somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লাখো সন্তুরা আজ দিশেহারা

২৪ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আরও ৫-৬ বছর আগের কথা।বাস্তবতার চেয়ে কল্পনাই যখন মুখ্য ছিল। ration এবং emotion এর যুদ্ধে যখন ইমশন জয়ী হত তখনকার কথা।
ছোটবেলা থেকেই বই পরার অভ্যাস ;আমার বাবার কাছ থেকে পাওয়া। তবে ছোটবেলার পড়া আর আজকের পড়ার মধ্যে আকাশ পাতাল ব্যাবধান।তবে এই ব্যাবধান দীর্ঘ বিবর্তনের ফসল। আমার এই পাঠ্য জীবনে অল্প যা কিছুই পড়েছি তার মাঝে থেকে কিছু নেবার কিছু শেখার চেষ্টা করেছি। যেমন ছোটবেলার কমিকস টিনটিন আমায় মজার মাধ্যমে অনেক কিছু শিখিয়েছে। তবে কৈশোরটা ছিল ব্যাতিক্রম। আমরা রবীন্দ্রনাথ এর ছুটি গল্পে পড়েছিলাম এমন বয়শের বালাই আর নাই। এই বয়সে শারীরিক ও মানসিক নানান পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে একজন ছেলে বা মেয়ে অগ্রসর হয়। তারা তখন না থাকে শিশু নাইবা যুবক। এযেন এক অবর্ণনীয় এক অতি কষ্টকর অবস্থা। তাই এ বয়সে সবকিছুই অন্যরকম লাগে। এর জীববিজ্ঞানগত এবং মনস্তত্তগত ব্যাখ্যা রয়েছে। তাই এ সমস্ত অন্তরদন্দের মধ্যে দিয়ে চলার সময় স্বাভাবিক ভাবেই একটা ছেলে সবকিছু সহজ ভাবে নিতে চায় না। তাই আজকে মনস্তত্তবিদেরা বলেন এ বয়সের ছেলেমেয়েদের সাথে একটু অন্যভাবে আচরণ করতে হয়। এ সময় এদের সাথে ভালভাবে কথা বলতে হয়; করতে হয় বন্ধুত্বপূর্ণ আচরন।এর ব্যাতয় ঘটলে একজন ছেলে বিপথগামি হতে পারে। বড়রা এ সময় যদি তাদের কথার গুরুত্ত না দেন তবে হিতে বিপরিত হতে পারে। তো আমি যখন বয়সন্ধি পার করছিলাম আমার ব্যাতিক্রম ঘটেনি। মনের সংশয় ছিল প্রকট। দরকার ছিল একজন বন্ধু যে আমাকে ভালবাসবে, আমার কথা শুনবে।আমার পাঠাভ্যাস তখন জারি ছিল। এমনি সময় যখন একটু বন্ধুত্ব দরকার ছিল হয়তোবা সমাজ আমাকে তা দিতে পারছিল না। এমন সময় একদিন আমার মামার বাসায় একটা বই পেলাম। বইয়ের নামটা প্রথমে পছন্দ হয়নি। নাম ছিল কাকাবাবু সমগ্র। স্বভাবতই কাকাবাবুরা রাগীই হয়ে থাকেন। তবে বইটা যেহেতু ছিল এডভেঞ্চার নিয়ে তাই বইটা বাসায় নিয়ে আসলাম। বইটা তিনদিনে গোগ্রাসে গিললাম আর আবিস্কার করলাম আমার কৈশোরের প্রিয় বন্ধুকে মানে কাকাবাবুকে। এর পেছনে আরেকটা কারন ছিল। কাকাবাবুর মিশনগুলোর সহযোগী ছিল তার ভাতিজা সন্তু যে কিনা ছিল আমার বয়সেরই। এই সন্তুকে যে কাকাবাবু কত ভালবাসতেন তা কাকাবাবু না পড়লে বোঝা যাবেনা। কাকাবাবু এমনিতে খোঁড়া থাকলেও তার ছিল অদম্য প্রাণশক্তি। তবে সন্তু কে ছাড়া তার কিছু সমস্যা হত। তাই আগে মিশনগুলোতে সন্তুকে না নিলেই পরে ধিরে ধিরে সন্তু মিশনে যেতে থাকে। আর কাকাবাবুকে নানাভাবে সাহায্য করে। আর ঐ সময়ে আমার নজরে সবচেয়ে যে জিনিস্তি ভাল লাগত তা হল এই ছোট ছেলেটিকে কাকাবাবুর মত জ্ঞ্যানি একজন লোক এত গুরুত্ব দিত। দিত বললাম আমার কাকাবাবু আর নেই। যাক সে কথায় পরে আসছি। তো যা বলছিলাম যখন ঐ বইগুল পরলাম তখন আমার মনে হচ্ছিল সন্তুর জায়গায় আমি আসিফ কাকাবাবুর সাথে আমাজনে গিয়েছি, পড়েছি আন্দামান নিকবোর দ্বীপে উপজাতিদের কবলে বা হয়ত আমিই নেপালে হিমালয়ের পাদদেশে কাকাবাবুর সাথে অবাস্তব ইয়েতি দেখছ, এমনি আরও কত কি!!!! তখন যেহেতু কল্পনাপ্রবন, আবেগপ্রবন ছিলাম তাই গল্পগুল খুব ভাল লাগত। একজন কিশোর হিসেবে ভাল লাগারি কথা, এমনি আমার মত বাংলার হাজার কিশোর সন্তু হয়ে কাকাবাবুর সাথে। কিন্তু এখন কাকাবাবু আর নতুন কোন মিশনে জাবেন না ,কারন কাকাবাবু আমাদের ছেড়ে ওপারে চলে গেছেন। হ্যাঁ, আমি বলছি বিখ্যাত লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এর কথা। তিনিই তো কাকাবাবুর স্রষ্টা। তিনি নেই কাকাবাবুও নেই। কাকাবাবু ওনাতেই বিলীন আর আমরা(কিশোর) বিলীন কাকাবাবুতে। তাই বাংলার লাখো সন্তুরা আজ দিশেহারা। কারন ওরা আর কাকাবাবুর সাথে নতুন কোন মিশন এ যেতে পারবেনা। এভাবে যদি কাকাবাবুরা চলে যান তাহলে সন্তুদের কি হবে। কারন এই বাংলায় কৈশোরে ছেলেমেয়েদের কেমন মনে করা হয় তা আমরা ছুটি গল্পে পড়েছি। তাই আক্ষেপ করে বিধাতার কাছে বলি একজন কাকাবাবু নিয়েছ কিন্তু আমরা আরও কাকাবাবু চাই যাদের কাছে আমরা মনের কথা শেয়ার করতে পারব, আর এমন কাকাবাবুই লাখো সন্তুকে শান্ত করতে পারবে, পারবে এদের প্রিয় বন্ধু হতে। আশা করি তিনি আমাদের কথা শুনবেন।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০, কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×