somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চাল্লু পাপা এবং চাল্লু প্রথম আলো

০৩ রা অক্টোবর, ২০১২ রাত ৮:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

Happy শব্দটার সাথে আমার মেয়ের পরিচয় এক বছর বয়স থেকে। Happy শব্দটা শুনে happy হয়ে উঠার পিছনে আমার ধারনা তার প্রথম জন্মদিনের আনন্দময় স্মৃতি একটা বড় ভূমিকা পালন করে। যদিও আমরা অনেকেই মনে করি ছোট মানুষ, কতটুকুই বা বুঝে, কতটুকুই বা মনে রাখে কিন্ত রহস্যময় মানব মস্তিস্ক তার শৈশবের অনেক স্মৃতিই ধারন করে এবং ছোটবেলার এই ছোট খাট আনন্দ গুলো শিশুদের মানসিক বিকাশে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করি। তাই ছোটবেলা থেকেই মেয়েকে নিয়ে বিশেষ বিশেষ দিন গুলো পালন করার চেস্টা করি। নাহ, এর মধ্যে মেয়েকে হিমুর বাবার মত মহামানবী রুপে গড়ে তোলার কোন দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নেই। এটা হচ্ছে আমাদের এই মহাব্যস্ত নগর জীবনে কাছের মানুষগুলোর কাছাকাছি থাকার একটা ছোট উপলক্ষ মাত্র। আর এসব দিবসের মর্ম উপলব্ধি করে আমার ফেসবুক, ইন্টারনেট জমানার মেয়ের মধ্যে যদি দেশ সমাজ আর পরিবারের প্রতি প্রেম, ভালবাসা মমতা আর দায়িত্ববোধ জেগে উঠে তো ক্ষতি কি? সংশয়বাদীরা বলতে পারেন, আরে রাখেন মিয়া, নিশ্চয়ই এর মধ্যে কোন মতলব আছে। নইলে কি আর আজকাল এসব করার সময় আছে। বলব মতলব ঠিক নেই। তবে একটা ভয় অবশ্যই কাজ করে। আজকাল শিশুদের যে পরিবেশ আমরা দিচ্ছি বা দিতে বাধ্য হচ্ছি আজ থেকে তিন চার যুগ পরে আমাদের ছেলে মেয়েরা যে আমাদের বোঝা মনে করবে না কে বলতে পারে? বিশেষ করে western culture এর লেজ ধরে Old home, Nuclear family যে ঢুকে পরবে না তারই বা গ্যারান্টি কি? যাই হোক মূল প্রসঙ্গ থেকে দুরে সরে যাচ্ছি। আর এসব নিয়ে আলাপ করার জন্য তো অন্য পন্ডিতরা আছেনই। আমি বরং আপাতত আমার সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামাই।


তো বলছিলাম আমার মেয়েকে নিয়ে বিভিন্ন দিবস উদ্‌যাপন এবং আমার মেয়ের Happy হয়ে উঠার কাহিনী। বাঙ্গালীর নাকি বার মাসে তের পর্বণ। তাই উদ্‌যাপন উপলক্ষ খুজে পেতে মোটেই বেগ পেতে হয়নি। বিভিন্ন জাতীয় ও ধর্মীয় দিবস তো আছেই, তার সাথে বিশ্বায়নের কল্যাণে Archies and Hallmark এর ব্যবসা রমরমা করার জন্য Fathers day, Mothers day, Friendship day, Valentines day ও ঢুকে গিয়েছিল আমাদের উদ্‌যাপন লিস্টে। বারবার উদ্‌যাপন কথাটা লিখতে লিখতে আমি নিজেও একটু দিধান্বিত হয়ে যাচ্ছি। কারন উদ্‌যাপন বলতে আসলে যা বোঝায় তা কিন্ত করা হয়না সবসময়। সব দিবসতো আমাদের জীবনে অতোটা গুরুত্বপূর্ণ ও না। তবে ইদানিং খুজে খুজে উদ্‌যাপন করার মতো সব দিবস পালন করে যাচ্ছি। ব্যাপারটা তাহলে একটু খুলেই বলি।

