পরকীয়া
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
১০ মিনিট হল দাড়িয়ে আছি, রিকশার জন্য। এর মধ্যে কয়েকটি রিকশা এলেও কেউ ওদিকটায় যেতে রাজি হচ্ছে না। অধিকাংশ রিকশাওয়ালা না বলতেও যেন কষ্ট পায়। ভাবসাব এমন যেন অনেক কামিয়েছি ভাই আর প্রয়োজন নেই। এবার না ডাকতেই একটি রিকশা সামনে এসে হাজির। আমার নাম ধরে ডাকল, ....ভাই কই যাইবেন ? আমি প্রশ্ন করলাম কে তুমি ? উত্তরে বলল , আমি নূরু । আমি উচ্ছাসিত হলাম। হালিম মামার ছেলে নূরু।
রিকশায় চেপে বসতেই উচ্ছাস আর আমার মধ্যে থাকল না। আমি চলে গেলাম ২৫ বছর আগে।
হালিম মামা ও মামীর বিয়ের অনেক বছর হলেও তাদের কোন সন্তান হয়নি। এ জন্য কত পীর, মাজার আর কবিরাজের কাছে গেছে তারা। মামা ও মামীর অনেক আরাধনার পর এই নূরুর জন্ম হয়। আমার খেয়াল আছে, তখন খূব আনন্দ করেছিল মামা-মামী। আমার মায়ের জেঠাত ভাই হালিম মামা একটি জুট মিলের স্থায়ী শ্রমিক ছিল। সপ্তাহে একেবারে খারাপ রোজগার ছিল না তার। যা পেত তা দিয়ে বেশ সুখেই দিন কাটছিল। নূরুর পর এক মেয়ে হয় তাদের। দুই সন্তান নিয়ে যখন সুখে দিন কাটাচ্ছিল তখন এক ঝড় এসে তছনছ করে দেয় সব।
লোকটির নাম বাদল। হালিম মামার দূর সম্পর্কের আত্মীয়। একই মিলে কাজ করে। মামার ভাড়া বাসায় আসা যাওয়া ছিল অবাধ। হালিম মামা একটু সরল প্রকৃতির লোক। এই সুযোগে মামীকে পটিয়ে ফেলে ওই বদমাশটি। হয়ত গ্রাম্য মামী অতসত প্যাচ বুঝতে পারেনি। সম্পর্ক নিয়ে এক কান দুই কান হয়ে পাড়া শুদ্ধ লোক জেনে যায়। হালিম মামা সিদ্ধান্ত নেয় মামীকে তালাক দেবার। ভেঙ্গে যায় সুখের সংসার। মামী মেয়েটিকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যায়। মামা কিছু দিন পর বিয়ে করে নতুন মামী আনে। সেই ঘরেও সন্তান আসে। নূরু যখন সবে মাত্র বুঝতে শিখেছে তখন মারা যায় মামা।
সেই নূরু এখন রিকশা চালক। রিকশা চলতে চলতে শূনলাম নূরু বিয়ে করেছে। ওর বোনটা বড় হয়েছে ঢাকায় মানুষের বাড়িতে কাজ করে। ওর মা মানে মামী'র অন্যত্র বিয়ে হয়েছে।
মামীর পরকীয়ার জন্যই আজ নূরু রিকশা চালক। নয়তো হিসেব অন্যরকম হতে পারত।
১৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
কাঁচা আম পাড়ার অভিযান
গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমরা কেন এমন হলাম না!
জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন
অভিমানের দেয়াল
অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি
২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১
তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন