somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাবিতে ভর্তি জালিয়াতির অভিনব পদ্ধতি, গুজবে ঘুম হারাম শিক্ষার্থীদের

১২ ই অক্টোবর, ২০১২ সকাল ৮:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাবি: রাত পোহালেই শুরু হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষের ‘ক’ ইউনিটের (বিজ্ঞান) ভর্তি পরীক্ষা। ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসসহ পুরো ঢাকায় ছড়িয়ে পড়েছে প্রশ্ন ফাঁসের গুজব। ৪ লক্ষা টাকা দিলে প্রশ্ন ও উত্তর দিয়ে দেওয়া হচ্ছে এমন গুঞ্জন এখন সবার মুখে মুখে।

সম্প্রতি প্রশ্ন ফাঁসের গুজবে বিসিএস লিখিত পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে।

ভর্তী পরীক্ষা দিতে আসা বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীদের সথে রাতে কথা বলে জানা যায়, প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে এমন গুজব তারা শুনেছেন। তাদের প্রশ্ন, প্রশ্ন যদি ফাঁসই হয়ে যায় তাহলে পরীক্ষা দিয়ে কি লাভ? অনেকেই বলেছেন, তারা এই টেশনের কারণে শেষ মহুর্তের প্রস্তুতি তো দূরে থাক রাতে ঘুমাতেই পারবেন না।

অন্যদিকে, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ডিজিটাল ও ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তির মেধা তালিকায় স্থান করে দেওয়ার জন্য সক্রিয় রয়েছে কয়েকটি চক্র। প্রশ্ন ফাঁসের গুজবের সত্যতা এখন পর্যন্ত পাওয়া না গেলেও ৩-৪ লাখ টাকা দিলে পরীক্ষার্থীদের মেধা তালিকায় জালিয়াতিরে মাধ্যেমে স্থান করে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন খোদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও।

ভর্তি পরীক্ষায় অভিনব পদ্ধতিতে জালিয়াতির বিষয়ে বাংলানিউজের অনুসন্ধানেও বেরিয়ে এসেছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গুজবে কান না দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদেও প্রতি আহবান জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বাংলানিউজকে বৃহস্পতিবার রাতে জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন ফাঁসের কোনও সম্ভাবনা নেই। তাই শিক্ষার্থীদের উদ্বেগেরও কোন করণ নেই।

তবে, প্রশ্ন ফাঁস কিংবা জালিয়াতির সাথে জড়িত থাকতে পারে এমন সন্দেহজনক কিছু পেলে যে কাউকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশসনের সঙ্গে যোগাযোগের আহবান জানিয়েছেন উপাচার্য।ৎ

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আমজাদ আলী বাংলানিউজকে জানান, প্রশ্ন ফাঁসের কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে জালিয়াতদের বিষয়ে সতর্ক রয়েছে প্রশাসন।

ডিজিটাল জালিয়াতি:
ডিজিটাল জালিয়াতির মাধ্যেমে ভর্তির মেধা তালিকায় স্থান করে দেওয়ার জন্য সক্রিয় হয়ে উঠেছে একাধিক চক্র। এই পদ্ধতিতে(জালিয়াতি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে গিয়ে গতবারও কয়েজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে আটক হয়। একধিক শিক্ষার্থী আটক হওয়া সত্তেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশসনের ব্যার্থতায় চক্রটিকে সনাক্ত করা যায়নি। ফলে এবার আরও বৃহৎ পরিসরে জলিয়াতির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে চক্রগুলো।

ডিজিটাল জালিয়াতি বিষয়টি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে গতকয়েকদিন ধরে আলোচিত হচ্ছিল। এ ব্যাপরে ব্যাপক অনুসন্ধান চালায় বাংলানিউজ। একাধিক চক্র আগমীকালের পরীক্ষায় জালিয়াতির জন্য নানা ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছে এমন তথ্য জানিয়েছে বেশ কয়েকটি সূত্র। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও মনে করে এমন চক্র সক্রিয় থাকতে পারে। জালিয়াতি ঠেকাবার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।

যে ভাবে জালিয়াতি:
মূলত মোবাইল ফোন বা ইলেক্টিক ডিভাইসের মধ্যমে ডিজিটাল জালিয়াতি করা হয়। আর এজন্য বেছে নেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বইরের কিছু কেন্দ্র।সেখানের কিছু শিক্ষক ও কর্মচারীর সহায়তায় কিংবা মোবাইল ফোনে ছবি তুলে প্রশ্নের সবগুলো সেট পরীক্ষার হল থেকে চক্রটির কাছে পাঠানো হয়।ছবি তোলা প্রশ্নপত্রটি ডাটা কেবলের সাহায্যে কম্পিউটারে নিয়ে জুম করে সমাধান করা হয়।

