somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিয়ন্ত্রণহীনএলপি গ্যাসের দাম

১০ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ৮:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দিন দিন বেড়েই চলেছে তরল পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাসের দাম। এক্ষেত্রে আমদানিকারকরা বলছেন বিশ্ববাজারে এলপি গ্যাসের কাঁচামালের দাম বেশি। আর স্থানীয় পর্যায়ে ডিলারদের অজুহাত চাহিদা বাড়লেও সে তুলনায় সরবরাহ কম। এ কারণেই দেশে এলপি গ্যাসের দাম বাড়ছে। সরকারি হিসেবে দেশে বর্তমানে এলপি গ্যাসের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৪ লাখ টন। কিন্তু সরবরাহ হচ্ছে মাত্র ১ লাখ টনের কিছু বেশি। আবার এর ৮০ শতাংশই আমদানি নির্ভর। ফলে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না এলপি গ্যাসের দাম।
২০০৯ সালের ৭ জুলাই থেকে সরকার রাজধানীসহ সারা দেশে আবাসিক গ্যাস সংযোগ বন্ধ রেখেছে। ফলে এলপি গ্যাসের চাহিদা বেড়েই চলেছে। এলপি গ্যাস সহজলভ্য ও সুলভ করার আশ্বাস বারবার দেয়া হলেও বাস্তবে তার বিপরীতটাই ঘটছে। সরকার নির্ধারিত দাম মানা হচ্ছে না কোথাও। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এক-একটি সিলিন্ডারের দাম দ্বিগুণেরও বেশি নেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে চাহিদা অনুযায়ী যোগান নেই বাজারে। গ্রাহরা পড়েছেন বিপাকে, পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। সূত্রমতে, বিশ্ববাজারে গত মাসে এলপি গ্যাসের কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাড়ে ১২ কেজি গ্যাসের একটি এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম বেড়েছে ২শ টাকারও বেশি। আগে যেখানে একজন খুচরা বিক্রেতা সাড়ে ১২ কেজি এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করেছেন সর্বোচ্চ ১৩শ টাকায়, বর্তমানে তা বিক্রি করতে হচ্ছে ১৫শ ৫০ টাকায়। যদিও সা¤প্রতিক সময়ে সরকার কিছু কিছু আবাসিক গ্যাস সংযোগ দিয়ে যাচ্ছে। এতে কোথাও কোথাও এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি কিছুটা কমে যাওয়ায় সিলিন্ডার প্রতি খরচ কিছুটা বেড়ে গেছে। দেশে বিদ্যমান তীব্র গ্যাস সঙ্কটের কারণে রাজধানীসহ দেশের প্রধান প্রধান শহরে চাহিদা বাড়লেও পাইপলাইনে গ্যাস সংযোগ বন্ধ রয়েছে। এর ফলে সারাদেশ জুড়েই জ্বালানি হিসেবে এলপি গ্যাসের চাহিদা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। মফস্বল শহর ও গ্রামাঞ্চলে কাঠখড়, লতাপাতা প্রভৃতি প্রচলিত জ্বালানির প্রাপ্যতা চাহিদার তুলনায় কম হওয়ায় সেখানে এলপি গ্যাসের চাহিদা বাড়ছে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে আবাসিক এবং ছোট ও মাঝারি ধরনের হোটেল- রেস্তোরা, কিছু শিল্প এবং যানবাবহন চলাচলেও এলপি গ্যাসের ব্যবহার বাড়ছে। কিন্তু নিয়ন্ত্রণহীন দামের কারণে এলপি গ্যাস এখন গ্রাহকের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ দেশে এলপি গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে বিদ্যমান বিপুল ফারাক কমাতে সরকার ২ বছর আগেই এলপি গ্যাসের দেশীয় উৎপাদন ও আমদানি বাড়ানো পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি।
