বেশ কয়েকদিন লেখালেখি বন্ধ ছিল।নানা ঝামেলার কারণে রিভিউ লিখতে না পারলেও মুভি দেখা চলছে পুরোদমে।দিনে একটা মুভি না দেখলে পেটের ভাত যেন হজম হতে চায় না।যাক, প্যাঁচাল বাদ দিয়ে এবার কাজের কথায় আসি।
বেশ কদিন বাদে যেহেতু লিখছি তাই ভাবলাম ষ্টিভেন স্পিলবার্গের একটা মুভির রিভিউ দিয়ে শুরু করি।স্পিলবার্গের মুভি মানেই চমকপ্রদ কিছু থাকবে এটা একেবারে স্বতঃসিদ্ধ কথা। কিন্তু একটা মূক প্রাণীকে দিয়ে এমন অসাধারণ মুভি তৈরী করা বোধ হয় স্পিলবার্গের পক্ষেই সম্ভব।মুভিটা দেখে আমি এক কথায় অভিভূত।আই এম ডি বি রেটিং ৭.২।মুভির পটভূমি সেই ১ম বিশ্ব যুদ্ধের সময়কার।
এলবার্ট ন্যারাকোর্ট জোয়ীর সাথে ভালাসার বন্ধনে আটকা পড়ে সেদিনই যেদিন জোয়ীর জন্ম। যোয়ী হল ঘোড়াটির নাম।মুভির শুরুটা বেশ নাটকীয়। টেড ন্যারাকোর্ট মানে এলবার্টের বাবা একজন মদ্যপ এবং দেনার দায়ে আকন্ঠ নিমজ্জিত।জমিদারের কাছে খামারটা বন্ধক পড়ে আছে। বন্ধক মুক্ত করতে হলে খামারের সামনের জমিটা চাষ করে ফসল ফলাতে হবে।তাই টেড ন্যারাকোর্ট নিলামে ঘোড়া কিনতে যান যা দিয়ে তিনি হাল চাষ করবেন।কিন্তু সেখানেও জমিদারের কুটকৌশলে উত্তেজিত হয়ে ন্যায্য দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে টেড কিনে ফেললেন নিতান্তই বাচ্চা একটা ঘোড়াকে। এলবার্ট দায়িত্ব নেয় সেই ঘোড়াটিকে প্রশিক্ষণ দেয়ার।দুজনের মধ্যে গড়ে উঠে চরম এক ভালবাসার বন্ধন।কিন্তু কপাল দোষে এলবার্টকে হারাতে হয় ভাতৃসুলভ জোয়ীকে।ঘোড়াটির নতুন মালিক ইংল্যান্ড সেনা বাহিনীর এক জেনারেল। শুরু হয় ১ম বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতার মধ্যে জোয়ীর এক আশ্চর্য যাত্রা। কখনো ইংল্যান্ড কখনো আবার শত্রু জার্মানদের হয়ে অংশ নিতে হয় তাকে যুদ্ধে। নানা ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে জোয়ীর সাথে আবার দেখা হয় এলবার্টের। কিভাবে? চরম নাটকীয় এমন অনেক মুহুর্ত উপভোগ করতে হলে জলদি দেখে ফেলুন স্পিলবার্গের এই ওয়ার হর্স মুভিটি।জোয়ী নামের এ মূক প্রাণীটির প্রতি মানুষের ভালবাসা, একই সাথে নিষ্ঠুরতার চিত্র দারুণ মুন্সিয়ানায় ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ। যুদ্ধের মাঝে অন্য একটি ঘোড়ার প্রতি জোয়ীর মমত্ব প্রকাশের ভঙ্গি আপনাদের হৃদয়কে অবশ্যই ছুয়ে যাবে।এক কথায় বলা যায় স্পিলবার্গের শ্রেষ্ঠ মুভি গুলোর একটি হিসেবে অনায়াসে স্থান দেয়া যায় এই ‘WARHORSE’ মুভিটিকে।
