somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সৃষ্টির যত কথা (পর্ব-০১)

০২ রা অক্টোবর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিজ্ঞানভিত্তিক প্রথম লেখা এটা আমার।অনেকদিন ধরেই ভা্বছিলাম কিছু একটা লিখব।কিন্তু বিষয় নির্বাচন আর লিখার অলসতার কারণে হয়ে উঠেনি।এইবার ভাবলাম আর কত?দেই লেখা শুরু করে।দিলাম।
বিশাল এই মহাবিশ্বের ছোট এই পৃথিবীর বাসিন্দা আমরা।এখন পর্যন্ত মহাবিশ্বের সবচেয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক প্রাণী আমারই।প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগে সৃষ্টি আমাদের এই নিবাসের।আর মা্নুষ সর্বদা তার এই শেকড়ের সন্ধান করেছে চলেছে।কিভাবে সৃষ্টি হল এই পৃথিবী নামের গ্রহটির?যুগে যুগে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বেরিয়ে নানান সময়ে তৈরি হয়েছে নানান মতবাদ।পুরাতন একটি মতবাদের উপর ভিত্তি করে কিংবা বাতিল করে তৈরি করা হয়েছে নতুন মতবাদ।তারপরেও সন্তুষ্ট হয়নি মানুষ।আবার এসেছে নতুন মতবাদ।এখনও এসব নিয়ে চলছে বিতর্ক।আমি আমার এই লেখায় দুই পর্বের মাধ্যমে আমাদের এই পৃথিবী সৃষ্টির ব্যাপারে কিছু জনপ্রিয় এবং গ্রহণযোগ্য মতবাদ নিয়ে বলার চেষ্টা করব।
জেমস জিন্সের মতবাদ বা জোয়ার মতবাদঃ
নানান সময়ে পৃথিবী সৃষ্টির পিছনে নানান মতবাদ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও একটি ব্যাপারে কিন্তু বিজ্ঞানীরা একমত যে,পৃথিবী সৃষ্টির পিছনে রয়েছে সূর্যের একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।আর তাই আধুনিক বলি বা আদিই বলি সকল মতবাদই কিন্তু ঐ সূর্যের উপর ভিত্তি করেই।যেমন এই জেমস জিন্সের মতবাদটি।বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী জেমস জিন্স ১৯১৭ সালে এই মতবাদটি উপস্থাপন করেন।এটি অনেকটা এইরকম...............
আমাদের বিশাল এই মহাবিশ্বে রয়েছে গ্রহ,নক্ষত্র,ছায়াপথের মত আরও নানান মহাজাগতিক বস্তু।এখানে নক্ষত্রসহ অন্যান্য বস্তুর অবস্থান পরিবর্তনের ঘটনা মোটেও অস্বাভাবিক নয়।এই মতবাদ অনুসারে ধারণা করা হয় যে এক সময় চলতে চলতে বিশাল এক নক্ষত্র সূর্যের সামনে এসে পড়েছিল।আর নক্ষত্রটির আকার সূর্যের চেয়ে বড় হওয়ায় তার আকর্ষণী ক্ষমতাও ছিল সূর্যের চেয়ে বেশি।আবার সূর্যের ভিতরেও কিন্তু চলছে এক ধরণের আকর্ষণী ক্ষমতা যা কিনা সূর্যের ভিতরকার বস্তুগুলোকে ধরে রাখার জন্য যথেষ্ট।আমরা জানি সূর্যের ভিতরে প্রতিনিয়তই চলছে বিস্ফোরণ যার ফলে সূর্যপৃষ্ঠে সৃষ্টি হয় জোয়ারের মত একটা পরিবেশ।সেই বিশাল নক্ষত্রের ফলে এই জোয়ারের মাত্রা যায় আরও বেড়ে।যদিও সূর্যের নিজস্ব আকর্ষণী ক্ষমতার কারণে ভিতরকার বস্তু সৌরপৃষ্ঠ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে না।