somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মীয় লম্ফঝম্ফ এবং এদেশের মালালা ইউসুফজাই

১২ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ১০:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মালালা ইউসুফজাই--- প্রথমেই তাকে স্যালুট; বর্বর একটি দেশের নিকৃষ্ট পশুদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবার জন্য।

এই বর্বর, মূর্খ, পশুরা বিভিন্ন সময়ে অনেক প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরকে চিরতরে থামিয়ে দিয়েছে, নিজদের বর্বরতাকে নিকৃষ্ট পশুর থেকেও উন্নত করেছে। ধর্মান্ধ পশুগুলোর বিরোধিতার জন্য পাঞ্জাবের গভর্নর সালমান তাসিরকে এবং মন্ত্রী শাহবাজ ভাট্টিকে প্রাণ দিতে হয়েছে। ধর্মান্ধ পশুগুলি হত্যাকারীদের বিচারের বদলে বীরের মর্যাদা দিয়েছে, হাজার হাজার মানুষ ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে তাঁদের সংবর্ধনা দিয়েছে। এই বর্বর দেশটিতে ধর্ষণ অভিযোগ প্রমাণের জন্য তিন জন সাক্ষীর প্রয়োজন হয়, তিন জন সাক্ষী যোগাড় না করতে পারলে ধর্ষণের অভিযোগকারীনির উপরে ধর্ষণের থেকেও ভয়াবহ নির্যাতন নেমে আসে।

এই বর্বর দেশটিকে খুব বেশি চিন্তা করতে চাই না কিন্তু যখন দেখি আমাদের এই দেশে ধর্মান্ধ মানুষগুলি যখন একি ধরনের কাজ করে এবং সমাজ, রাষ্ট্র যখন তার বিরুদ্ধে কিছু না বলে চুপচাপ থাকে তখন শঙ্কিত না হয়ে পারি না।

এদেশে আজ বড় রাজনৈতিক দলগুলি ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি করে এমন দলগুলির সাথে জোট করছে। ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতিকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। ভোট পেতে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। ধর্মনিরপেক্ষতাকে আদর্শ বলে মানে এমন একটি রাজনৈতিক দলও নির্বাচনের আগে পীর, শায়খুল হাদিসদের সাথে জোট করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে, ওলামা মাশায়েখ নামে অঙ্গ-সংগঠন সৃষ্টি করে। এদেশে আজ মুফতি আমিনী আর চরমোনাই পীরদের জয় জয়কার। সরকার নারীনিতী কিংবা শিক্ষানীতি কিংবা বিবাহ আইন করতে চাইলে এইসব মুফতি সাহেব এবং পীর সাহেবদের গ্রিন সিগন্যালের প্রয়োজন পড়ে।

দেশে আজ সংখ্যালঘু, ব্লাসফেমি নামক শব্দগুলির ব্যাপক প্রচলন। একটা দেশ কতখানি নির্বোধ হলে ধর্মের ভিত্তিতে দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে সংখ্যালঘু বলতে পারে। হিটলার ইহুদিদের গলায় আইডি কার্ড ঝুলিয়ে দিয়েছিল; নিজের দেশের মানুষকে সংখ্যালঘু বলা হিটলারের থেকেও কম বর্বরতা নয়!

আতঙ্কিত হয়ে উঠি যখন দেখি বছরের পর বছর যে সংস্কৃতির লালন পালন আমরা করছি তাকে যখন বিধর্মীদের সংস্কৃতি বলে যখন কেউ চিৎকার করে এবং সেই চিৎকারের সমর্থনে আরো হাজার হাজার শিক্ষিত ছেলেপেলে চিৎকার করে। আতঙ্কিত হয়ে উঠি যখন দেখি আমার নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে ক্লাসে ধর্মীয় নোট ছড়ানো হয়, এবং বাকি সবাই সেটাকে ধর্মীয় ইস্যু বলে এড়িয়ে যায়। ধর্মের নামে যখন দেশে যখন ইউটিউব কিংবা ফেইসবুক বন্ধ থাকে তখন আতঙ্কিত না হয়ে পারি না।
যাহোক এখন সময়, একবার ভেবে দেখুন। আপনি কি চান? আপনার এই দেশ কোন বর্বর রাষ্ট্রে পরিণীত হউক?রামুর ঘটনা, মূর্তি পড়ানোর ঘটনা আপনার চোখের সামনেই ঘটছে। এভাবে যদি চলতে থাকবে তবে এদেশ একদিন পাকিস্তান কিংবা আফগানিস্তান হয়ে যাবে। তখন দেখা যাবে এদেশের কোন মেয়ে মালালা ইউসুফজাই এর মত খবরের শিরোনাম হচ্ছে।

ধর্ম আমাদের বাপ দাদারাও পালন করেছে। তাদের ধর্মের অধিকার রক্ষার জন্য কোন মুফতি কিংবা পীরদের রাজনীতি করতে হয়নি, তাদের ধর্ম রক্ষার জন্য মিছিল মিটিং করতে হয়নি,তাদের ধর্ম রক্ষার জন্য রামুর মত ঘটনা ঘটাতে হয়নি, তাদের ধর্ম রক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে ধর্মীয় নোট বিলি করতে হয়নি। তাদের ধর্ম রক্ষার জন্য মন্দিরে আগুন দিতে হয়নি। তাই কিছু ধর্মান্ধের পাল্লায় পরে এতদিন ধরে চলে আসা অসাম্প্রদায়িক ভাবমূর্তিকে নষ্ট করবেন না। আর যদি মনে করেন এতদিন যা হয়েছে ভুল তবে এদেশেও একদিন তৈরি হবে পাকিস্তানের মত দোযখ, প্রস্তুতি নিতে থাকেন!
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ১০:২৫
১০টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ড্রেনেই পাওয়া যাচ্ছে সংসারের তাবৎ জিনিস

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫০



ঢাকার ড্রেইনে বা খালে কী পাওয়া যায়? এবার ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (উত্তর) একটি অভুতপূর্ব প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। তাতে ঢাকাবাসীদের রুচিবোধ অথবা পরিচ্ছন্নতাবোধ বড় বিষয় ছিল না। বড় বিষয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৮

আজ (১০ মে ২০২৪) রাত দুইটা দশ মিনিটে নিউ ইয়র্কের পথে আমাদের যাত্রা শুরু হবার কথা। এর আগেও পশ্চিমের দেশ আমেরিকা ও কানাডায় গিয়েছি, কিন্তু সে দু’বারে গিয়েছিলাম যথারীতি পশ্চিমের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×