somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

[ডেসটিনি - এ শর্ট কাট ওয়ে টু বি মিলিয়নিয়ার]

২২ শে অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ডেসটিনি কোম্পানী টা যে কি! ফটকামি না জানলেই লস! ডেসটিনি তে থাকবা আর ফটকামি করবানা, তা হবেনা। ডেসটিনির অলিখিত কিন্তু প্রথম শর্ত-ই হইল ফটকামি। ফটকামির তো একটা সীমা আছে! নাহ, ডেসটিনি নামক ফটকামির কোন সীমা নাই। এইটা 'চলছে-চলবেই' এই টাইপ ফটকামি। আমার এক ফ্রেন্ড এর কাহিনী বলি। সে নিয়মিত নামাজ পড়ে। চেষ্টা করে মসজিদে যাওয়ার। তো সে ছোটবেলা থাইকাই পাড়ার একটা মসজিদে পড়ত (আরবী শিখত)। সেই সুবাদে ঐ মসজিদের ইমাম তাকে খুব ভালো কইরা চিনে। হঠাৎ একদিন ইমাম তাকে নামাজের পর থাকতে বলল আর সে থাকল। ইমাম তাকে একটা দোকানে নিয়া গেল। খাওয়াইল আর শুরু করল ফটকামি। ডেসটিনি তে যোগদানের উদাত্ত আহ্বান। ডেসটিনির কথা শুরুর পর তো ওর গলায় খাওয়া আটকাইয়া যায়যায় অবস্থা! কিন্তু ধৈর্য্য ধইরা পুরা বয়ান শুনল। আর তার মুল্যবান সময় ঢাইলা দিল অকাতরে। তারপর শুরু হইল সেই ডেসটিনি হুজুরের অত্যাচার। দেখা হইলেই 'ডেসটিনি' 'ডেসটিনি' করত। খালি কল দিত। একদিন ধইরা বাইন্দা ওরেনিয়া গেল তেনাদের (তাদের) অফিসে। আমার বন্ধু কিছুক্ষণের জন্য কোটিপতি হওয়া শুরু করল! আপনি বুঝেন আর না বুঝেন, যুক্তি দেন আর না দেন, আপনি কিছুক্ষণেই কোটিপতি হইয়া যাইবেন। ওরা বানাইয়া ই ছাড়বো। 'তালগাছ টা আমার' এইটার মত কাহিনী। তারে নিয়া খাওয়াইছে ও! পরে না পাইরা, অনেক তালবাহানা কইরা আমার ফ্রেন্ড ছুইটা আসসিল! সে কোটিপতি হইতে পারেনাই, কিন্তু কোটি টাকার সম্মান বাঁচাইসে! ওর কাহিনীটা আর বাড়াইলাম না। এইবার বলি আমার কাহিনী। আমারে ও আমার এলাকার জনৈক বড় ভাই, ডাইকা নিয়া গেলেন। আমার এডমিশন এর কথা জিগাইল। বললাম কই ভর্তি হইসি! বললাম আরো একবার পরীক্ষা দিব। সব শুনার পর বললেন 'এইম' কি! শুনলেন, তারপর আসলেন আসল কথায়। উনি বললেন, 'আমি তো ডেসটিনি তে চাকরী করি'! সাথে সাথে মনেমনে বললাম, 'ও! আমিতো জানতাম ডেসটিনি তে মানুষ ফটকামি করে। তুমি চাকরী কর ক্যামনে!' ঃও আর চাকরীর সাফল্য কামনা কইরা ইচ্ছামতো গাইল দিতে লাগলাম। এই পর্যন্ত যত গাইল শিখসিলাম, সবগুলাই কমপক্ষে একবার কইরা মনে কইরা দিলাম! তারপর বলে এখন ভার্সিটি তে ভর্তি হইস,টাকা লাগে! এই ব্যাপারে কি ভাবস! কিছুকরবা নাকি! বললাম, 'টিউশনি' করি। উনি বলে, টিউশনির টাকা তে কি চলে? আমি বললাম, চলে তো! আর পারলে আপনি ১-২ টা টিউশনি দেন (না দিতে পারলে ট্যাকা দেন। ফটকামির ট্যাকা গুলা)। অয় কয়, 'নাহ, টিউশনি তো খুঁজলেই পাওয়া যায়! আমারগুলা তো আমি ই বাইর করসি খোঁজ'। আমি কইলাম, 'না ভাই, আপনার পরিচিত অনেকে আসে। আপনি দিলে পারবেন দিতে'। (মনে মনে কইতাসি, শালা, টিউশনি না দিলে দিসনা, পেইন দেস কেন?)! আরো কিছু কথা-বার্তা হবার পর টাইম দিতে বললেন এবং বললেন উনার অফিসে যাইতে (কিছুক্ষণেই কোটিপতি হইতে), অনেক কাহিনীর পর ও বাঁচলামনা। টাইম দিলাম একটা। যেইদিন যাওয়ার কথা, ওইদিন তো আর ফোন ধরিনা। তারপর থাইকা প্রতি বৃহস্পতি আর শুক্রবার আমারে কল দিত (শুক্র ও শনি তাদের ব্রেইন ওয়াশের একটা বিরাট আয়োজন হয়)। কিছুদিন জ্বালাতনের পর পাত্তা না পাইয়া পরে হাল ছাইড়া দিয়া গেসে গা। আমারে প্রথম দিনেই কইসিল, মানুষ এইটা সম্পর্কে জানেনা, তাই ভুল কথা বলে। আমি মনে মনে কই, তোমরা জাইনা জাইনা ফটকামি কর! অনেক কিছু বললাম। আসলে আজকে (গতকাল) সাইন্স ল্যাবে যাওয়ার সময় প্রেসক্লাবে জ্যাম! দেখলাম বিশাল লাইন! মানুষের পর মানুষ! বাস যখন সমাবেশের কাছাকাছি গেল, তখনি টাস্কি! এইটা ডেসটিনি কর্মীদের প্রতিবাদ সমাবেশ। সমাবেশে বক্তৃতা থাইকা শুরু কইরা সব ই মহিলা! হাতে গোনা ২-৪ টা পুরুষ ছিল, কিন্তু একদম পিছনে। বুঝলাম ডেসটিনি হালাগো মাথা খুব ভালো আর দ্রুত কাজ করে, নাইলে মানুষ পটায় কেমনে! এই সমাবেশে মহিলা রাখা মানে, নো লাঠিচার্জ! মাস্টার মাইন্ডেড পিপল।
২ টা প্ল্যাকার্ড দেখলাম। একটায় লেখা, 'ডেসটিনি সম্পর্কে আগে জানুন, তারপর লিখুন'। আর কি জানমু? তোদের মত বেহায়াগুলারে নিয়া আর কত রিসার্চ করমু! আরেকটায় লেখা, 'ডেসটিনিতে কর্মরত ২.৮ কোটি লোকের মুখে আজ অন্ন নাই'। এইখানেও আমার অবজেকশন; এইটা এক ধরনের ব্যাবসা। ব্যাবসা হইতে হবে হালাল। প্রতারণামূলক না। এই ব্যাবসায় তো প্রতারণায় পরিপুষ্ট!


