বরাবর
রফিকুল আমিন
ব্যাবস্থাপনা পরিচালক
ডেস্টিনি ২০০০ লিমিটেড ।
জনাব,
শান্তি প্রতিষ্ঠা নয় শান্তির স্বপ্ন দেখিয়ে বারাক ওবামা নোবেল প্রাইজটা হাতিয়ে নিয়েছেন ।আপনি নিয়েছেন এর চেয়ে অনেক বড় আল লাভজনক পুরস্কার ।৪৫ লক্ষ গ্রাহকের ধোয়া তুলে মালিক হয়েছেন হাজার কোটি টাকার ।সরল মানুষদের উর্বর ভুমি এই বাংলাদেশের অজস্র মানুষের চোখে স্বাবলম্বী হবার স্বপ্ন দেখিয়েছেন।তারা বুঝে না বুঝে ফাদে পা দিয়ে হারিয়েছে আশ্রয়ের
শেষ সম্বল ভিটে মাটি টুকো ।তারা যখন খোলা আকাশের নীচে কাতরাচ্ছে আপনি তখন ৫১ টি ফ্লাট বাড়ীর মালিক বনেছেন ।কথা দিয়েছিলেন সবুজ বিল্পব ঘটাবেন অথচ ঘটিয়েছেন দুর্নিতীর বিপ্লব ।শাষকের কুটচালে ভ্রান্ত হয়ে জীবনের একটু সামান্য নিশ্চয়তা পাবার তাগিদে সঞ্চয়ের সামান্য দু চারআনা আপনার হাতে তুলে দিয়েছিলাম ।গরীবের এই রক্তমিশ্রিত টাকায় আপনি ৬৭ লক্ষ টাকা মাসিক বেতন তুলেছেন ।কতগুলো ১০০ টাকার নোটে ৬৭ লক্ষ হয় ?নিশ্চয়ই অনেক ।জানেন,আমি সারাদিন রিকসা চালিয়ে মাত্র একখানা ১০০ টাকার নোট নিয়ে যখন বাড়ী ফিরি আমাদের চারটি মলিন মুখে হাসি ফুটে ।আপনার ৬৭ লক্ষতে হয়ত আপনার স্ত্রীর মুখে হাসি ফুটতো না ।আপনি প্রতি ঘন্টায় ১০ হাজার পেতেন ।আপনার ১ ঘন্টার টাকা দিয়ে আমার প্রতিবন্ধী মেয়েটার অপারেশনটা করিয়ে ফেলতে পারতাম ।আপনার ১ মিনিটের উপার্জনে আমার ভাঙ্গা রিকসাটা সারিয়ে রাস্তায় নামাতে পারতাম ।তাহলে অন্তত সপ্তাহে একদিন মাছের গন্ধ পেতাম ।বিশ্বস করেন স্যার,আমাদের টাকায় আপনারা যখন সুটেড বুটেড হয়ে ল্যান্ড ক্লুজারে শীতল হাওয়ায় শরীর ভিজিয়েছেন আমি তখনও মায়ের জন্য সামান্য একটা কাশির সিরাপের জন্য শশুর বাড়ীর দেয়া হাত ঘড়িটা বিক্রি করেছি ।স্ত্রীর শাড়ী কেটে পেটিকোট বানিয়েছি আবার পেটিকোট কেটে ব্লাউজ বানিয়ে পড়িয়েছি আর সম্বল টুকো তুলে দিয়েছি আপনার হাতে ।ভুল বুঝবেন না হয়ত ও কয়টা টাকায় আপনার পোষা ৫টি কুকুরের ১টারও একবেলার আহারও হবে না । ।আমাদের নি:স্ব করে আপনি প্রতিপত্তিতে সিক্ত হয়েছেন ।মনে রাখবেন আপনার গায়ের নামকরা ব্রান্ডের যে কোট ওটাতে আমার রক্ত আছে।যার মাথায় হাত বুলিয়ে প্রতিদিন স্বপ্ন বিক্রি করতে বের হতেন সেই সন্তানের উপর আমার অভিশাপ আছে ।নিশ্চয়ই কোন একদিন পথে দেখা হবে ।কে জানে কে কোন অবস্থায় থাকে। সেই পর্যন্ত ভাল থাকুন ।
বিনীত
লক্ষহীন এক অলক্ষী ।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ২:৪৩