেয়েছে। ধর্মকে পুঁজি করে যাদের রাজনীতি গড়ে ওঠেছে তাদের কাছে শহীদ হওয়ার শর্তটা ভিন্নরকম। চবিতে শিবিরে উদ্ভব, তাদের কর্মপদ্ধতি, কর্মী সংগ্রহের পদ্ধতি, উপার্জনপদ্ধতি নিয়ে কিছু পরে আলোচনা, করব। তার পূর্বে চবি রাজনীতিতে ছাত্রলীগের কর্ম পদ্ধতি কিছু আলোচনা কব। চবির শুরুতে যারা ছাত্রলীগের প্রকৃত অভিভাবক ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম প্রধান হলেন আলহাজ্ব মামুনুর রশীদ মামুন। তার বলিষ্ঠ রাজনৈতিক চেতনা এখনো পর্যন্ত চবি ছাত্রলীগের মধ্যে বিরাজমান। তিনি ছিলেন দুঃসময়ের দলের কান্ডারী। এরূপ তেজদীপ্ত বর্ষীয়ান নেতা নেতা চট্টগ্রামে আ জন্ম নিবে কিনা তা আমার সন্দেহ। চবিতে শিবির বলয় গড়ে উঠার একটি অন্যতম কারণ হল ছাত্রলীগের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের গ্র“পিং ছাত্রলীগ সম্পর্কে আজ যাদের বিরূপ ধারণা আমি তাদেরকে কিছু ছাত্রলীগ নামধারী ছেলেদের এ জন্য এই দুর্নাম ছাত্রলীগের উপর পড়ছে। চবিতে ছাত্রলীগের অনেক গঠনমূলক কাজ রয়েছে যা তুচ্ছ করে দেখার বিষয় নয়।
আমি প্রথমে শিবিরের কর্মী সংগ্রহের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করতে চাই। নতুন কর্মীকে দলে ভিড়ানোর জন্য ইসলামী ছাত্রশিবির বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। চবি যারা ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসে তাদেরকে প্রথমে থাকার ব্যবস্থা করে এবং এদের সাথে পরীক্ষার পূর্বের রাত্রে গ.ঈ.ছ পরীক্ষা নেওয়ার নাম করে দলীয় প্রচারণা চালায়। পরবর্তীতে এসব পরীক্ষার্থীদের ফলাফল জানিয়ে ভর্তি সংক্রান্ত কাজে সহযোগীতার আশ্বাস দেয়। ভর্তির কাজে যাদের সাহায্য করা হয় তাদেরকে হলে থাকার প্ররোচনা দেয়। কিন্তু এই প্ররোচনার ফাঁদে পা দেয় কতিপয় অভাবী ছাত্র। এই নতুন ছাত্রগুলো হলে জায়গা পায় কারণ যারা ইতিমধ্যে কর্মী হয়েছে তারা ছিট ছেড়ে দিয়ে নবাগতদের জায়গা করে দিয়ে কর্মী বানায়। তাছাড়া পরীক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজে একে অপরকে সাহায্য করে নতুন কর্মী তৈরী করে। তাছাড়া এমনো নজির রয়েছে চবির পাশের গ্রাম জোবরাতে একটি পাড়ার মধ্যে একটি টিউবয়েল প্রদান করে ঐপাড়াটিকে সম্পূর্ণ ইসলামী শিবিরপন্থী করে তুলা হয়েছে। এখানেও দারিদ্রতাকে পুঁজি করা হয়েছে। দু একজনকে রিকসা ও প্রদান করতে শোনা গেছে। এত কিছু করার সুযোগ পায় তাহলে প্রশ্ন হলো এদের অর্থের যোগান দেয় কারা? বিশ্ববিদ্যালয়ের হলেও কটেজ যারা থাকে তাদের কাছে থেকে প্রতিমাসে ন্যূনতম মাসিক ১০ টাকা করে বাইতুলমাল সংগ্রহ করে যা অন্য সংগঠনের ছাত্ররা করলে চাঁদা বলে আখ্যায়িথ হতো। এদের আবার বিভিন্ন কোচিং সেন্টার, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অংকের অর্থ পায় যা দ্বারা দলীয় কর্মকান্ড চালিয়ে নিতে এদের কোন সমস্যা হয় না। কর্মী সংগ্রহের জন্য এক সময় এদের নজর ছিল বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া ছাত্রদের প্রতি। কিন্তু এখন এদের নজর পড়েছে সফল বয়সী ছাত্রদের প্রতি এমনকি কিন্ডার গার্ডেন পড়–য়া ছাত্রদেরে প্রতিও। এত কিছুর পরেও এদের কর্মী সংখ্যা সীমিত বললে চলে। ইসলামী ছাত্রশিবির ধর্মকে পুঁজি করে যেভাবে দলীয় প্রচারণা চালায় তা দেখে ও শোনে ছেলে মেয়েরা আকৃতষ্ট হয়ে যায়। যখন আল্লাহ ও ইসলাম ধর্মের ব্যাখ্যা করে তখন ছেলে মেয়ে দের মন জয় করা অনেকটা সহজ হয়ে পড়ে। কিন্তু যখন বুঝতে পারে এর পিছনে অন্য উদ্দেশ্য রয়েছে তারা পুরোপুরি কর্মী। দল ত্যাগ করলে কঠিন শাস্তি পেতে হয় এমনকি মৃত্যু পর্যন্তও। ইসলামী ছাত্র শিবিরের কর্মী সংগ্রহের তালিকায় প্রথমে মেয়েদের কথা ছিল না। কারণ তখন তারা প্রচার করত মেয়েদের রাজনীতি হারাম। হায়রে ফতুয়া! কিন্তু যখন দলটি বিএনপির সাথে জোটবদ্ধ হলো তখন জোটের প্রধান ছিল মহিলা। পরক্ষণে এদের স্বর পাল্টে গেল, এরা আবার ছাত্রী সংস্থার নাম করে মহিলা কর্মীর জন্য কাজ শুরু করে ছিল। এরা কখনো ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি করে না এখানে ধর্ম হলো হাতিয়ার মাত্র আর যদি ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি করে থাকে তবে অন্যান্য ইসলামী দলগুলোর সাথে এদের মতের মিল হয় না কেন? প্রত্যেক নাগরিকের রাজনৈতিক অধিকার রয়েছে। তবে অধিকার যদি জাতির বৃহত্তর অংশের দাবির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয় তাহলে সে অধিকার প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়। সত্যিই যদি আপনার ধর্মীয় আদর্শ দ্বারা অনুপ্রাণীত হয়ে থাকেন তাহলে, নিজ দলের, মধ্যে যারা যুদ্ধাপরাধী রয়েছে তাদের বাঁচানোর চেষ্টা না করে প্রমাণ করুন যে, আপনারা ধর্মীয় আদর্শ মেনে চলেন। এই দেশটাকে মায়ের মতো করে ভালবাসতে শিখুন, তাহলে দেখবেন ‘৭১’ এ আপনারা ঘৃণ্য কাজগুলো করেছে তা ঞয়তো এ দয়াশীল জাতি মাপ করে দিতে পারে। গণতন্ত্রের জয় হোক এই প্রত্যাশায় রইলাম। লেখার মূল: রেজাউল মান্নান ও সোহেল রানা (সমাজ ও মানবাধিকার কর্মী, চট্টগ্রাম)
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×