মানে হালালের ছিঁটে ফোঁটাও নাই! এইটানিয়া এত কাহিনী! মানুষের সাথে প্রতারণা করতে মজা লাগে, এখন নিজেরা ব্যাম্বো খাইতাস মজা লাগেনা! আবার রাজনৈতিক দলগুলার মত মানুষের ভোগান্তি বাড়াইয়া সমাবেশ করতাস! আজকে নিজেরা সর্বস্ব হারাইয়া দিশেহারা। এইবার একটু ব্যাকে যাও তো, তোমাদের মত অনেকেই আরো আগেই তোমাদের ফাঁদে পইড়া সর্বস্ব হারাইসে, তাদের কি অবস্থা! কই, তুমি তো নিজ থাইকা কিছু নিয়া একবার ও তারে সাহায্য কর নাই! নিজের ফটকামি, আর মানুষরে তেল মারার আঁতলামি তো দিব্যি চালাইয়া গেস! জানি তোমরা অনেকেই নির্দোষ, কিন্তু এই ফাঁদে পা বাড়াইয়া যেই পাপ করস, তার প্রায়শ্চিত্ত তো আর অন্য কেউ করবেনা, তোমাদের ই করতে হবে!পা বাড়ানোর আগে একটা প্রবাদ মনে রাখা উচিত ছিল >>> 'ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না'।
আরো একটা প্রবাদ আছে >>> 'অতি লোভে তাঁতি নষ্ট'! লোভ-লালসা ছিল তদের অতি, তাই আজ নষ্ট হইল তাঁতি। হারাইলি সব। শর্ট কাট এ কোটিপতি হইতে চাইসিলি, প্রতিদানটা আশা করা যায় কম না! শিক্ষা দেয়ার জন্য যথেষ্ঠ। যে শিখবি, সে কৃপা পাবি। যে শিখবিনা, যা, আবার বেহায়াদের মত, আঁতেলের মত কাম কর। শর্ট কাট গেইনার (মিলিয়নিয়ার) না হইতে পারলেও শর্ট কাট লুজার হইতে পারবি! ইনশাল্লাহ।
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বর্গের নন্দনকাননের শ্বেতশুভ্র ফুল কুর্চি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ২২ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৭