ডাউনলোড লিংক
State of Play
নামের মতই মতই মুভির পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে নানান রকম নাটকীয়তা।স্টেট অব প্লে রাসেল ক্রোর আরেকটি মাস্টার পিস বলা চলে।রাসেল ক্রো তার অনন্য অভিনয় দক্ষতায় সাধারণ কাহিনীকেও করে তুলেন অসাধারণ।সেদিক দিয়ে মুভিটির কাহিনী অনেক শক্তিশালী। সাথে রয়েছেন আরেক শক্তিমান অভিনেতা বেন এক্লেফ।আই এম ডিবি রেটিং ৭.২। চলুন তাহলে কাহিনীর দিকে নজর দেই।
ওয়াশিংটন ডিসির জর্জটাউন শহরের এক রাস্তায় পালাতে থাকা একজন চোর আততায়ীর হাতে খুন হয়। একজন প্রত্যক্ষদর্শী যিনি সেখানে পিৎজা ডেলিভারি দিতে গিয়েছিলেন তাকেও গুলি করা হয়।লোকটা নিতান্তই একজন নিরীহ মানুষ।আর সেকারণেই খুনের মোটিভ খুঁজতে গিয়ে খটকা লাগে ক্রাইম ইনভেস্টিগেটর ক্যাল ম্যাকার্ফির(রাসেল ক্রো)।পরদিন সকালে ওয়াশিংটন মেট্রো রেলস্টেশনে একজন তরুণী আত্মহত্যা করেন যার নাম সোনিয়া বেকার।তার মৃত্যু সংবাদ শুনে হলভর্তি সংবাদকর্মীদের সামনেই কেঁদে ফেলেন স্টিভেন কলিন্স, যিনি পেনসিলভানিয়ার কনগ্রেসম্যান।ব্যাপারটা পুরো আমেরিকার মিডিয়ার কাছে চরম মুখরোচক একটা সংবাদ।এ নিয়ে নানা রকম কেচ্ছা কাহিনী ছাপা হতে থাকে সমস্ত পত্রিকা এবং ট্যাবলয়েড়গুলোতে।নিজের এমন বিপদে কনগ্রেসম্যান ছুটে আসেন তার সবচেয়ে ঘনিষ্ট বন্ধু রিপোর্টার রাসেল ক্রোর কাছে। জানায় তার সাথে সোনিয়ার আসলেই অন্তরংগতা ছিল।মৃত্যুর খানিক আগেও সোনিয়া তাকে একটা ভিডিও মেসেজ পাঠায় যাতে তাকে বেশ রোমান্টিকতা করতে দেখা যায় যা অস্বাভাবিক।নতুন মোটিভ খুঁজে পান ক্রো।উঠে পড়ে লাগেন খুনের রহস্য বের করতে।সাথে থাকে আরেক তরুণী রিপোর্টার ডেলা ফ্রে। ধীরে ধীরে জানতে পারেন সেই চোর, পথচারী এবং সোনিয়া বেকারের খুন একই সুতায় বাঁধা।সবই নির্দেশ করছে দেশের শীর্ষস্থানীয় অস্ত্রের সাপ্লায়ার পয়েন্ট কর্প কর্পোরেশনের দিকে যাদের বিরুদ্ধে একটি তদন্তের মূল দায়িত্ব রয়েছে কনগ্রেসম্যান স্টিভেন্সের ওপর।মুভির পরতে পরতে এমন চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ পেতে থাকে যে আপনারা মুভি ছেড়ে কোথাও যেতে পারবেন না।পুরো মুভিতে রয়েছে প্রচূর টুয়িস্ট এবং সবচেয়ে বড় চমক দেখতে পাবেন মুভির শেষে।আর কিছু বলব না।রাসেল ক্রো, বেন এক্লেফ আর র্যাকচেল ম্যাকএডামস অভিনীত দুর্দান্ত এই মুভিটা আশা করি আপনাদের দারুণ ভাল লাগবে।
ডাউনলোড লিংক
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০১৫ রাত ১০:৫৭