লেখাটা শুরু করেছিলাম আমার মেয়েকে নিয়ে। এখন পর্যন্ত আমাদের ভালবাসার একমাত্র নিদর্শন এই ছোট্ট পুতুলটার প্রতি আমাদের ভালবাসা বাংলা সিনেমার সেই জনপ্রিয় গান আমি একদিন তোমায় না দেখিলে টাইপেরই। সেই ভালবাসায় প্রথম প্রথম কোন বিপত্তি ছিলনা, কিন্ত বিপত্তি বাধল যখন আমাদের মেয়ে ধীরে ধীরে আনন্দ, উচ্ছাস, ভালবাসা প্রকাশ করার মতো বুদ্ধিমতী হয়ে উঠতে থাকল। তার প্রকাশ ভঙ্গি যতই প্রকট হতে থাকল আমার আর আমার স্ত্রীর মধ্যে ভালবাসার patent ship নিয়ে
স্নায়ু যুদ্ধ ততই তীব্র হতে থাকল। এই যুদ্ধের মূলে ছিল আপাত নিরীহ দর্শন দুটি প্রশ্ন -

১। মেয়ে কাকে বেশি ভালবাসে - বাবাকে না মা কে?


২ মেয়েকে কে বেশি ভালবাসে - বাবা না মা?



প্রথম প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছিলাম খুব তাড়াতাড়িই। British রা শিখিয়ে গিয়েছিল Divide and Rule. কিন্ত আমার পিচ্চিটা কিভাবে যেন টের পেয়ে গিয়েছিল যে ভালবাসার সূত্রটা হলো Don't Divide but Rule. তাই যখনই তাকে প্রশ্ন করা হয় তুমি কাকে বেশি ভালবাস, তার উত্তর,

তোমাকে, আম্মুকে, সবাইকে।

তার মায়ের প্রশ্নেও তার একই উত্তর -

তোমাকে, পাপাকে, সবাইকে।


মজার ব্যাপার হলো যেকোনো একজনের অনুপস্হিতিতেও তার উত্তরের কোন তারতম্য হতো না। কিন্ত আমরা কি আর এই পিচ্চির চালাকিতে এতো সহজে মানি। তাই probing চলতেই থাকে, বেশি কাকে, পাপাকে না আম্মুকে? কিন্ত আমার মেয়ের মীনা কার্টুনের মিঠুর মতো একই বুলি -

তোমাকে, আম্মুকে, সবাইকে।

আমার আর আমার বউয়ের অক্লান্ত পরিশ্রম দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে আমার বাবা একদিন ঘোষণা করল, তোমরা খামখাই বাচ্চাটাকে কষ্ট দিচ্ছ। ওতো কম বেশি কি জিনিস তাই বোঝেনা। হক কথা। তাই এবার শুরু হলো মেয়েকে কম কি বেশি কি বোঝানোর নতুন experiment. বিভিন্ন লোভনীয় খাবার চোখের সামনে ঘুরানো আর খেতে চাইলেই প্রশ্ন, বেশি খাবে না কম খাবে, বেশি দিব না কম দিব?


এই পদ্ধতিতে যখনই সাফল্য ধরা দিবে বলে মনে হচ্ছিল তখনই নতুন টুইষ্ট। একদিন অফিস থেকে ফিরে দেখি তিড়িং বিড়িং করে সারা বাড়ি ঘুরে বেড়ানো আমার হাসের বাচ্চাটা মায়ের পাশে গুটিশুটি হয়ে শুয়ে আছে। কি ব্যাপার?

: পাপা, জানো, আমার না জ্বর।
: অল্প, না বেশি?
: অল্প

মা দেখি খিক খিক করে হেসে উঠল। মাথায় হাত দিয়ে দেখি উথাল পাথাল অবস্থা। মনটা খারাপ হয়ে গেল। এরকম পরিস্হিতিতে এমন একটা প্রশ্ন করার জন্য। বাচ্চাটা এভাবে কষ্ট পাচ্ছে ভেবে চোখটা যখন জ্বালাপোড়া শুরু হল তখন ওর মা জানালো ভাইরাল ফিভার, ওষুধ খাওয়ানো হয়েছে, ভয়ের কিছু নাই এবং আরো দাবি করল যে আমার চোখের পানি নাকি মেয়ের জ্বর আসার দুঃখে না, এতো কষ্টের পর ও মেয়ে অল্প বেশি না বুঝতে পারার দু:খে। নির্মম রসিকতা। কিন্ত অপমানটা হজম করে গেলাম। জিতুক না হয় দুয়েক বার। এমনিতেই আমার কাছে হারতে হারতে বেচারার অবস্হা খারাপ। মাঝে মাঝে না জিতলে আবার খেলার উৎসাহ না হারিয়ে ফেলে।


সেদিন থেকে আমাদের বেশি অল্প বোঝানোর experiment এ সাময়িক বিরতি। গতমাসে আমার মেয়ের চার বছর পূর্ণ হলো। এখন সে বেশি অল্পের পার্থক্যটা ভালই বুঝে। কিন্ত একটা জিনিস এখনও অপরিবর্তনীয়। তার সেই চিরাচরিত উত্তর,

তোমাকে, আম্মুকে, সবাইকে।



এবার আসি দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরে -

মেয়েকে কে বেশি ভালবাসে? আমি না আমার স্ত্রী?


ছোটবেলায় এস এস সি পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়েছিলাম ধর্মে। তার সবচেয়ে বড় কারন ছিল প্রতিটা প্রশ্নের উত্তরে আরবি হরফসহ কিছু কোরান হাদীস ঢুকিয়ে দেবার সক্ষমতা। ছোটবেলায় আইডিয়াল স্কুলের স্যারদের বেতের বাড়ি আর বোর্ড পরীক্ষায় না থাকা সত্তেও অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত উম্মি উম্মি রুহি রুহি টাইপের আরবী কবিতা শিখে সাচ্চা মুসলমান না হলেও আধা আরবে যে পরিণত হয়েছিলাম সেটি নিশ্চিত। স্যারদের বেতের বাড়ির সার্থকটা প্রমাণ করতেই কিনা বীজগণিত আর ক্যালকুলাসের সূত্র ভুলে গেলেও ছোটবেলার কিছু হাদীস কোরআন এখনো মনে আছে। ধর্মে বলা আছে ভাল কাজে একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করার জন্য। সেই মূলমন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরাও ঝাপিয়ে পড়লাম নিজেকে সবচেয়ে ভাল বাবা মা হিসাবে প্রমাণের প্রতিযোগিতায়। প্রতিযোগিতাটা খুবই সাধারণ। বিশেষ দিন গুলো মনে রেখে সবার আগে wish করা আর চমকপ্রদ কিছু গিফট (not necessarily expensive) দিয়ে মেয়ে কে মুগ্দ্ধ করে দেয়া।

ধর্মীয় এবং জাতীয় দিবস গুলোতে এক ধরণের সাম্য অবস্হা বিরাজ করছিল কারণ এগুলো তো আর ভুলার মতো বিষয় না যদিও গিফট সিলেকশন এর ক্ষেত্রে মেয়ে মানুষের চিকন বুদ্ধির কাছে বারবার মাত খাচ্ছিলাম। তাই এইভাবে সুবিধা না করতে পেরে আমি আমার পুরা মনযোগ অন্য দিবসগুলোতে ঢেলে দিতে লাগলাম যদিও আমার বউ এর অভিযোগ এর বেশির ভাগ ই Irrelevant. যেমন Mothers Day তে আমি আমার মেয়ে কে wish করলাম Happy Mothers Day এবং আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি। আমার বউ এর বক্তব্য এটা আমার মায়ের জন্য মেয়ের জন্য না এবং মেয়েকে বারবার বেঝানোর চেষ্টা করতে লাগল যে আমি চালাকি করতেসি। আমার মেয়ে তার মায়ের কুবুদ্ধিতে কিছুটা প্রভাবিত হয়ে যেই আমার দিকে অর্থপূর্ণ চাহনি হানল আমিও আমার emotional গুটি চেলে দিলাম, তুমিইতো আমার আম্মু হও, তাইনা মামণি। Happy Mothers Day

ব্যাস, আর যায় কই। নগদে score 1-0. আর রাগে গজ গজ করতে করতে আর আমাদের বাপ মেয়ের মুন্ডুপাত করতে করতে মায়ের প্রস্হান।


এভাবে Fathers day তে ও ছোট মানুষ ও আমাকে কি wish করবে তাই আমিই আগে করলাম , Friendship day তে আমার বউয়ের প্রবল আপত্তি সত্তেও আমি মেয়ের বেস্ট Friend সেজে তার আগে wish করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় ভালবাসার একচ্ছত্র প্রমাণ দিতে লাগলাম। এমনকি মে দিবসে যখন আমি আমার মেয়েকে Happy May Day বললাম আমার বউ পুরা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠল। তবে এবার জ্বলে উঠার কারণ হলো আমি মেয়েকে বলছিলাম দেখেছ, পাপা তোমাকে কত ভালবাসি, তাই wish করলাম, আর কেউ তো করল না। আকালমান্দ এর জন্য নাকি ইশারাই যথেস্ট আর এতো বড় clue কি আর বৃথা যায়। যথারীতি আমার বউ ও জন্টি রোডসের মতো কথা আর মাটিতে পড়তে দিলো না।


: কি, আমি wish করি নাই না? কি wish করব? মে দিবসে এরকম পুচকি একটা মেয়ে কে wish করার কি আছে?


এদিকে আমার মেয়েও বেরসিকের মতো প্রশ্ন করে বসল পাপা মে দিবস কি?


এবার বউ ও আমার দিকে খুব হাসিহাসি মুখ করে বলল, এবার মেয়েকে বোঝাও মে দিবস কি। সেও তোমার চালাকি একটু বুঝুক। কারণ আমার বউ এর দৃঢ় বিশ্বাস, মে দিবস না বুঝলেও এটা যে তার জন্য Happy হওয়ার মতো কোন বিষয় না এটা বোঝার মতো বুদ্ধি আমার মেয়ের মাথায় আছে। আর এই সুযোগে সে ও এটা প্রমাণ করবে যে, সে যে ভালবাসা প্রতিযোগিতায় বারবার পিছিয়ে পড়ছে এটা আমার একধরণের চালাকি। অবশ্য ইতিমধ্যে সে ঘোষণা দিয়েছে যে আমি যেই দিবস গুলা পালন করি সেটা ভালবাসা প্রমাণের ক্ষেত্রে Irrelevant. তাই তার ভাষায় এগুলো হচ্ছে জোর জবরদস্তি দিবস যেটা আমি কোন কারন ছাড়া জোর করে পালন করি। কিন্ত আমি কি আর আমার বাড়া ভাতে কাউকে ছাই দিতে দেই। তাই শুরু হলো আমার ব্যাখা -


: মে দিবস হলো মেয়েদের দিবস। এটা শুধু মেয়েরা পালন করে, যেমন তুমি মেয়ে, তোমার আম্মু মেয়ে..............।

বাকি ব্যাখা শোনার ধৈর্য্য আমার বউ এর হলো না এবং যথারীতি রাগে গজ গজ করতে করতে তার প্রস্হান।




বউ এর কাছে শুনলাম আমার মেয়ে নাকি মাঝে মাঝে মায়ের কাছে অভিযোগ করে যে মা তাকে ভালবাসে না এবং এর পিছে নাকি আমার জোর জবরদস্তি দিবস দায়ী। আর মাঝে মাঝে বাসার অন্যদের সাথে অভিমান হলে তার বক্তব্য তাকে কেউ ভালবাসে না পাপা ছাড়া। ওর মা তো তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে। ওহ, সারাদিন পালি আমি আর আদর করে পাপা। তোর পাপা তো করে চালাকি। তোর পাপা একটা চাল্লু পাপা। আমার মেয়ে কথার মানে না বুঝতে পারলেও এটা বুঝতে পারে যে পাপা কে সন্মানজনক কিছু বলা হচ্ছে না। তাই তার প্রতিবাদ -

: না, আমার পাপা চাল্লু পাপা না, আমার পাপা ভাল পাপা।




এভাবে আমাদের দিন কেটে যাচ্ছে। আমার মেয়েও মূল দিবস গুলার সাথে জোর জবরদস্তি দিবস বাড়তি এর গিফট পেয়ে মহা খুশি। যদিও
Happy Immunization Day তে লাল নীল ভিটামিন এ এবং কৃমির ওষুধ খেয়ে তাকে মোটেও Happy দেখাচ্ছিল না।




আজকে অফিসে হাতের কাজ শেষ করে অলস ভঙ্গিতে প্রথম আলোতে দেশের সর্বনাশের রোজনামচা পরতে পরতে লাফি্য়ে উঠলাম। আজ জাতীয় কন্যা শিশু দিবস। ওয়াও। আরেকটা সুযোগ। বাসায় ফিরেই মেয়েকে জড়িয়ে ধরলাম।


:শুভ কন্যা শিশু দিবস পাপা। Happy daughters day. পাপা তোমাকে অনেক ভালবাসি।

আমি ও তোমাকে অনেক ভালবাসি। আমার মেয়ের চোখ তখন আমার হাতে রাখা ক্যারাম্যাল আইসক্রীম এর দিকে। বাবা মেয়ের এই আইসক্রীম ভালবাসার মধ্যে আমার বউ এর অনুপ্রবেশ।


: আম্মু পাপা কি এনেছে দেখ। আজকে না Happy কি একটা যেন day


আমার বউ আমার দিকে তাকাতেই আমি মেয়ের দিকে ঘুরে বলা শুরু করলাম, দেখেছ, আম্মুতো ভুলেই গেছে, আমার কিন্ত ঠিকই মনে আছে।

: আজকে আবার কি দিবস শুনি?

: কি দিবস মানে। জীবনে তে ভাষা দিবস, বিজয় দিবস, নববর্ষ আর দুই চান্দের ঈদ ছাড়া কিছু শিখ নাই। আজকের দিনটাতো মনে রাখা উচিৎ ছিল।

: কেন? আজকে কি?

: আজকে কি মানে? আজকে জাতীয় কন্যা শিশু দিবস।

: ওটাতো ৩০ শে সেপ্টেম্বর। আরো দুই দিন আগে চলে গেছে।

: দুই দিন আগে চলে গেছে মানে? জাতীয় কন্যা শিশু দিবসতো আজকে।

: আজকে কে বলল তোমাকে?

: কে বলবে আবার। এটাতো সবাই জানে জাতীয় কন্যা শিশু ২রা অক্টোবার (বেশি ভাব নিতে গিয়ে প্রথম আলোর খবর টা আস্তে চেপে গেলাম)।

এদিকে আমার বউ মেয়ের দিকে তাকিয়ে শুরু করল, আম্মু আইসক্রীম খেওনা। আজকে কোন কন্যা শিশু দিবস না। তোমার পাপা একটা চাল্লু পাপা।

: চাল্লু পাপা মানে? আমার তো চান্দি গরম হয়ে গেল। এক লাফে পেপার হাতে নিয়ে বউ এর চোখের সামনে মেলে ধরলাম। মঙ্গলবার, ২রা অক্টোবার ১৯ পাতা, ২য় কলাম, স্পষ্ট লেখা জাতীয় কন্যা শিশু দিবস আজ। আমার বউ কিছুক্ষণ অবাক হয়ে বোঝার চেষ্টা করল এর মধ্যে আবার আমার কোন কারসাজি নাই তো। এবার সে ৩০ শে সেপ্টেম্বর এর ষ্টেডিয়াম এর ২ নং পাতা (সবার আগে শিশু বিভাগ) বের করল। একি? এখানে ও দেখি লেখা জাতীয় কন্যা শিশু দিবস আজ।



