somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যখন গিয়েছে পড়ে ক্যারিয়ারের ঝোল

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জীবনের প্রথম রম্য গল্প ছিলো এটি। রম্য লিখতে পারি না এরপরেও লিখি। কারণ হরেক মাল ১০টাকার লেখকদের হরেক স্বাদের গল্প লিখতে হয়। নাহলে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির এই বাজারে দামী লেখার ভীরে গরীবরা সস্তা গল্প পাবে কোথায়?


গত ১০ দিন পর বাসায় পানি আসাতে সব শার্ট আর গেঞ্জি ধুয়ে দিতে দিয়েছিলো আসিফকে। তাই বাসা থেকে বের হতে চেয়েছিলো পুরনো ছোট গেঞ্জি গায়ে দিয়েই! উহু আটছিলো না! পেট বের হয়ে আসছে। কাধের তলার দিকে তাকালো, সেলাই ফেটে বেরিয়ে আসতে চাচ্ছ! পাঞ্জাবী বলতে গেলে পড়া’ই হয় না! ঈদের সময়’ও না! সেই তিন বছর আগের এক পাঞ্জাবী দিয়েই এখনো পার করছে! তবুও আজকে বাধ্য হয়ে পাঞ্জাবী গায়ে দিয়েই বের হতে হলো! মুখে খোচা খোচা দাড়ি, শেভ করা হয় না প্রায় সপ্তাহ খানেক হল।
হাতে তিনটা টিফিন ক্যারিয়ার, একটা বাবার, একটা ভাইয়ার আর আরেকটা তাদের ম্যানেজারের! হরতালের জন্য বাবা আজ গাড়ি নিয়ে শো-রুমে যায়নি। তাই তাকেই শো-রুম থেকে বাসায় ফোন করে দুপুরের খাবার নিয়ে যেতে বললো! তাদের বাসায় এটা হরতালের একটা ঐতিহ্য’ও বটে! যেদিনই হরতাল হবে, বাবা দুপুরে বাসায় খেতে আসবে না, কিংবা শো-রুমে খাবার’ নিয়ে যাবে না! তাকেই তখন টিফিন ক্যারিয়্যার নিয়ে যেতে হয়। ছোটবেলা থেকেই হরতালের সময় তাক এই কাজ করতে হয় বলে এটাকে সে হরতাল পালনের একটা অংশ হিসেবেই জানে!

বাসা থেকে বের হলো। হাতে টিফিন ক্যারিয়ারগুলো ভালো করে ধরতে পারছিলো না। একদিকে কাঁত হয়ে পড়ছিলো। যাওয়া-আসার ভাড়া ৭০টাকা হাতে দিতে দিতে মা বারবার সাবধানবাণী দিচ্ছিলেন, “সাবধানে রাখবি, যেনো কাঁত হয়ে না যায়। ঝোল যা আছে সব পড়ে যাবে।” আসিফের কথা হলো, ক্যাঁৎ করলে যদি ঝোল পড়েই যায়, তাহলে টিফিন ক্যারিয়্যারের দরকারটা কি? টিফিন ক্যারিয়্যার হলো খাবারের কাপড়। মানুষ যেমন তার দেহ ঢেকে রাখে কাপড় দিয়ে, তেমনি টিফিন ক্যারিয়্যার খাবারগুলোকে ঢেকে রাখে। মানুষের শরীরেও তো কত ঝোল বের হবার জায়গা আছে; নাক মুখ আরো কত জায়গা। কই সেখান থেকে তো চাইলেই ঝোল পড়ে না! অথচ একটা টিফিন ক্যারিয়ার যাকে সামান্য কাঁত করলেই গল গল করে ঝোল পড়ে যায়।

এসব সাত-পাচ ভাবতে ভাবতে সে বাসার সামনের রাস্তার মোড়ের কাছে এসে দাঁড়ালো! পুরো রাস্তাই ফাকা। ক্রিকেট খেলতে পারলে খারাপ হতো না। গত সিএনপি আমলে এরকম কোন এক হরতালের সময় সে পেপারে পরেছিলো মালেক ফিয়া আর চুকো দুই ভাই মিলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ক্রিকেট খেলছে। তার’ও সেরকম খেলতে ইচ্ছে হচ্ছে! যেনো এ মুহুর্ত্যে ক্রিকেট খেললেই সে মালেক ফিয়া কিংবা চুকো হয়ে যাবে। পরক্ষণেই তার মনে হলো, আরে মালেক ফিয়া, চুকো হলেই তো লোকে তাকে দূর্ণীতিবাজ মনে করবে। তারপর পুলিশের ডান্ডা খেয়ে অসুস্থতার কথা বলে দেশ পালিয়ে পালিয়ে ঘুরে বেড়াতে হবে। এর চেয়ে ফাওয়ামী সন্ধি'র নাজিব হাজেদ লয় এর মত দূর থেকে চিপাবাজি বুদ্ধি খাটিয়ে টাকা মারতে পারলে মজ্জাই মজ্জা!