অবশ্য চক্রটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের বিভিন্ন রুমে বা আবাসিক এলাকাগুলোতে অবস্থান করে।

প্রশ্নপত্রের সবগুলো সেটের উত্তর দ্রুত এবং সঠিকভাবে তৈরি করার জন্য প্রস্তুত থাকে বিভিন্ন কোচিংয়ের শিক্ষক এমনকি সদ্য বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ক্যাডারা। উত্তরগুলো মোবাইলে তাৎক্ষণিকভাবে চুক্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের কাছে এসএমএস করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেট অনুসারে শিক্ষার্থীরা যে সেটের উত্তর দরকার সেটি ওএমআর শিটের বৃত্তে ভরাট করে ফেলে।

সূত্র জানিয়েছে, ২ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন বা ইলেক্টিক ডিভাইস নিষিদ্ধ করায় জালিয়াতি চক্র মোবাইল বা ডিভাইস কর্মচারী বা শিক্ষককের মাধ্যমে হলে প্রবেশের ঠিক আগ মহুর্তে সরবরাহ করে।

একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, এবারের সবগুলি ইউনিটের পরীক্ষায় জালিয়াতির জন্য প্রস্তুত চক্রগুলো। ক ইউনিটের জন্য ৪ লাখ, গ ইউনিটের জন্য ৫ লাখ, খ ইউনিটের জন্য ২-৩ লাখ টাকার চুক্তি করছে জালিয়াত চক্র। তারা প্রথমে অল্প টাকা নিচ্ছে, কেবল চান্স পেলেই বাকি টাকা নেওয়ার কথা রয়েছে। সেক্ষেত্রে তারা শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট জামানত হিসেবে নিচ্ছে।
সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইন শৃক্সখলা বাহিনী সক্রিয় থাকায় এসএমএস প্রেরণ কারী ও প্রাপক সবাই নতুন সিম দিয়ে জালিয়াতি করবে। পরীক্ষা শেষ হওয়া মাত্রই সিমগুলো ভেঙ্গে ফেলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা কলেজ, লালমাটিয়া মহিলা কলেজ, কবি নজরুল সরকরি কলেজসহ বেশ কয়েকটি কেন্দ্রের শিক্ষক-কর্মচারীরা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে জালিয়াত চক্রকে সাহায্য করবেন। সব কটি ইউনিটে ৫০০ শতাধিক শিক্ষার্থীকে তারা ভর্তি করার টার্গেট করা হয়েছে।

অন্যদিকে, কয়েকটি কেন্দ্রের কিছু শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্র পূরণ করতে সহায়তা করে মেধাতালিকায় স্থান করে দেওয়ার চক্রান্তও করেছে একটি চক্র।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ভর্তি পরীক্ষার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে শিক্ষরা সচেতন থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের কেন্দ্রগুলোতে এ বিষয়ে নজর দেওয়া হয় না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আমজাদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের কিছু কেন্দ্রে জালিয়াত চক্র সক্রিয় থাকে। এ রকম অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতবছরই ১০টি কেন্দ্রকে বাদ দেওয়া হয়েছে। গতবার প্রায় প্রতিটি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার সময় এই চক্রগুলো সক্রিয় ছিল।

তিনি আরও বলেন, এবার জালিয়াত চক্রকে ঠেকাতে নানা ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আইন শৃক্সখলা বাহিনী সক্রিয় থাকবে। কেন্দ্রের ভিতর যাতে মোবাইল ফোন বা এ জাতীয় কিছু নিয়ে কেউ প্রবেশ না করতে পারে এ জন্য ব্যাবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এখান থেকে

বাংলাদেশ সময়: ০২১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১২
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০১২ সকাল ৭:৫৯
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নিছক স্বপ্ন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৮



©কাজী ফাতেমা ছবি
তারপর তুমি আমি ঘুম থেকে জেগে উঠব
চোখ খুলে স্মিত হাসি তোমার ঠোঁটে
তুমি ভুলেই যাবে পিছনে ফেলে আসা সব গল্প,
সাদা পথে হেঁটে যাব আমরা কত সভ্যতা পিছনে ফেলে
কত সহজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একদম চুপ. দেশে আওয়ামী উন্নয়ন হচ্ছে তো?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৯



টাকার দাম কমবে যতো ততোই এটিএম বুথে গ্রাহকরা বেশি টাকা তোলার লিমিট পাবে।
এরপর দেখা যাবে দু তিন জন গ্রাহক‍কেই চাহিদা মতো টাকা দিতে গেলে এটিএম খালি। সকলেই লাখ টাকা তুলবে।
তখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×