somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ত্রিদেশীয় ভ্রমন - আমার পর্যবেক্ষণ ঃ প্রথমে তাইওয়ান (২) :) :D B-)

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ত্রিদেশীয় ভ্রমন - আমার পর্যবেক্ষণ ঃ প্রথমে তাইওয়ান (১) :) :D B-)

Juifen থেকে ফিরতে রাত ৯ টা বেজে গেল; Professor বললেন তারা Dinner করতে যাবে আমি তাদের সাথে যেতে চাই কি না। আমি যথাসম্ভব ভদ্রতার সাথে ডিনাই করলাম। বেচারা বুড়া বয়সে বউ নিয়ে একটু ঘুরতে এসেছে, আমি সারাক্ষন তাদের সাথে হাড্ডির মত লেগে থেকে তাদের রোমাঞ্চে বাঁধা না দিই! তাছাড়া নতুন একটা জায়গা এসেছি, নিজের মত করে একটু ঘুরে ফিরে দেখতে চাই। উনাদের সামনে সারাক্ষন টাইট হয়ে থাকতে থাকতে টায়ার্ড হয়ে গেছি। আমি হোটেলে ফিরে একটু ফ্রেশ হয়ে রেস্টুরেন্টের খোজে বের হলাম। কিছুই চিনি না, কোথায় কি পাওয়া যায়, তাছাড়া হালাল-হারামের ব্যাপার আছে। বেশ কিছুক্ষন ঘুরাঘুরি করে একটা ভিয়েতনামী রেস্টুরেন্টে দেখলাম বেশ ভিড়; ভাবলাম এই হোটেলের খাবার নিশ্চয় ভাল হবে, ঢুকে পড়লাম। কোনার দিকে ফাকা একটা টেবিলে বসলাম, বেয়ারা মেনু দিয়ে গেল। তাঁর মাথা মুন্ডু কিছু বুঝলাম না, বেয়ারা ইংলিশ বুঝে না, আমি তার ভাষা বুঝিনা। যাই হোক অনেক কষ্টে ছবি দেখে কিছু খাবারের অর্ডার দিলাম। বেয়ারা খাবার আনতে গেছে, আমি এদিক সেদিক দেখছি ... এতক্ষন খেয়াল করিনি পাশের টেবিলেই আমার প্রফেসর আর তাঁর স্ত্রী! আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসচ্ছে ... নিজেকে চরম বেক্কল মনে হলো :-/ !! এত খুজাখুজি করে শেষ পর্যন্ত উনাদের পাশের টেবিলেই বসলাম/:) ! যাহোক, খাবার দিয়ে গেল, খেতে মন্দ না। ডেজার্ড মেনুতে কাঠালের মত কিছু একটা দেখলাম, অর্ডার দিলাম, প্রিজারভ করে রাখা বিচি ছাড়া খাজা কাঁঠালের কোয়া; প্রায় ৫ বছর পরে কাঠাল খেলাম! :D

পরদিন গেলাম Maokong Gondola; শহর থেকে একটু দূরে পাহাড়ী এলাকায়, এবার ট্রেনে করে গেলাম। Maokong Gondola হচ্ছে পাহাড়ী এলাকায় চলাচলের জন্য Lift Transportation System, দৈর্ঘ ৪.৩ কিমি, মাঝে ৪ টি স্টেশন আছে। এর আগেও অনেক Cable car এ চড়েছি কিন্তু এত বড় এবং এত সময় ধরে Cable car এ চড়া এই প্রথম; ভাড়াও আমার খাছে মনে হয়েছে খুবই কম! অসম্ভব সুন্দর জায়গা, ছোট বড় অসংখ্য পাহাড়! পাখির চোখে পাহাড দেখা ... :)

এত সৌন্দর্য আমার আমার সস্তা ক্যামেরায় ধারন করা অসম্ভব, তবুও একটা ছবি শেয়ার করি ...


পরদিন শুরু হলো কনফারেন্স, আমার প্রেজেন্টেশন শেষের দিন, শেষ সেশনে। বিকাল বেলা চুপিচুপি কাট্টি মারলাম ;)। এবার একা একা ঘুরব! আসার আগে তাইওয়ানীজ ল্যাবমেট বলে দিয়েছে Taipei 101 যেন মিস না করি! চিনতে খুব একটা সমস্যা হলো না; এরা যথেষ্ট ভাল ইংলিশ জানে এবং হেল্পফুল। Taipei 101 তাইওয়ানের গর্ব! ২০০৪ থেমে ২০১০ পর্যন্ত বিশ্বের উচ্চতম বিল্ডিং; এখন অবস্থান তৃতীয়। তবে কিছু বিষয়ে এখনও এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় Green Building; বিশ্বের দ্রুততম লিফট এই বিল্ডিঙয়ে; ৫ তলা থেকে ৮৯ তলা পর্যন্ত ঊঠেগেলাম মাত্র ৩৭ সেকেন্ডে!! B-)
তাইপে ১০১; তাইওয়ানের ১০১ তলা বিল্ডিং!