বর্তমানে দেশে এলপি গ্যাসের চাহিদার ৮০ শতাংশই বেসরকারি খাতের মাধ্যমে আমদানি হচ্ছে। ফলে এসব কোম্পানির সরবরাহ করা গ্যাসের দাম বিশ্ববাজারনির্ভর হওয়াই স্বাভাবিক। এদেশে এলপি গ্যাসের কাঁচামালের সরবরাহকারী এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক এলপি গ্যাস উৎপাদন ও রফতানিকারকদের সংগঠন সৌদি অ্যারামকো। গত জানুয়ারি মাসে সংগঠনটি এলপি গ্যাসের দুটি উপাদান প্রোপেন ও বিউটনের দাম নির্ধারণ করেছিল টনপ্রতি যথাক্রমে ৮৫০ ও ৯১০ ডলার। কিন্তু পরের মাসেই তা বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ১০ ডলার ও ১ হাজার ৪০ ডলারে। মার্চ মাসে এ দাম আরো বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ২৩০ ও ১ হাজার ১৮০ ডলার। তবে এপ্রিল মাস থেকে এলপি গ্যাসের কাঁচামালের দাম নিম্নমুখী হয়ে জুলাই পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। আগস্ট থেকেই আবার দাম বাড়তে শুরু করেছে। এর ধারাবাহিকতায় দেশেও এলপি গ্যাসের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এক্ষেত্রে গ্রাহকদের অভিযোগ, বিশ্ববাজারে দাম বাড়লে হিসাব করে কাঁটায় কাঁটায় দাম বাড়ানো হয়। অথচ বিশ্ববাজারে দাম কমলে দেশের বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়ে না। এটি ভোক্তা অধিকারের ক্ষেত্রে খুবই দুঃখজনক।
এলপি গ্যাস বিতরণের জন্য পদ্মা, মেঘনা, যমুনা কোম্পানির আড়াই হাজার ডিলার রয়েছে। এরা জেলা পর্যায়ে সেনা ও সরকারি কর্মকর্তা এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সামান্য কিছু এলপিজি দিয়ে বাকিটা খোলাবাজারে বিক্রি করে। খোলাবাজারে বিক্রির ক্ষেত্রে সরকারি এলপিজির বোতল থেকে ডিলাররা ঘষে নাম ঠিকানা তুলে ফেলে। এরপর বেসরকারি এলপিজি হিসেবে তা গ্রাহক সরবরাহ করে। এতে সাধারণ গ্রাহকরা কখনো সরকার নির্ধারিত দামে এলপিজি পায় না। জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, ২০০৯ সালের ১৫ মার্চ সরকারি এলপিজির দাম কমিয়ে এক হাজার টাকা থেকে প্রতি বোতল ৮৫০ টাকা করা হয়। একই বছর ২৮ জুলাই প্রতি বোতলের দাম কমিয়ে ৭০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু দাম কমানোর কোন সুফল পায়নি সাধারণ ভোক্তারা। বাজারে বেসরকারি এলপিজির দামেই বিক্রি হচ্ছে সরকারি এলপিজি। এক্ষেত্রে বেসরকারি এলপিজির মতো প্রতি বোতল সরকারি এলপিজি এক হাজার চারশ’ টাকা থেকে এক হাজার পাঁচশ পঞ্চাশ’ টাকায় বিক্রি করা হয়। কখনো কখনো এই দাম আরো বাড়ছে।
অন্যদিকে আবাসিকে এখন নতুন গ্যাস সংযোগ দেয়া বন্ধ রয়েছে। এতে নতুন বাড়ি ও ফ্ল্যাটে এলপিজিই একমাত্র ভরসা। সরকার গ্যাস সংযোগ বন্ধ করার পর থেকেই এলপি গ্যাসের ওপর কর মওকুফসহ নানা সুবিধার কথা বললেও বাস্তবে তার কিছুই হচ্ছে না।
দেশে বর্তমানে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ হাজার মেট্রিক টন এলপি গ্যাস ব্যবহার হচ্ছে। সরকারিভাবে বর্তমানে ২০ থেকে ২২ হাজার মেট্রিক টন এলপি গ্যাস উৎপাদন করা হয়। বেসরকারিভাবে প্রতি বছর ৫০ থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন এলপি গ্যাস বাজারজাত করা হয়।