এসব চিন্তা কেবল চিন্তাই। তাই এসব উদ্ভট চিন্তা করতে করতে দেখতে পেলো বুড়া কিসিমের একটা রিক্সাওয়ালা আস্তে আস্তে এগিয়ে আসছে। সে বুড়া রিক্সাওয়ালাদের রিক্সায় সাধারণত চড়ে না। এগুলো খিটখিটা ধরনের হয়, ভাড়াও বেশি চায়, আর সারাক্ষণই গুটুর গুটুর করতে থাকে। তাই এদেরকে আসিফের পছন্দ না। তবুও এই দুর্মূল্যের বাজারে সে রিক্সাওয়ালাটাকে ডাকলো,

-এই মামা, যাবা নাকি?
-কই?
-শিববাড়ী।
-৬০টাকা।
-পাগলে পাইছে, ১৫টাকার ভাড়া ৬০ টাকা চাও!
-আজকে সবাই এমুনই দিছে।
-২০ যাবা?
-একদাম ৫০ যাবাইন?
-সামনে বাড়াও।

আসিফ জানতো এই বুড়ারা খারাপ কিসিমের হয়। অহেতুক বাড়তি ভাড়া চায়। সে ডিসাইড করলো হেটেই চলে যাবে। বেশি দূর তো না, মাত্র দুই কিলো!

দোকান থেকে ৩টা মার্লব্রো সিগারেট কিনে একটা ধরিয়ে মুখে পুরে হাটতে লাগলো। রোদ পড়েছে প্রচুর। পকেট থেকে সানগ্লাসটা বের করে পড়লো। ঠোটে জ্বলন্ত সিগারেট, হাতে কাঁত হয়ে যাওয়া তিনটা টিফিন ক্যারিয়্যার নিয়ে হেটে যেতে যেতে মসজিদ মার্কেট এলাকা পার করে বাসস্ট্যান্ডের মোড়ের কাছাকাছি আসলো। দূর থেকে দেখতে পেল একটা পুলিশ পেট্রোল টিম লোকজনকে ধরে ধরে তল্লাশী করছে। তাদের তল্লাশী করার স্ট্যাইলটা অনেকটা যুদ্ধের মতো। পারলে প্যান্ট খুলে দেখে। ৭১ এর কয়েকটা বইয়ে আর মুভিতে সে এরকম দেখেছে, লোকজন হাত তুলে দাঁড়ায়, আর রাজাকার ও পাকিস্তানীরা প্যান্ট লুঙ্গি খুলে উঁকি মেরে দেখে খতনা আছে কি নেই।

এর অবশ্য খতনা দেখবে না, তবে পুরো শরীর তল্লাশী করে দেখবে। বাম দিকের দোকানগুলোর দিকেও তার চোখ গেলো। কয়েকটা মহিলা পুলিশ’ও দাঁড়িয়ে আছে দোকানের ছাউনীর তলে। মনে মনে ভাবতে লাগলো ছেলে পুলিশগুলো মেয়েদের তল্লাশী করবে আর মেয়ে পুলিশগুলো ছেলেদের তল্লাশী করবে, তাহলেই তো দুই পক্ষই সেধে সেধে নিজেদের তল্লাশী করাতে আসবে। কোন কাজ না থাকলেও একবার এ মাথা থেকে ও মাথে অযথাই ঘুরাঘুরি করবে এই এক তল্লাশী খাওয়ার জন্য!

