somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রেমাক্রি থেকে থানচি --- শ্বাসরুদ্ধকর সাত ঘন্টা !

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

{ব্যাটারীতে চার্জ না থাকায় ছবি তোলা হয় নি । } ( দেখুন রেমাক্রির আগের কিছু ছবি । )

আমাদের এই ট্যুরটা ১৩ই ফেব্রুয়ারী ২০১১এর ।

আইবিএম এ কর্মরত শরীফের চিন্তা অফিস ধরতে হবে , সরকারী চাকুরে ডা: মৌরীরও । ইঞ্জিনিয়ার কোরেশীর তেমন তাড়া নেই । আর ডা: মোহন তো আরামেই আছে আমার, মিজান ভাই আর আবুবকরের মত ।

আমরা গিয়েছিলাম বাংলাদেশের সবচাইতে উচুঁ পাহাড় সাকাহাফং বা ত্লাংময় (যদিও সরকারী ঘোষনা নেই) সহ আরো চারটি পাহাড়ে উঠতে । কেওক্রডং, তাজিনডং আর ক্যাপিটাল ছিল । পথ ভুলের কারণে ক্যাপিটালের নিচ দিয়ে গেলাম । যদিও আগের বার পথ ভুল হয়নি । কিন্তু এবার আর উঠা হলো না ।

যাই হোক কিছুটা অনিশ্চয়তা নিয়েই গিয়েছিলাম । কারণ কেউ যে পথে পা মাড়ায়নি সেই পথে যাবার পরিকল্পনা করলো আবুবকর । জিপিএসও নেই সাথে । যাব কি যাব না দোটানায় ছিলাম । শেষ পর্যন্ত সবার অনুরোধে যাব বলে স্থির করলাম ।

আমাদের রুটটি ছিল ---
দিন-১- ঢাকা - বান্দরবান - রুমা - বগালেক
(জীপ ও পায়ে হেঁটে দুই ভাবেই বগালেক যাওয়া যায়)
দিন-২- বগালেক - দার্জিলিংপাড়া - কেওক্রাডং - পাসিংপাড়া - জাদিপাইপাড়ার পাস দিয়ে - ক্যাপিটাল পিক - বাকলাই
দিন-৩- বাকলাই - সিমত্লাপিপাড়া - থানদুইপাড়া - নয়াচরণপাড়া
দিন-৪- নয়াচরণপাড়া - হাঞ্জরাইপাড়া - নেপিউপাড়া - ত্লাংমং/সাকা হাফং - সাজাইপাড়া
দিন-৫- সাজাইপাড়া - সাতভাইখুম (ঝর্না) - আমিয়াখুম - নাইক্ষামুখ - সাজাইপাড়া
দিন-৬- সাজাইপাড়া - জিন্নাহপাড়া - নাফাখুম - রেমাক্রি
দিন-৭- রেমাক্রি - বারপাথর (বড়পাথর) - টিন্ডু - থানচি - বান্দরবান - ঢাকা ।

আগের বিকেলে নাফাখুম দেখা শেষ করে ফেরার সাথে সাথে রেমাক্রি বাজারে নৌকা খোঁজ করলাম অনেকক্ষন । নৌকা বন্ধ !!! কারণ খুজঁতে যেয়ে দেখি ভয়ন্কর । কোন পাড়াতে যেন দুইজন বাঙ্গালীকে কুপিয়ে খুন করেছে কারা । তাই বিজিবি নৌকা বন্বিধ করে রেখেছে ।

বিকেল থেকে ভাবছি কি করা যায় ? একসময় আবুবকর চেষ্টা করলো একজন পথ প্রর্দশক (গাইড) জোগার করতে । কিন্তু গাইড যখন ১৫০০ (পনেরশত ) টাকা চাইলো তখন মেজাজ এত খারাপ হলো রাতেই রওনা দিতে ইচ্ছে হলো । এতটা কঠিন পথ এসেছি প্রায় গাইড ছাড়াই (আমাদের সিয়াম এই পথটা চেনে না ।)

কোন সমাধান পেলাম না সারারাত । সকাল ৫টায় উঠে সবাইকে নিয়ে চিনির টোষ্ট আর কলা খেলাম । আবার নৌকা খোঁজ করলাম কিন্তু আশার গুড়ে বালি । নৌকা না পেয়ে হাঁটা দিলাম । কেউই আমরা আসিনি এই পথে । তাই কোন ধারনাও ছিল না পথ সর্ম্পকে ।

নদীর ধাঁর দিয়ে আর কখনো পাহাড়ী পথকে সঙ্গী করে এগিয়ে যাচ্ছিলাম থানচি । পথে পেলাম আরো তিন এডভেঞ্চার প্রিয়কে । তারাও নৌকা না পেয়ে হাঁটা দিয়েছে ।

পথের কান্তি ভোলার সুযোগ পেলাম বড় পাথরের কাছে এসে পেলাম চায়ের দোকান । পাহাড়ি পাকা কলার সাথে বিস্কুট আর রং চা । অমৃত লাগলো । কিন্তু কিছু সময় পর ভুলে গেলাম সে অমৃতের স্বাদ । কারণ শরীফ আর মৌরির অফিস এর কথা মনে হলো ।

আবার পা চালানোর পালা । চার ঘন্টা হাঁটার পর পেলাম টিন্ডু । বাজারে আবার নৌকা খোঁজ করলাম । কিন্তু এবার ব্যর্থ হলাম । ব্যর্থতা যেন আমাদের গতি বাড়িয়ে দিল ।

পদ্ম ঝিরিতে এসে বিশ্রাম নিলাম ৩০ মিনিট খেলাম অনেক কিছু । এবার নৌকাতে উঠে পারি দিলাম পদ্ম ঝিরির ছোট পথটুকু ।

দুপুরের কড়া রোদ আমাদের চলার পথকে কঠিন করে তুলছে ধীরে ধীরে । সাথে পায়ের নিচে শুকনো উওপ্ত বালি ।

আবু বকর থানচিতে ফোন করে দুপুরের খাবার আর বাসের টিকেট বুক করতে বললো ।

থানচিতে পৌছে শেস হলো আমাদের শ্বাসরুদ্ধকর সাত ঘন্টা ট্রেকিং । জম্পেস খাবার পেলাম দুই রকম মাছ, সবজি ভর্তা, গরম ভাত ।

খাবার শেষ করে দিলাম দৌড় বাস ষ্ট্যান্ডে । টিকেট কাঁটা শেষ করেই আড্ডা শুরু হলো জিলানী ভাইদের সাথে । কিছু সময় পর শুরু হলো আমাদের বান্দরবান যাত্রা ।

আমাদের দলে ছিলেন---
১. ডাক্তার মাহাফুজা আক্তার মৌরি
২. রবিউল হাসান খান মনা
৩. আবু বকর সিদ্দিক
৪. মাহমুদ সাফায়েত জামিল কোরেশী
৫. ইখতিয়ার মোহাম্মদ শরীফ
৬. নিজাম উদ্দিন মিজান
৭. ডাক্তার মাহফুজুর রহমান মোহন
আমাদের পথ প্রর্দশক ছিলেন লাল সিয়াম বম । (যদিও তাকে পথ দেখিয়েছি । )
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৫৪
১০টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×