সরকারের কর্তাব্যক্তিরা প্রায় সময়ই বলে থাকেন, এলপি গ্যাস সহজলভ্য করা হবে, দাম সুলভ করা হবে। কিন্তু তার কিছুই হচ্ছে না। রাজধানীসহ সারা দেশে বছরে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টন এলপি গ্যাসের চাহিদা থাকলেও বর্তমানে সরবরাহ করা হচ্ছে মাত্র ৮০ হাজার টন। অর্থাৎ ঘাটতি প্রায় ৪০ হাজার টন। অন্যদিকে ডিলারদের কারসাজি, সরকারি পর্যবেক্ষণের অভাবসহ নানা কারণে এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম বেড়েই চলেছে। বাজারে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণই নেই। সরবরাহের ঘাটতির কারণে অনেক জায়গায় বেশি দাম দিয়েও গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। সরকার বলছে, খুব শিগগিরই বাসা-বাড়িতে গ্যাস সংযোগ চালু করা হচ্ছে না। অথচ এর কোনো বিকল্প সংস্থানও করা হচ্ছে না। সরকার বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগ দিতে পারছে না। লোকজন তুলনামূলক বেশি দামের এলপি গ্যাস দিয়ে চাহিদা মেটাতে চাইছেন। সেটাও যদি দুর্মূল্য হয়, তাহলে মানুষ যাবে কোথায়? এলপি গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানো ও দাম নিয়ন্ত্রণে আর আশ্বাসবাণী নয়, কার্যকর উদ্যোগ দেখতে চান তারা। গ্যাসের অপর্যাপ্ততার কথা বলে গৃহস্থালিতে বৈধ গ্যাস সংযোগ বন্ধ রাখা হলেও পত্রপত্রিকা বলছে, অবৈধ সংযোগ চলছেই। আর গৃহস্থলিতে গ্যাসের যে চাহিদা, বাণিজ্যিক খাতে অপচয়-চুরিই তার চেয়ে বেশি হয়, সংশ্লিষ্টরাই বলেন। কাজেই গৃহস্থালিতে গ্যাস সংযোগ দেয়া শুরু করার বিষয়টিও ভাবা উচিত।
বর্তমানে সারা দেশে বছরে ৮০ হাজার টন এলপি গ্যাস জোগান দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে দেশে উৎপাদিত ২০ হাজার টন সরকারিভাবে ডিলারদের মাধ্যমে সরবরাহ করা হচ্ছে। অবশিষ্ট ৬০ হাজার টনই প্রাইভেট কোম্পানিগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করে বাজারজাত করছে। সরকারিভাবে উৎপাদিত ১২ কেজির একটি সিলিন্ডারের সরকার-নির্ধারিত সর্বোচ্চ মূল্য ৭০০ টাকা। অপরদিকে বেসরকারিভাবে আমদানি করা সমপরিমাণ ওজনের একটি সিলিন্ডারের আমদানি খরচ প্রায় ১ হাজার ১০০ টাকা। বাজারে সেটি গ্রাহকদের কিনতে হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ টাকায়। আর সরকারিভাবে ৭০০ টাকায় যেসব সিলিন্ডার বিক্রির কথা তার অধিকাংশই সাধারণ জনগণের হাতে পৌঁছে না। ডিলারদের কাছে কিছু গেলেও তা তারা আমদানি করা গ্যাস সিলিন্ডারের সঙ্গে একই দামে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ জোরালো। অর্থাৎ কিছু সৌভাগ্যŸান গ্রাহক ছাড়া সিংহভাগ গ্রাহকদের ন্যূনতম ১ হাজার ৫০০ টাকা করে প্রতি সিলিন্ডার গ্যাস কিনতে হচ্ছে। একেবারে ছোট পারিবারেরও একটি সিলিন্ডারে দিয়ে মাসের রান্নাবান্না চালানো কষ্টকর হয়। অন্যদিকে যারা লাইনের গ্যাস ব্যবহার করছেন তারা ইচ্ছামতো গ্যাস ব্যবহার করছেন এর প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ খরচে। বিশাল এক বৈষম্যের শিকার এলপি গ্যাস ব্যবহারকারীরা। বেশ কয়েক বছর ধরেই সরকার থেকে বলা হচ্ছে এলপি গ্যাসের ব্যবহার উৎসাহিত করার কথা। কিন্তু এই বৈষম্য বজায় রেখে কি এলপি গ্যাসের ব্যবহার উৎসাহিত করা সম্ভব?


২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের সংগ্রামী জনতার স্লুইস গেট আক্রমণ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২১


(ছবির লাল দাগ দেয়া জায়গাটিতে গর্ত করা হয়েছিল)

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

২৩শে এপ্রিল পাক সেনারা ফুলছড়ি থানা দখল করে। পাক সেনা এলাকায় প্রবেশ করায় মানুষের মধ্যে ভীতিভাব চলে আসে। কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×