somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজীবঃ যেখানে মানুষ চাকুরী পায় না, সেখানে চাকুরী করে শাহরিয়ার মোল্লা ১০ বছর ধরে সরকার থেকে কোনো ধরনের বেতন-ভাতাদি নিচ্ছেন না। বুইঝা নেন ক্যামনে.............

১৪ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


চাকরি করেন অথচ বেতন নেন না এক সরকারি কর্মকর্তা। নিয়ম-কানুন খুব একটা মানেন না। কাজকর্মও ভালো বোঝেন না। দুর্নীতি ও অদক্ষতার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সহকর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। এত কিছুর পরও পদোন্নতি, প্রাইজ পোস্টিং_ সবই হচ্ছে তার। তিনি কাস্টমস কমিশনার এএফএম শাহরিয়ার মোল্লা। বর্তমানে কাস্টমস বিভাগের ঢাকা পশ্চিমের কমিশনার। জানা গেছে, শাহরিয়ার মোল্লা ১০ বছর ধরে সরকার থেকে কোনো ধরনের বেতন-ভাতাদি

নিচ্ছেন না। বছরের পর বছর একজন কর্মকর্তার বেতন না নেওয়ার ঘটনায় স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, তার আয়ের উৎস কী? কীভাবে চলছেন তিনি? বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে দীর্ঘদিন ধরে কানাঘুষা চলছে। অবশ্য কমিশনার শাহরিয়ার মোল্লা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
যোগাযোগ করা হলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দীন আহমেদ সমকালকে বলেন, কোনো সরকারি কর্মকর্তা বেতন নেন না কেন, এর জবাব তিনিই ভালো জানেন। বিষয়টি তার ব্যক্তিগত। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, তবে বেতন না নেওয়ার পেছনে অবশ্যই যৌক্তিক কারণ থাকতে হবে। আপনি বিষয়টি জানেন কি-না_ এ প্রশ্নের উত্তরে 'না' মন্তব্য করে তিনি বলেন, কমিশনার শাহরিয়ার মোল্লা কখনোই বিষয়টি আমাকে জানাননি, কেউ আমার কাছে নালিশও করেনি। তবে তার বক্তব্য, বেতন না নেওয়াটা দোষের কিছু নয়। তিনি কীভাবে চলছেন, সেটা অবশ্য প্রশ্নসাপেক্ষ। তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চাইলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে পারে।
একজন সরকারি কর্মকর্তা বেতন নেন না_ এ তথ্য শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেন দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান। তিনি সমকালকে বলেন, বেতন না নিয়ে চাকরি করেন এমন লোকও আছে, তা তো বেশ মজার! কৌতুকচ্ছলে গোলাম রহমান বলেন, হয়তো তার বাপের বিশাল সম্পত্তি রয়েছে। ঘটনা সত্যি হলে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবশ্যই তদন্ত করা হবে বলে জানান দুদক চেয়ারম্যান। এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা চাকরি করে দীর্ঘদিন বেতন তোলেন না, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। নিশ্চয়ই এ ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত। সরকারের সর্বশেষ বেতন কাঠামো অনুযায়ী, বর্তমানে একজন কমিশনার পদমর্যাদাসম্পন্ন কর্মকর্তার বেতন স্কেল ২৯ হাজার থেকে ৩৫ হাজার ৬০০ টাকা পর্যন্ত। এর সঙ্গে বাড়িভাড়া মূল বেতনের ৪০ শতাংশ, চিকিৎসা ভাতা, আপ্যায়ন ভাতা, বিনোদন ভাতা, জ্বালানি খরচসহ প্রতি মাসে সর্বসাকুল্যে প্রায় ৬০ হাজার টাকার সুবিধা দেওয়া হয়।
হিসাব মহানিয়ন্ত্রক (সিজিএ) অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাস্টমস কমিশনার শাহরিয়ার মোল্লা ১০ বছর ধরে সরকারি বেতন-ভাতা উত্তোলন করেননি। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসাব মহানিয়ন্ত্রক আবুল কাশেম সমকালকে বলেন, কোনো সরকারি কর্মকর্তা নিজে বেতন না চাইলে তা তোলা যায় না। এখন কেউ বেতন বিল জমা না দিলে সরকার তার বেতন ঘরে দিয়ে আসবে না। বিষয়টি তার কর্তৃপক্ষ (এনবিআর) ভালো বলতে পারবে। এনবিআরের সব কর্মকর্তার বেতন-ভাতাদি পাস হয় অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার অফিস থেকে। এ বিষয়ে আইআরডির সিএও মো. আহসানুজ্জামান বলেন, মাস শেষে প্রত্যেক সরকারি কর্মকর্তার নামে চেক ইস্যু করা হয়। তার আগে নিজে পূরণ করে বিলের কপি দাখিল করতে হয়। সরকারি কর্মকর্তার বেতন তোলার ক্ষেত্রে এটাই প্রথাসিদ্ধ নিয়ম। এখন কেউ যদি বেতন দাবি না করেন, সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
কমিশনার শাহরিয়ার মোল্লাকে নিয়ে নানা মুখরোচক গল্প আছে তার অফিসে। কেউ তাকে নিভৃতচারী, অন্তর্মুখী মানুষ হিসেবে মনে করেন। অনেকেই তাকে অদক্ষ, দুর্নীতিবাজ, দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকর্তা বলে মনে করেন। এ প্রতিবেদক শাহরিয়ার মোল্লার সঙ্গে মিরপুরে প্রশিকা ভবনে তার অফিসে কথা বলেন। তিনি দুর্নীতি, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও অদক্ষতার সব অভিযোগ নাকচ করলেও বেতন না তোলার ব্যাপারটি স্পষ্ট করেননি। শুধু বললেন, টেলিফোন বিলের অডিট আপত্তি নিয়ে কিছু সমস্যা রয়েছে। তবে এখন সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যাবে। কবে থেকে বেতন তোলেন না_ জানতে চাইলে তিনি বলেন, মনে পড়ছে না। অভিযোগ উঠেছে, মিরপুর প্রশিকা ভবনে প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ করে নিজের পছন্দমতো অফিস সাজিয়েছেন তিনি। সরকারি তহবিল থেকে তিনি কোনো টাকা নেননি। একটি সূত্র জানায়, কয়েকটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান তার মনের মতো করে অফিসটি সাজিয়ে দিয়েছে। কারণ সহজেই অনুমেয়। কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় তার অফিসে মূল্য সংযোজন কর ফাঁকি-সংক্রান্ত ফাইলগুলো স্তূপ আকারে পড়ে আছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ২০০৫ সালে মংলা কাস্টম হাউসে দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগে এনবিআর থেকে তাকে শোকজ করা হয়েছিল। যশোরে চাকরি অবস্থায় নাসির গ্রুপ ও বিআরবি কেবলস থেকে তার বিরুদ্ধে বেআইনি সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ওই সময় শাহরিয়ার মোল্লা তার অধীন একজন কর্মকর্তাকে গালিগালাজ করেন। পরে ওই কর্মকর্তা অর্থমন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ করলে রাজস্ব বোর্ড বিষয়টি তদন্ত করে। চিরকুমার এই কর্মকর্তা বর্তমানে বনানীতে সরকারি কাস্টমস কোয়ার্টারে থাকেন। দীর্ঘদিন বেতন না তোলার কারণে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ তার বাসাভাড়া কর্তন নিয়ে বেকায়দায় আছে। খারাপ ব্যবহারের জন্য তার অফিসের অনেকেই অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পশ্চিম কমিশনারেট অফিসের একাধিক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে তাদের ক্ষোভের কথা জানান। অবশ্য কমিশনার মোল্লা বলেন, অফিসের কিছু কর্মকর্তা হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। শাহরিয়ার মোল্লা দাবি করেন, তিনি সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ছুটিছাটার বিষয়ে তিনি কঠোর বলে অনেকেই তার ওপর ক্ষুব্ধ।
View this link
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ২:১৪
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×