দুজন কিছুক্ষণ অবাক হয়ে বলাবলি করতে লাগলাম প্রথম আলো এতো বড় ভুলটা কিভাবে করল। এর মধ্যে আমার মেয়ে এসে তার মাকে বলল,


: দেখস, চাল্লু পাপা না, চাল্লু প্রথম আলো।




.
(বিঃদ্রঃ প্রিয় মুরুব্বিরা, এই লেখা টার সাথে আমার অনেকগুলো প্রথম জড়ানো। প্রথম আলোকে নিয়ে এই লেখাটা শুধু ব্লগ না আমার জীবনের প্রথম লেখা কারণ ছোট বয়সে কিছু ছড়া লেখা ছাড়া এই লাইনে কোনদিন হাটা হয়নি। তার মধ্যে বাংলা টাইপ ও জীবনে প্রথম করলাম। এটা লিখতে দুই কিস্তিতে মোট দশ ঘন্টা সময় লাগল। বানান ভুলগুলো মূলত অনভ্যস্ততা এবং সংযুক্ত অক্ষর টাইপ করার ব্যর্থতা থেকে তৈরি। ব্লগে ঢুকেছিলাম মাঝেমাঝে একটু কমেন্ট বিনোদনের জন্য। কিন্ত মডুদের মেহেরবাণীতে জেনারেল না হলে সেটাও বন্ধ। এতো কাহিনী জানলে একাউন্টই খুলতাম নাকি সন্দেহ কারণ পোষ্ট করে জেনারেল হবার মতো এতো সময় আর এভাবে বাংলা টাইপের ধৈর্য্য আমার নাই। তাই গালিগালাজ করে উৎসাহটাও নষ্ট করে দেবার আহবান রইল।

প্রথম আলোর ২রা অক্টোবার এর লিংক এটা

View this link

ষ্টেডিয়াম এর লিংকটা বের করার অনেক চেষ্টা করলাম। নিউজটা ষ্টেডিয়াম এর ভেতরের পাতায় (সবার আগে শিশু বিভাগ) আছে। কিন্ত ওদের শয়তানীর সাথে কি আর আমি পারি। তাই অনেক চেষ্টা করেও নিউজটা খুজে পেলাম না।

আমার প্রশ্ন হলো একটা জাতীয় দিবস দুই দিনের ব্যবধানে কিভাবে হতে পারে? তবে আমার বউ এর বক্তব্য হচ্ছে জাতীয় কন্যা শিশু দিবস দেখে ভুলটা হয়ে গেছে। তবে এই কন্যারা যখন বড় হয়ে Lux Channel I সুন্দরী প্রতিযোগিতায় কোমড় দুলিয়ে হাটবে তখন তাদের গ্র্যান্ড ফিনালের ডেটটা কিন্ত একদম ভুল হবে না )









সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ৩:২৮
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই হোটেল এর নাম বাংলা রেস্তেরা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭



অনেক দিন পর আমি আজ এই হোটেলে নাস্তা করেছি। খুব তৃপ্তি করে নাস্তা করেছি। এই হোটেল এর নাম বাংলা রেস্তেরা। ঠিকনা: ভবেরচর বাসস্ট্যান্ডম ভবেরচর, গজারিয়া, মন্সীগঞ্জ। দুইটি তুন্দুল রুটি আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

জলদস্যুরা কি ফেরেশতা যে ফিরে এসে তাদের এত গুণগান গাওয়া হচ্ছে?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭


জলদস্যুরা নামাজি, তাই তারা মুক্তিপণের টাকা ফেরত দিয়েছে? শিরোনাম দেখে এমনটা মনে হতেই পারে। কিন্তু আসল খবর যে সেটা না, তা ভেতরেই লেখা আছে; যার লিংক নিচে দেওয়া হলো।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×