somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দলছুট ও বাপ্পার ‘সামনে দাড়া’ গানটির পেছনের অজানা গল্প ঃ

১২ ই অক্টোবর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাংলা গানের পেছনের অজানা গল্পের আজ আবার নিয়ে এলাম একজন প্রিয় মানুষের গানের পেছনের গল্পটি। যে মানুষটি বাপ্পার ‘ পরী’ গানটি লিখেছিলেন সেই মানুষটির লিখা কিছুদিন দলছুট ব্যান্ড এর সর্বশেষ অ্যালবাম এর একটি চমৎকার গানের গল্প আপনাদের বলবো ।

সময়টা ২০০৯ এর মার্চ মাস। গীতিকার রানা ভাই লন্ডন থেকে দেশে ফিরে আসেন । দেশে ফেরার পর হুট করে সবকিছুর মাঝে নিজেকে বড় অচেনা ভাবতে মনে করতে থাকেন। পরিচিত জন ,পরিচিত পরিবেশ সবকিছুই তবুও কেম
ন যে
ন অচেনা সবকিছু, অচেনা নিজে। নিজের সাথে নিজে কথপখন করতে থাকেন কিন্তু তবু মনে হয় নিজেই নিজেকে চিনতে পারেন না। রানা ভাইয়ের ভাষায় – “দেশে ফিরে নিজেকে অপরিচিত লাগতে শুরু করে আমার কোনো এক অজানা কারণে। নিজেকে ভীড়ের মানুষ মনে হতে শুরু করে। অদ্ভুত এক অভিমানবোধে আক্রান্ত হই আমি। নিজেকে নিজে বুঝে উঠতে পারিনা, নিজেকে বুঝতে চাইওনি কোনোদিন। কিন্তু এবার নিজের সাথে নিজের কথোপকথন শুরু হতেই চমকে উঠি। এই আমাকে আমি চিনি না, দেখি নি আগে...
নিজেকে কিচ্ছু মনে হয় না, শুধু মনে হয় ভীড়ের মানুষ হয়ে গেছি আমি। ‘’
এই অচেনা নিজেকে চিনতে ও খুঁজে পেতে ঠিক করেন ঘর থেকে অজানার উদ্দেশ্য বের হবেন। দূরে কোথাও থেকে নিজেকে ফিরে পাবার জন্য একটু বেড়িয়ে আসবেন ঠিক আগের মতো আগের বোহেমিয়ান জীবনে ফিরে যাওয়ায় ইচ্ছে । বরাবরের মতো ছোট ভাই রুপম কে সঙ্গে নিয়ে ঠিক করলেন সিলেট যাবেন । কিন্তু এবার রুপমও সেই আগের রুপম নেই। বিয়ে সংসার করে পুরোদস্তুর এক সংসারী মানুষ হয়ে গেছে। রুপম কমলাপুর স্টেশন থেকে ফিরে আসে। অগত্যা রানা ভাই একাই সিলেটের উদ্দেশ্য ট্রেনে চড়ে বসেন ।

কদিন পর সিলেট থেকে চলে যান চট্টগ্রামে বড় বোনের বাসায় । সেখানে গিয়ে ছোট ভাগ্নের নিস্পাপ মুখটি দেখে মন ভালো হতে শুরু করে রানা ভাইয়ের। আস্তে আস্তে মন শান্ত হয়। সেদিন ভোরবেলায়
অনুভব করেন অচেনা এক সর্বগ্রাসী । ফিরে পান নিজেকে আর তখনই লিখে ফেলেন
‘’ আধাঁর শেষে, আলোয় হেসে
সুর্য আকাশ বুকে ধরে
সামনে দাড়া ...
ভিড়ের মানুষ, আর কতকাল
ওঠ জেগে ওঠ, নতুন সকাল
অপেক্ষাতে তোরই জন্য
হাজার অযুত নাড়ছে কড়া
ভীড় ঠেলে আয়, সামনে দাড়া ‘’ এই কয়টি লাইন ।।
ঢাকায় ফিরে বাপ্পাদার স্টুডিও তে যান কথাগুলো বাপ্পাদাকে দেখানোর জন্য। বাপ্পাদার গানের কথাগুলো পছন্দ হয়ে যায়। এর কিছুদিন পর ‘দলছুট’ এর নতুন অ্যালবাম ‘আয় আমন্ত্রন’ এর কাজ শুরু হয়ে যায়। বেশ কয়েকটি গানের কাজ শেষ হবার পর বাপ্পাদা ‘সামনে দাড়া’ গানটির সুর করতে বসে যান। বাপ্পাদা গানটিতে যে সুর বসান সেটা রানা ভাইয়ের ভাবনারও অতীত। লিখার সময় যে গুনগুনটা ছিল রানা ভাইয়ের মাথায় তাঁর চেয়েও সুন্দর কম্পজিশন হয়। তখন পর্যন্ত গানটার প্রথম অংশ ঐ কথাগুলোই লিখা ছিল তাই বাপ্পাদা বাকী কথাগুলো লিখতে বলেন । রানা ভাই দেরী না করে স্টুডিওতে বসেই কাগজ কলম নিয়ে লিখতে বসে যান । এতদিন লিখতে গেলে প্রিয় যে শব্দগুলো চারপাশে ভীর করতো না সেদিন ঠিক তাঁর উলটো। সব প্রিয় শব্দ চারপাশে ভিড় করা শুরু করে। একটানে লিখে ফেলেন - অন্য কোথাও পুড়ুক রোদে
বিপন্ন সুখ অচীন ক্রোধে
সামনে দাড়া,
ভুল ধারাপাত, অনেক হলো
অনেক হলো জোছনা তারা
ওঠ জেগে ওঠ, ব্যাকুল ভোরে
হাতটা হাতে দিস, দিস ইশারা
অপেক্ষাতে তোরই জন্য,
হাজার অযুত নাড়ছে কড়া
ভীড় ঠেলে আয়, সামনে দাড়া ... ।।

লিখা শেষ করেই বাপ্পাদার হাতে তুলে দেন। তখনও গানটির ডেমো ভয়েস তৈরি হয়নি। তাই গানটা পুরোটা না শুনেই বাড়ীর পথে রওনা দেন। গানটি লিখার পর থেকেই অচেনা নিজেকে নতুন করে ফিরে পেতে থাকেন। আর এভাবেই ‘সামনে দাড়া’ হয়ে যায় অচেনা এক রানা এর নিজেকে ফিরে পাবার গান। ‘দলছুট’ এর নতুন অ্যালবাম এর জনপ্রিয় গান ।

গানটির লিঙ্ক http://www.mediafire.com/?2v15rullbanm3ud' target='_blank' >সামনে দাড়া গানটির গল্প গীতিকার রানা ভাইয়ের মুখ থেকে শুনতে চাইলে ক্লিক করুন ঃ সামনে দাড়া
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×