আস্তে আস্তে সে চেকপোস্ট পর্যন্ত এগিয়ে আসলো। ওসি নিজে পর্যন্ত ফিল্ড ওয়ার্কে নেমে পড়েছেন। হাবিলদারদের বুক পকেটে ব্যাজের মতন মনোগ্রাম থাকে। সেন্ট্রিদের থাকে না। তাই সেন্ট্রিদের হাতে লাঠি নিয়েই কাজ সারতে হয়। তাই লোকে তাদের ঠোলা বলেই ডাকে। সরকার সবাইকে অস্ত্র দেয় না। অস্ত্রের অনেক দাম।
হাবিলদার, সেন্ট্রি এখনো গাছতলায় বসে আরাম করছে। ওসি সাহেব যে বেশ দায়িত্ববান তা তার তদারকি দেখেই বুঝতে পারলো। আজকালর দিনে এমন ওসি পাওয়া যায় না। মেয়ে পুলিশগুলো তো মনে হয় এখনো ডিউটিতেই নামেনি।

চেকপোস্টে যখন আসিফের সিরিয়াল এলো, তখন ওসি সাহেব আসিফকে জিজ্ঞেস করলো,

-কোথায় যাওয়া হচ্ছে?
-যেখানে অর্ডার পড়েছে!
-ত্যাড়া কথা ছাড়েন।

ওসির নাম “আলাউল জোয়ার্দার।” দেখে বেশ তাগড়া লোক মনে হচ্ছে। নেমপ্লেটের নাম পড়তে পড়তে ওসি’র পুরো শরীরটা এক পলক দেখে নিলো। সুবিশাল পেটের আবরণ তাঁর কাপড় ঠিকরে বেড়িয়ে আসার চেষ্টা করছে। পুরুষ মানুষের এত বড় পেট যে হয়, তা আসিফের ধারণা নেই। তবে কেনো যেনো সে প্রায়ই সব ক্ষমতাবান লোকদের বেশ বড় পেটই দেখে। আজ পর্যন্ত কোন রিকশাওয়ালাদের সে বড় পেট দেখেনি।
ওসি সাহেবও চোখে কালো সানগ্লাস লাগিয়েছে। একটা মোটা খানদানি গোফ’ও আছে। তাকে দেখতে দেখতে ওসি আবার তাকে জিজ্ঞাসা করলো,

-কিসের ওর্ডার?
-মাল ডেলিভারী দেওয়ার!

ওসি সাহেব আর তার সাথের হাবিলদার কানাকানি করে কি যেনো বললো। কথা বলা শেষ হতেই একটা বেটে বাটকুল টাইপের ঠোলা এগিয়ে আসলো তার কাছে, কোন কিছু বলবার আগেই হাত থেকে কেড়ে নিলো টিফিন ক্যারিয়্যার তিনটি। আসিফ তাড়াতাড়ি চিৎকার বলে উঠলো,

-কাঁত করবেন না, সর্বনাশ হয়ে যাবে।

আসিফের চিৎকার শুনে ঠোলা হাতে সেন্ট্রির ভয়ে হাত থেকে তিনটা টিফিন ক্যারিয়্যারই ফেলে দিলো। ওসি ও তার আশেপাশের লোকজন কয়েক পা পিছিয়ে গেলো। আসিফ তবুও কাছেই দাঁড়িয়ে রইলো। পড়ে যাওয়া টিফিন ক্যারিয়্যার তিনটি তুলে নিতে গিয়েই পেছন থেকে একটা লাঠির বাড়ি তার কোমরে এসে পড়লো। আচমকা এমন বাড়ি খেয়ে মাটিতে উবু হয়ে শুয়ে পড়লো। আর সঙ্গে সঙ্গেই আরো কয়েকটা বাড়ি তার হাঁটু, পা কোমর, পিঠ, মাথায় এসে পড়তে লাগলো। এমন সময় তার পাঞ্জাবীর পকেট থেকে লাইটার আর বাকী দুইটা সিগারেট পড়ে গেলো। ওসি হাপাতে হাপাতে বলতে লাগলো,

-এহ তাবুতান্ত্রিক দল হয়ে আবার গাঞ্জা খায়!

এদিকে আসিফ পুরো বেকায়দায় পড়লেও এতক্ষণে বুঝতে পারলো, যে কেনো তাকে এই মার মারা হলো। বুঝার সঙ্গে সঙ্গেই সে বুদ্ধি করলো যে করেই হোক, তাকে পালাতে হবে, নাহলে তাকে গ্রেপ্তার করলে না জানি আরো কয় দিন হরতাল দেয় সিএনপি কে জানে? তাই তাকে এখন যুদ্ধ করতে হবে। অভিনয়ের যুদ্ধ।

বুকে ভর দিয়ে আস্তে আস্তে সে এগুতে লাগলো টিফিন ক্যারিয়্যারটার দিকে, ওপাশ থেকে এলপাতাড়ি লাঠিচার্জ চলছেই। অবশেষে আসিফ তার টিফিন ক্যারিয়ার তিনটার একটার নাগাল পেলো। আর সাথে সাথেই বুকে জড়িয়ে ধরে হুঙ্কার দিয়ে উঠে দাঁড়ালো, আর বললো, আর যদি কাছে আসছিস, তো এটার মুখ খুলে ফেলবো, এটা বলতে বলতে আসিফ চারপাশটা দেখে নিলো, দেখলো মসজিদ মার্কেটের কাছাকাছি পুলিশের টহল গাড়ি,আর গজ বিশেক দূরেই একটা বাস থেকে যাত্রীরা হু হু করে নামছে, ভেবেছে মারামারি হচ্ছে বোধহয়।

আসিফ আর কোন দিকে না ভেবে কোনমতে দুইটা টিফিন ক্যারিয়্যার নিয়ে একটা ভো দৌড় দিলো। ঠোলা গুলো’ও দৌড়াতে লাগলো, তবে আসিফের গায়ে তখন অসুরের শক্তি। আসিফ দৌড়ে বাসটায় উঠে পড়লো। বাসে উঠার সাথে সাথেই সে ড্রাইভারকে বললো, “ভাই দয়া করে কোন জায়গায় না থেমে সোজা বাসটা চালিয়ে নিয়ে যান।” ড্রাইভারের মনে কি হলো, সামনের স্পীড ব্রেকার না দেখেই সে সজোরে বাস চালিয়ে নিলো। ঠোলাগুলো দৌড়ে উঠতে পারলো না। একপ্রকার বলা যায় এ যাত্রায় বাস-ড্রাইভারই তাকে বাচালো।

ঠোলাগুলো তাকিয়ে আছে চলে যাওয়া বাসটির দিকে, দৌড়ে তাকে ধরতে না পারায় এখন টহল গাড়িকে ইশারায় ডাকছে। এদিকে টহল গাড়ির ইঞ্জিনও স্টার্ট নিচ্ছে না। হাতের কাছ থেকে একটা পিকেটার ফসকে গেলো, এজন্য পুরো পুলিশ টিমের মাঝে আফসোসের সীমা নেই।

এদিকে বাসের সবাই তাকিয়ে আছে তার দিকে। জানতে চাইলো কি হয়েছে? আসিফের তেমন কোন ভাবান্তর হলো না! এতক্ষণ পুলিশের এলোপাতাড়ি বাড়ি খেয়ে সে এখন ধরাশায়ী। কোনমতে চৌরাস্তায় পৌছে বাস থেকে নেমে সে তার বাবার শো-রুমে গেলো।

ছেলের এমন অবস্থা দেখে বাবা ফিট হয়ে যায় যায় অবস্থা। ছাই রঙা পাঞ্জবীর উপর রক্তের হাল্কা ছোপ। ঠোট, কপাল, মাথা ফেটে রক্ত পড়ছে। দৌড়ে এসে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞাসা করলো,

-কি হয়েছে? পিকেটাররা ধরেছিলো?

আসিফ কোন কথা বললো না, চুপচাপ বসে পড়লো চেয়ারটা টেনে। পুরো কাহিনী সে আবার বললো শো-রুমের সবার সামনে।


এদিকে ওসি, তাঁর হাবিলদার ও ঠোলা বাহিনী এখনো ধান্দার মধ্যে আছে! পাশের র্যালব টিম এখন ডিউটিতে বদুর মোড় পর্যন্ত আছে। আসতে আসতে আরো প্রায় মিনিট পাঁচেক লাগবে। এই টিফিন ক্যারিয়্যারকে কি করা যায়? ভাবতে ভাবতে তিনি উপরের মহলে ফোন করতে লাগলেন।

কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর র্যা বের স্পেশ্যাল বোম্ব ডিফিউজ টিম এসে পড়েছে। কোন কথা না বলেই সরাসরি গাড়ি থেকে নেমে খুব ব্যস্ততার সাথে টিফিন ক্যারিয়ারটার কাছে গেলো। টিফিন ক্যারিয়্যারটাকে প্রথমে আস্তে করে তুলে পানির বালতিটার মাঝে রাখলো। দশ থেকে পনেরো মিনিট রাখবার পরে সাবধানে তুলে নিয়ে টিফিন ক্যারিয়্যারের মুখটা খুলে যখন দেখলেন গরুর মাংসের তরকারী আর আলু ভর্তা, তখন র্যা বের ক্যাপ্টেন মোর্শেদ একবার ক্যারিয়্যারের দিকে তাকায় আরেকবার ওসি’র দিকে তাকায়! অবাক হওয়ার কন্ঠে তিনি ওসি সাহেবকে বললেন,

-এইসব কি?