কিন্তু সেই দানবাকৃতির সেই নক্ষত্রের কারণে সৌরপৃষ্ঠ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বেশ খানিকটা অংশ।কি ভয়ানক কথা।তবে এতো ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সূর্য থেকে কিছুটা অংশ বিচ্ছিন্ন করলেও নক্ষত্রটি কিন্তু তা সাথে করে নিয়ে যেতে পারেনি। এর কারণটা একটু ব্যাখ্যা করা যাক।যেহেতু নক্ষত্রটি ক্রমান্বয়ে সূর্যের নিকটতর হয়েছিল তাই তার আকর্ষণী ক্ষমতাও বেড়ে গিয়েছিল এবং উভয়ের আনুপাতিক গতিবেগও বেড়েছিল।সৌরপৃষ্ঠ থেকে বিচ্ছিন্ন হবার সময় কিন্তু বিচ্ছিন্ন অংশটির উপর দ্বিমুখী বল কাজ করছিল।একটি ছিল সেই আগন্তুক নক্ষত্রটির টান এবং অপরটি সূর্যের নিজস্ব টান।এইসব ক্রিয়ার ফলে সেই বিচ্ছিন্ন অংশটির অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না।তার আকার হয়ে গিয়েছিল অনেকটা মাকুর মত অর্থাৎ মাথা ও লেজের অংশ চিকন এবং মধ্যে মোটা।তো, সেই বিচ্ছিন্ন অংশটি সূর্যের টান ছেড়ে নক্ষত্রের দিকে আগালেও নক্ষত্রটি কিন্তু রাগ করে আপন গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে।ফলে নক্ষত্রের গতির সাথে তাল মেলানো সম্ভব হয়নি সেই বিচ্ছিন্ন অংশটির।কিন্তু বিচ্ছিন্ন আর আকারে ছোটো হলে কি হবে সেই বা কম যায় কিসে?তাই নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্য সে ইতোমধ্যেই অর্জন করে নিজস্ব একটা গতিবেগ।এদিকে নক্ষত্রটি বেশ দূরে সরে গেলেও তার আদিনিবাস সূর্য কিন্তু বেশি দূরে যেতে না পারার কারণে তার আকর্ষনও অগ্রাহ্য করতে পারেনি।কিন্তু এর মাঝে যে সূর্য ব্যাটারও মাথা খারাপ।সে আর আগের মত কাছে টেনে নেয় না সেই অংশটিকে।আবার দূরেও ঠেলে দিতে পারে না। তাই সূর্য তার চারপাশে ঘোরার অনুমতি দেয় সেই বিচ্ছিন্ন অংশটিকে।সূর্যের প্রচন্ড তাপে সেই বিচ্ছিন্ন অংশটির পুরোটাই ছিল প্রথমে গ্যাসীয় আর আকার ছিল সেই মাকুর মত।পরবর্তীতে ধীরে ধীরে প্রান্তের চিকন অংশ ঠান্ডা হয়ে আসে এবং তরলে পরিণত হতে থাকে।যেহেতু তরল আর গ্যাসীয় অবস্থা দুটি একসাথে থাকতে পারেনি তাই দুই প্রান্তের তরল অংশদুটি আলাদা হয়ে যায়।অবশ্য তরল হলেও এদের তাপমাত্রা ছিল প্রচন্ড।একই প্রক্রিয়ায় বিচ্ছিন্ন বাকি অংশগুলোও তাপ বিকিরণের মাধ্যমে খন্ডে খন্ডে ভাগ হতে থাকে।আর এই খন্ডগুলোর একটিই হল এক একটি গ্রহ।যাদের একজন আমাদের এই পৃথিবী।আবার গ্রহগুলোর ভিতরেও সূর্যের আকর্ষণে সৃষ্ট জোয়ারের কারণে বেশ কিছু অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে উপগ্রহের সৃষ্টি হয়।ঠিক এমনি ভাবেই সৃষ্টি হয় পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদ।
(চলবে...)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×