প্রাচীন পারস্যের রাজধানী বাগদাদের এক রাজার দুই কন্যা ছিল। রাজা তাদের প্রচণ্ড ভালোবাসতেন। দুই কন্যা সারা দিনরাত ফুল-পাখি-নদীর সঙ্গে খেলে। খেলতে খেলতেই তারা বড় হতে লাগল। তাদের চারপাশে সারাক্ষণই হুকুমের অপেক্ষায় থাকে দাস-দাসী। দুই কন্যার একজন কিছু একটা চাইলে ১০ জন দাসী ছুটে যায়। এভাবেই আরামে-আহ্লাদে আটখানা হয়ে থাকত রাজকন্যারা। আর তাদের ছিল অত্যন্ত প্রিয় দুটি বিড়াল। সেই বিড়াল দুটিকে রাজকন্যারা নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসত।
দিন যায়, মাস যায় রাজকন্যারা বড় হয়। দেখতে দেখতে তারা বিবাহযোগ্য হয়েউঠল। রাজা পড়লেন চিন্তায়। তিনি মন্ত্রিসভার সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করে ঠিক করলেন, এমন এক পরিবারে রাজকন্যাদের বিয়ে দেবেন, যেখানে বিবাহযোগ্য দুই ভাই আছে, দুজনেই নম্র-ভদ্র ও রাজ্য শাসন করতে সক্ষম।
সারা রাজ্য খুঁজে অনেক কষ্টে এ রকম একটি পরিবার পাওয়া গেল। ওয়ান ফাইন ডে অনেক হইহুল্লোড় করে তাদের বিয়ে দেওয়া হলো। দুই জামাতাকে রাজ্যের দুটি গুরুত্বপূর্ণ অংশের দায়িত্ব দিলেন রাজা। কয়েক দিনের মধ্যেই দুই জামাতা প্রচণ্ড ব্যস্ত হয়েউঠল রাজ্যের হাজার রকম কাজকর্ম নিয়ে। দুই ভাইয়ের মধ্যে আর দেখাই হয় না।
এভাবে চলতে চলতে প্রায় বছর খানেক পর দুই ভাইয়ের একদিন দেখা হলো। দুজনেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ল। অনেক গল্পের পর ছোট ভাই বড় ভাইকে বলল—
ছোট ভাই: আর বোলো না ভাই, ছোট রাজকন্যা খুবই দজ্জাল। মাঝেমধ্যে আমার গায়ে হাত পর্যন্ত তোলে। আর যা করি, তাতেই বকা খাই। খুবই পেরেশানির মধ্যে আছি রে ভাই! তোমার কী অবস্থা?
বড় ভাই: আমার অবস্থা খুবই ভালো। খুবই শান্তিতে আছি। মাঝেমধ্যে ইচ্ছে হলে সভায় যাই, না হলে যাই না।
ছোট ভাই: আশ্চর্য! কীভাবে সম্ভব! এটা কীভাবে করলা? গোপন রহস্য কী?
বড় ভাই: তোর মনে আছে, বড় রাজকন্যার জীবনের চেয়েও প্রিয় একটা বিড়াল ছিল?
ছোট ভাই: হ্যাঁ, অবশ্যই মনে আছে। ছোট রাজকন্যারও তো সে রকমই একটি বিড়াল আছে। সেটাও আমার চেয়ে বেশি সম্মান পায়।
বড় ভাই: শোন, আমি বাসররাতে একটি তলোয়ার নিয়ে ঘরে ঢুকেছি। রাজকন্যা বাসররাতে তলোয়ার দেখেই ভয় পেয়ে গেল। কোনায় বসে ছিল বিড়ালটা। দিলাম এক কোপ। একবারে দুই টুকরো। রাজকন্যা ভয়ে জড়সড় হয়ে এক কোণে সরে গেল। সে মনে মনে ভেবেছে, আমি নিশ্চয়ই অনেক বড় একজন বীর। তার পর থেকে আমার আর কখনোই কোনো সমস্যা হয়নি।
ছোট ভাই: আচ্ছা দেখি, এবার ঘরে ফিরে আমারও তা হলে একই কাজ করতে হবে।
এরপর দুই ভাই যথারীতি কাজে ফিরে আবার মহাব্যস্ত হয়ে পড়ল।
বছর খানেক পর তাদের আবার দেখা। বড় ভাই ছোট ভাইকে জিজ্ঞেস করল—
বড় ভাই: কী রে! কী অবস্থা তোর?
ছোট ভাই: আর বোলো না। তোমার কথা শুনে ঘরে ফিরেই তলোয়ার দিয়ে ছোট রাজকন্যার বিড়ালটিকে দুই টুকরো করে ফেললাম। সঙ্গে সঙ্গে আমার ওপর অত্যাচার আরও বেড়ে গেল। আমাকে মাস তিনেক জেলেও রেখেছে। অশান্তি তো আরও বেড়ে গেল!
বড় ভাই: শোন, বিড়াল বাসররাতেই মারতে হয়। তার পরে বিড়াল মারলে আর কোনো কাজে আসে না...
সূত্র- আজকের প্রথম আলো থেকে কপি পেষ্ট- স্বাভাবিক ভাবে ক্ষমা চেয়ে নিচিছ যথাযথ কতৃপক্ষের কাছ থেকে।
বাসর রাতে বিড়াল মারার সেই আসল ঘটনা-সেই রাতে কি ঘটেছিল (বি:দ্র: -এটি একটি পুরনো গল্প)
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক
আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।
“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন
কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য
ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার
(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন
প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭
ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।
এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন
একাত্তরের এই দিনে
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন
হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে
তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন