somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

“শমসের স্যার জিন্দাবাদ ছাত্র সমাজ মুরদাবাদ”

০২ রা অক্টোবর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্যাঙ কি শমসের স্যারের বংশধর নাকি?
হইবার পারে শমসেরের সর্দি কেন, কোন ধরনের চুলকানির অসুখও কখনও হইলোনা কোনদিন।
একটা দিন ও হালা ক্লাস মিস দেয়না।
“ব্যাঙটার ওজন ৫ সের
নাম তার শমসের
জোরছে বল শমসের।
আরও জোরে………..
শমসের
শমসের স্যার ক্লাস শুরু হওয়ার আগে তাকে নিয়ে ক্লাস রুমে তুমুল হইহুল্লুর চলে।
তিনি গণিত পড়ান স্কুলে।বয়স তার ৬০ এর কাছাকাছি।হাতে সবসময় একটা বেত নিয়ে ঘুরেন।নিজের পায়ে আস্তে আস্তে মারতে মারতে বেত নিয়ে হাটেন।যেদিন ছাত্রদের মারতে মন চায় সেদিন তিনি সামান্য অজুহাতে মার দিবেনই।আর পরীক্ষার খাতায় তিনি নাম্বার দেন উত্তর মিলছে কিনা তা দেখে।এত বড় বড় অংক দেখার সময় তার নেই।ছাত্রদের কাছে তিনি এক আতঙ্কের নাম।
ঐ ঐ স্যার আসতেছে......
শমসের স্যার আজ পরীক্ষার খাতা দিবেন।
অমিত কে ডাক দিয়ে সামনে নিলেন।
কিরে ৪ পৃস্টা খরচ করে কেউ এই অংকটা করতে পারেনাই আর তুই এক লাইন এই শেষ করে দিলি?
তুই কি আমার লগে মশকরা করছ?খালি উত্তর লেখছছ কেন?
স্যার আপনি এত কষ্ট করে এত বড় অংক দেখবেন না তাই উত্তর লেইখা দিয়া দিছি।আমি মনে মনে অংক কইরা নিছিলাম।
ওরে আইছে মনের মানুষ।ঐ অদৃশ্য চেয়ার এ যা।তারপর তরে পিডা দিমু।
অদৃশ্য চেয়ার হল স্যারের একটা আনকমন শাস্তি।চেয়ার ছাড়া বসে থাকতে হবে ২ হাত সামনে দিয়ে।
পিছনের চেয়ারে স্যারের চোখ যেতেই দেখে এক ছেলে সানগ্লাস পড়ে আছে।
দৌড়ে তার কাছে গেলো।
ঐ তুই কোন এলাকার আজম খান রে?
বলেই কয়েকটা বারি দিয়ে দিলো।
স্যার স্যার।আমার চোখ উঠছে।
ঐ ঐ আমার দিকে তাকাবিনা।
বেঞ্চটা উল্টা করে পিছনের দিকে তাকিয়ে বসে থাক।ভুলেও আমার দিকে তাকাবিনা।
যার চোখ উঠে আর সর্দি লাগে তাকে স্যার দেখতেই পারেনা।পরীক্ষার হলে এই ধরনের রোগী দেখলে স্যার তার পাশেও যেতো না।তাই ইচ্ছা করেই অনেকে রুমাল আর সানগ্লাস ব্যবহার করতো নকল করার জন্য।
শমসের স্যার খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে হোস্টেলের ছাত্রদের সাথে পিটি করে থাকেন।
হোস্টেলের সব রুমে গিয়ে সবাইকে ঘুম থেকে তুলেন বেত দিয়ে মাইর দিয়ে।
সবাই লুকিং গ্লাস লাগায় গাড়িতে কিন্তু হোস্টেলের জানালায় ও লুকিং গ্লাস লাগাতে হয়েছে শমসেরের হাত থেকে বাচার জন্য।কেউ যদি লুকিং গ্লাসে দেখতে পারে স্যার আসছে তাহলে অন্তত মাইর খাওয়ার হাত থেকে বেচে যাওয়া যায়।
একদিন হোস্টেলের শ্যামল ঘুম থেকে উঠেই না।স্যার তার উপর তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু তবু বলে স্যার উঠতাম না।
মাইরেন না স্যার।
কি কইলি তুই?
তারপর আরও জোরে তার তাণ্ডব অব্যহত থাকে।
শ্যামল না পেরে আন্ডারওয়ার পরা অবস্থাতেই দৌড় দেয়।
সেদিন স্যার ও হাসছিল।
আরে শেমইল্লা তুই আগে কইবিনা তোর শরীরে কাপড় নাই?
নাকে বই চেপে ধরে তিনি ক্লাস করিয়ে যান সব সময়।
চকের উচ্ছিষ্ট কখনই তিনি সহ্য করতে পারেন না।
ফকির যদি তার কাছে ভিক্ষা চায় তার একটাই উত্তর “আমি টাকা পাবো কই আপনারে ২ টা অংক করাইয়া দিতে পারবো”।
ফকিরও সয়তান গালি দিতে দিতে তার থেকে চলে যায়।
বৃহস্পতিবার আসলেই ক্লাসে গান কবিতা আর বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড করতে হয়।
শমসের স্যার এর ক্লাসে মান্নাদের গান ছাড়া অন্য কেউ কিছু গাইলে তার পশচাদ্দেশে স্যারের বেত্রাঘাত পরবেই।
কি কইলি তুই?
“তু চিজ বারি হে মাস্ত মাস্ত” মান্না দের গান?
হারামজাদা কোথাকার।
স্কুলের পুরাতন ছাত্ররা যখন স্কুলে আসে স্যারের সাথে খুব হেসে খেলে কথা বলে ব্যাপারটা কোন ভাবেই বুঝেনা বর্তমান ছাত্ররা।
এই শমসেরে সাথে মিষ্টি মুখে কথা বলার কি আছে।আমরা তো স্কুল থেকে বের হলেই মাইর দিতে চাইবো এই ৫ সের ব্যাঙ শমসের কে।
একদিন হটাত স্যারের স্কুলে আসা বন্ধ।
সবাই খুব খুশি।
কিন্তু কয়েকদিন পর জানতে পারলো স্যার খুব অসুস্থ।
আগের মত চলাফেরা করতে পারেনা।
সকালে ঘুম থেকে উঠে হোস্টেলে আসেনা সবার ঘুম ভাঙ্গাতে।এখন সবাই আগে ঘুম থেকে উঠে বসে থাকে তবু স্যার আসেনা।
ক্লাস রুমে আগের মত মজা হয়না কারণ স্যার এখন আর স্কুলে আসেনা।
তখন সবাই বুঝতে পারে কেন পুরাতন ছাত্ররা স্যারকে এতটা ভালোবাসে।
স্যার এত খারাপ হলেও স্যারের কথা খুব মনে পড়ে সবার।স্যারের বেত্রাঘাত আজ স্যার এর কাছ থেকে চেয়েও পাওয়া যায়না।

তানভীর মাহমুদুল হাসান
২/১০/২০১২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×