তাইওয়ানের আর একটা জিনিস টুরিষ্টদের কাছে খুব জনপ্রিয়, তাহলো সেখানকার Night Market. প্রায় সারারাত পথের ধারে কিছু সস্তা, জিনিষ, খাবার দাবার বিক্রি হয়; যত রাত বাড়ে ভীড় ও নাকি তত বাড়ে! তাইওয়ানীজদের ধারনা এইটা তাদের খুবই স্পেশাল কিছু, তাই টুরিস্ট এর সাথে আলাপ হলেই সেখানে গেছি কি না জিগায়! আমি একটাতে গেছিলাম, আমার কাছে অবশ্য আমাদের ফুটপাথ মার্কেটের থেকে আলাদা কিছু মনে হয়নি! :|

তাইওয়ান সম্পর্কে আর কিছু তথ্যঃ এটি একটি পরিপূর্ণ দেশ হলেও জাতিসঙ্ঘের সদস্য নয়; এটি জাপানীজ, চাইনীজদের দখলে দীর্ঘ সময় ছিল; Sun Yat-sen কে তাইওয়ানের জনক বলা হয় (না, কোন বিতর্ক নেই ;)), ৪ সংখ্যা টাকে ওরা অশুভ সংখ্যা এবং ৮ সংখ্যাটিকে শুভ সংখ্যা হিসাবে দেখে এবং ব্যাপারটাকে ওরা যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়, গাড়ীর নম্বর প্লেট বা মোবাইল নম্বরে ৪ বাদ দিতে এবং ৮ সংযোজন করতে ক্ষেত্রবিশেষে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়।

যাহোক, জাপান ও তাইওয়ান সম্পর্কে আমার কমেন্ট হলো, তাইওয়ানীজরা জাপানিজদের তুলনায় কিছুটা অনুন্নত কিন্তু তাওয়ানীজদের মধ্যে ইমোশন আছে (যেটা আমাদের মধ্যে অতিরিক্ত পরিমানে) জাপানিজদের মধ্যে সেটার উপস্থিতি শুন্যের কাছাকাছি!

৫ দিন ছিলাম তাইওয়ানে, তারপর সিংগাপুর...

একটা ভাল সংবাদ আর একটা খারাপ সংবাদ দিয়ে শেষ করিঃ প্রথমে ভালটা - এই ট্যুরে তাইওয়ান আর মালেশিয়াতে দুটি কনফারেন্সে অংশগ্রহল করে দুটিতেই বেস্ট এওয়ার্ড পেয়েছি! (নিজের ঢোল নিজে পিটাইলাম আর কি ;) )

এইবার দুঃখেরটা শুনেন আর সাবধানে থাইকেন, আমার মত ব্যাক্কল হইয়েন না – বিদেশে যেয়ে মোবাইলে রোমিং এর সুবিধা পেয়ে খুশিতে ডগমগ হয়ে কয়েক মিনিট ফোন করেছিলাম, বেশকিছু sms পাঠিয়েছিলাম আর কিছু ফোন রিসিভ করেছিলাম। জানতাম একটু বেশী বিল আসবে, তাতে কি কত আর বেশী হবে ... ... !!!
বাই দ্যা ওয়ে... মাসে সাধারণত দেড় থেকে ২ হাজার টাকা আমার বিল আসে, এবার এসেছে ৩৫ হাজার টাকা !!! :((:((:((:((:((:((:((:((:((:((:((:((:((:((:((:((:((:((
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:৩৯
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জেন্ডার ও সেক্স

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৪ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৫২

প্রথমে দুইটা সত্যি ঘটনা শেয়ার করি।

২০২২ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দিতে জেলা পর্যায়ে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মৌখিক পরীক্ষার ঘটনা। দুজন নারী প্রার্থী। দুজনই দেশের নামকরা পাবলিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামীলীগে শুধুমাত্র একটি পদ আছে, উহা সভাপতি পদ!

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৪ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪১


বাঙ্গালীদের সবচেয়ে বড়, পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী দল হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এই দলটির প্রতি মানুষের ভালোবাসা আছে। মানুষ এই দলের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন করেছে। ৭০ এর নির্বাচনে এই দলটিকে নিরঙ্কুশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

এমপি আনারের মৃত্যু এবং মানুষের উষ্মা

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:২৯


সম্প্রতি ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার পর আনোয়ারুল আজীম আনার নামে একজন বাংলাদেশি এমপি নিখোঁজ এবং পরবর্তীতে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তার মরদেহের হাড়-মাংস আলাদা করে হাপিত্যেশ করে দেওয়া হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

দোয়া ও ক্রিকেট

লিখেছেন শাহাবুিদ্দন শুভ, ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৪


দোয়া যদি আমরাই করি
তোমরা তাইলে করবা কি?
বোর্ডের চেয়ারম্যান, নির্বাচকের
দুইপায়েতে মাখাও ঘি।

খেলা হচ্ছে খেলার জায়গা
দোয়ায় যদি হইত কাম।
সৌদিআরব সব খেলাতে
জিতে দেখাইত তাদের নাম।

শাহাবুদ্দিন শুভ ...বাকিটুকু পড়ুন

তোমার বকুল ফুল

লিখেছেন নীল মনি, ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৪

বকুল ফুলের মিষ্টি গন্ধে ভরে থাকে আমার এই ঘর। আমি মাটির ঘরে থাকি। এই ঘরের পেছন দিকটায় মা'য়ের হাতে লাগানো বকুল ফুলের গাছ৷ কী অদ্ভুত স্নিগ্ধতা এই ফুলকে ঘিরে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×