খুব ধীরপায়ে এগোচ্ছে মেয়েটা,এতটুকুও শব্দ না করে।মনে প্রচণ্ড ভয়,পাছে "ও"টের পেয়ে যায়!
এই "ও"কেই সারাজীবন ভয় করে এসেছে সে।হ্যাঁ,ঘৃণা নয়,ভয়।যে ভয়ের কোন আদি অন্ত নেই।একই ছাদের নিচে এতটা বছর একসাথে কাটিয়ে দিল,তবুও মেয়েটার সেই ভয় কাটল না।বরং দিনে দিনে আতঙ্কে রূপ নিতে থাকল।অনুভূতিটা ভয়ের বদলে ঘৃণা হলেই যথার্থ হতো।কেননা "ও"কে নিয়ে মেয়েটার জীবনের যে তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে,তা এক জীবনে মনকে ঘৃণায় বিষিয়ে তুলতে যথেষ্টের চেয়েও কয়েক মাত্রা উপরে।মেয়েটা তারপরেও নিশ্চিত,অনুভূতিটা ঘৃণার নয়,ভয়ের।"ও "যতবার মেয়েটার কাছে এসেছে,মেয়েটা মেরুদণ্ডের মাঝে প্রচণ্ড ভয়ের একটা শীতল স্রোত অনুভব করেছে।আর অসহায় আতঙ্ক নিয়ে "ও"র প্রস্থানের প্রহর গুনেছে।অথচ কখনোই অগ্রাহ্য করতে পারেনি "ও"র অনাকাঙ্খিত কিন্তু প্রবল অস্তিত্বকে।
না,এই আতঙ্ককে মেয়েটা আর বইতে পারছে না।আজ এই ঘরে আর কয়েক মুহূর্তের মাঝেই মেয়েটা নিজ হাতে এই ভয়ঙ্কর আতঙ্ক-অভিশাপের অবসান ঘটাবে।খুব আস্তে আস্তে,কিন্তু দৃপ্ত ভঙ্গীতে এগিয়ে যাচ্ছে "ও"র দিকে,একটু একটু করে।হাতের মুঠোয় শক্ত করে চেপে রেখেছে শলার ঝাড়ুটা।না,আজ আর সে চিত্কার দিয়ে দৌড়ে পালাবে না।আজ সে এর শেষ দেখেই ছাড়বে।ঠোঁটের কোণে ফুটে ওঠা হিংস্র হাসি নিযে সে এগুতেই লাগল।আজ সে প্রমাণ করল ভয় থেকেই যাবতীয় হিংস্রতার জন্ম।খুব কাছাকাছি পৌছাতেই সপাং করে বাড়ি ঝাড়ল তেলাপোকাটার গায়ে।বাড়ির চোটে তেলাপোকাটার নাড়িভুড়ি বেরিয়ে এল।তা দেখে মেয়েটারও নাড়িভুড়ি উল্টে আসার জোগাড়।"ইয়াক!"এই প্রথমবারের মত মেয়েটা তেলাপোকার প্রতি ঘৃণাও অনুভব করল।