somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসংলগ্ন লেখালেখি

১২ ই অক্টোবর, ২০১২ ভোর ৪:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিছু কিছু স্বপ্ন সবুজ

একদিন সবকিছু ছেড়ে ঠিকঠিক আমি আমাজন জংগলে চলে যাব,
এই যান্ত্রিক অসভ্য সভ্যতা
আমাকে আর টানে না নাজলি,
স্বর্গের চেয়েও বড় বেশি নিসর্গ চাই, নাজলি
নিসর্গের মাঝে সর্গ চাই।

দীপনাথ চেয়েছিলেন পাহাড়ে যেতে,
পারেননি;
কিন্তু ওভাবে তো হয়না দীপনাথ,
হয় না;
আগেও হয়নি কখনো, পরেও হবে না।
ওভাবে হুটহাট করে
হঠাৎ রাস্তা থেকে হারিয়ে যাওয়া যায় না।
মা এর আঁচল টানে,
বাবার স্বপ্ন টানে,
শৈশবের মাঠ টানে,
সবার ওপরে টাকা টানে।
এত টান অগ্রাহ্য করে
অবলীলায়
নির্দ্বিধায়
হেঁটে যাওয়া যায় না।

আমি যাব আমার মত করে
সমরাস্ত্র সমেত সর্বা্ংগীণ প্রস্তুত সৈনিকের মত নির্লিপ্ত মন নিয়ে।
পেছনের অনেক কটা সূতা ইতোমধ্যে কেটে ফেলেছি নাজলি,
কেটে ফেলেছি।

হয়তোবা আগামীকাল নয়,
কিন্তু জেনে রেখ নাজলি
খুব শীঘ্রই
আমি চলে যাব,
সবকিছু ছেড়ে সত্যি সত্যি আমি আমাজন জংগলে চলে যাব।

এইসব সাদা, কালো, ধূসর রঙ আর থাকবে না নাজলি,
শুধু থাকবে সবুজ রঙ,
সবুজ পাতায় সবুজ পাপ থাকবে,
সবুজ সূর্যের আলোয় জড়ানো হিংস্র সবুজ সাপ থাকবে,
সবুজ মানুষ থাকবে,
সবুজ স্বপ্ন থাকবে,
সবুজ রমণীর কোলে অবুঝ শিশু থাকবে,
এবং সেই
সবুজই আমাদের ঠুকরে ঠুকরে খাবে।

-হ্যাঁ, বুঝলাম,সব বুঝলাম,
কিন্তু;
তারপর ?

-তার আর কোন পর নেই নাজলি,
তারপর -
সবই আপন
লাঠির মাথায় জিঘাংসা আপন,
জংলি মাটিতে রিরংসা আপন,
বনের মাঝে জীবন আপন,
জন্তুর মত মৃত্যু আপন।

আজীবন
কিংবা
আমৃত্যু।


এইটা কি আদৌ কোন গল্প??

ভালই চলছিল। কিন্তু, কীভাবে কীভাবে যেন সেই দেশে ভাইরাস ছড়িয়ে পরল একটা। যার ফলে সাধারণ মানুষ ছাড়াও আরো দুই প্রজাতির প্রানীকে দেখা গেল যারা অবকাঠামোগত দিক দিয়ে ঠিক মানুষের মতই। আসলে এই ভাইরাস অনেক বাছবিচার করেই তার শিকারসমূহ কে বেছে নিল, কিংবা এমনও হতে পারে যে মানুষেরাই তাদের একঘেয়ে জীবন থেকে পরিত্রাণ পাবার জন্য ভাইরাসের কাছে নিজেদের সঁপে দিল। সাধারণ মানুষদের মাঝে যাদের বুদ্ধিশুদ্ধি একটু বেশি ছিল, রসিক সমাজ যাদেরকে ডিপ জলের মাছ বলতো তারা ধুমাধুম ভ্যাম্পায়ার হয়ে গেল। তাদের দাঁত বড় হয়ে গেল খুব, ক্ষীপ্রতা, জিঘাংসা বেড়ে গেল খুব, সূক্ষ্ণভাবে রক্তচোষা শুরু করে দিল খুব। তো সেই ভ্যাম্পায়ার গোষ্ঠী দিন নাই, রাত নাই, সারাদিন রক্তের জন্য ছোকছোক করতে লাগল। আর সেই ভ্যাম্পায়ার রা যাদের রক্ত খেল, যাদেরকে চুষে জীবনটাকে ৫০০ মিলি তরল দুধের প্যাকেট এর মত চ্যাপটা বানিয়ে ফেললো তারা হয়ে গেল জোম্বি, তারা হেলে দুলে চললো খুব, আকাশ বাতাস দেখলো খুব, আর ভ্যাবলার মত এক দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মুখটা হা হয়ে গেল। তো এইভাবে সেই দেশে তিন প্রকারের মনুষ্য কাঠামো বসবাস করা শুরু করে দিল।
তবে, চারিত্রিক বেশ কিছু ভিন্নতা থাকলেও একটা ব্যাপারে তারা সবাই একই অবস্থানে ছিল আর তা হল আজহারের স্বরূপ উদ্ঘাটনে বিফলতায়। আজহার একটা সস্তা বাঁশি হাতে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতো, খুক খুক করে কাশতো আর ডানে বামে সামনে পিছনে হরেক কায়দায় মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে কি জানি এক সমীকরণ মেলানোর চেষ্টা করতো। প্রচন্ড রক্তশূন্যতায় ভোগা আজহারের দিকে ভ্যাম্পায়ারেরা দাঁত তাক করার কোন স্পৃহা অনুভব করল না, সাধারণ মানুষ আজহারের এহেন নিস্পৃহতাকে মেনে নিয়ে আজহারকে তাদের দলের একজন ভাবার কোন কারণ পেল না, আর জোম্বিরা তাকে দেখে ভেংচি কেটে চলে গেল।
তো, সেই সময়ে সেই দেশে ভ্যাম্পায়ারেরা চাইছিল আরো অনেক অনেক সাধারণ মানুষকে জোম্বি বানাতে, সাধারণ মানুষেরা চাইছিল চিতা বাঘের ক্ষিপ্রতা নিয়ে ভ্যাম্পায়ার হয়ে যেতে, আর জোম্বিরা ভ্যাম্পায়ার দের উপর প্রতিশোধ নেবার একমাত্র উপায় বের করেছিল ভ্যাম্পায়ার হয়ে যাওয়া, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তারা সিঁড়ি দিয়ে উঠার চেষ্টা করছিল খুব। আগে সাধারণ মানুষ হতে হবে, তারপর হতে হবে ভ্যাম্পায়ার, কোলের অবুঝ শিশু থেকে শুরু করে অশীতিপর বৃদ্ধ জোম্বিদের এক চোখে প্রতিশোধস্পৃহা জ্বললো, আরেক চোখ স্বপ্নে নীল হয়ে গেল।
এইভাবে নিজ নিজ স্বার্থসিদ্ধির জন্য, স্বপ্ন পূরণের জন্য তারা দৌড়াতে লাগল খুব।
অতঃপর, তারা অ-সুখে অশান্তিতে বসবাস করতে লাগল।

আর, আজহার তখনো খুক খুক করে কাশলো বেশ, ফিক ফিক করে হাসলো বেশ, সম্ভবত তার সমীকরণের সমাধান সে পেয়ে গিয়েছিল।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১২ ভোর ৪:০৯
৩২টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×