কুর্চি
অন্যান্য ও আঞ্চলিক নাম : কুরচি, কুড়চী, কূটজ, কোটী, ইন্দ্রযব, ইন্দ্রজৌ, বৎসক, বৃক্ষক, কলিঙ্গ, প্রাবৃষ্য, শক্রিভুরুহ, শত্রুপাদপ, সংগ্রাহী, পান্ডুরদ্রুম, মহাগন্ধ, মল্লিকাপুষ্প, গিরিমল্লিকা।
Common Name : Bitter Oleander, Easter Tree, Connessi Bark,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচলের (সচলায়তন ব্লগ ) অচল হয়ে যাওয়াটই স্বাভাবিক

লিখেছেন সোনাগাজী, ২২ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬



যেকোন ব্লগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর, একটি ভয়ংকর খারাপ খবর; ইহা দেশের লেখকদের অদক্ষতা, অপ্রয়োজনীয় ও নীচু মানের লেখার সরাসরি প্রমাণ।

সচল নাকি অচল হয়ে গেছে; এতে সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

হরিপ্রভা তাকেদা! প্রায় ভুলে যাওয়া এক অভিযাত্রীর নাম।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২২ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৩


১৯৪৩ সাল, চলছে মানব সভ্যতার ইতিহাসের ভয়াবহ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। টোকিও শহর নিস্তব্ধ। যে কোন সময়ে বিমান আক্রমনের সাইরেন, বোমা হামলা। তার মাঝে মাথায় হেলমেট সহ এক বাঙালী... ...বাকিটুকু পড়ুন

তুমি বললে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৭

তুমি বললে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

খুব তৃষ্ণার্ত, তুমি তৃষ্ণা মিটালে
খুব ক্ষুধার্ত, তুমি খাইয়ে দিলে।
শ্রমে ক্লান্ত, ঘর্মাক্ত দেহে তুমি
ঠান্ডা জলে মুছে দিলে, ঊর্মি
বাতাস বইবে, শীতল হবে হৃদয়
ঘুম ঘুম চোখে পাবে অভয়।
তোমার আলপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনারই মেরেছে এমপি আনারকে।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল তারই ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার আক্তারুজ্জামান শাহীন!

এই হত্যার পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×