-আমি কি করে বলবো?

-আপনারা কি চেক করে দেখেননি কিছু?

-চেহারাটাই সন্দেহজনক ছিলো, তার মাঝে কথাবার্তাও। তাই সন্দেহ থেকেই...

ওসি সাহেব কথা শেষ করতে পারলেন না, ক্যাপ্টেন তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বললেন,

-আচ্ছা, তাহলে এরপর থেকে ভালো করে চেক করে নিয়েন। শুধু শুধু পন্ডশ্রম করে তো লাভ নাই।

-জ্বি আচ্ছা।

-আচ্ছা ওসি সাহেব, এখন তাহলে আসি। আমরা কাছাকাছিই আছি। দরকার পড়লে ফোন দিয়েন।

-জ্বি আচ্ছা।

র্যা বের ক্যাপ্টেন আর কোন কথা না বলে গাড়িতে উঠে বসতে গেলেন। ড্রাইভার ইঞ্জিন স্ট্যার্ট দিতে দিতে ক্যাপ্টেন মোর্শেদ ওসি জোয়ার্দারকে বললেন, এরপর থেকে একটু ভালোভাবে নজর রাখবেন।

র্যা বের পেট্রোল চলে গিয়েছে। ওসি জোয়ার্দার এখনো তাকিয়ে আছেন। আশেপাশের লোকজন তার দিকে তাকিয়ে হাসছে। তিনি একটা ধমক দিলেন। কোন কাজ হলো না! তারপর রাগত ভঙ্গিতে হাটতে হাটতে তিনি টিফিন ক্যারিয়্যারের বাটিগুলোর কাছে গেলেন। গোছাতে গিয়ে তার মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে গেলো। কে যেনো তার আর ক্যাপ্টেন সাহেবের কথা বলার সময় বাটির সব তরকারী খেয়ে কেটে পড়েছে। মাংসের টুকরাটা দেখার পর পরই তিনি মনে মনে ঠিক করে রেখেছিলেন, তিনি এই তরকারী দিয়ে ভাত খাবেন। এমনিতেই দুপুরের খাবার নিয়ে আসেননি, তার মাঝে আবার পকেটের অবস্থাও প্রায় ফাঁকা।

আশাহত মুখে তিনি সব সেন্ট্রিদের ডাকলেন, অন্য জায়গায় ডিউটিতে যেতে হবে। এখানে অনেক্ষণ সময় পার হয়ে গিয়েছে। ডান-বাম দুই দিকের সেন্ট্রিদের ডাকতে গিয়ে হঠাতই তিনি খেয়াল করলেন, তার ডানদিকের একজন সেন্ট্রির ঠোটের কোনার নিচে হলুদ ঝোল লেগে আছে। বুঝতে আর বাকী থাকলো না যে সে’ই এই টিফিন ক্যারিয়ারের মাংসের টুকরাটা মেরেছে।

ওসি সাহেব মনে মনে আফসোস করতে লাগলেন, এতো কষ্ট করে তাবুতান্ত্রিক দল মনে করে ছেলেটাকে পেটালাম, বিনিময়ে এক বাটি তরকারী পেলাম, সেটাও সাবার করে দেয় আরেকজন! পুলিশের চাকরীর এই এক জ্বালা! কখন যে কে ধান্দায় পড়ে যায় কেউ বলতে পারে না!



*** স্থান, কাল পাত্র ঠিক থাকলেও এই গল্পের সব চরিত্রই কাল্পনিক, কারোর কল্পনার সাথে বাস্তব কিংবা বাস্তবের সাথে কুল্পনা যা'ই হোক না কেন এই গল্পের কোন অংশ মিলে গেলে লেখক কেন, দুনিয়ার কেউই দায়ী নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:৩০
১২টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পথ হারিয়ে-খুঁজে ফিরি

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৩


মনটা ভালো নেই। কার সাথে কথা বলবো বুঝে পাচ্ছি না। বন্ধু সার্কেল কেও বিদেশে আবার কেও বা চাকুরির সুবাদে অনেক দুরে। ছাত্র থাকা কালে মন খারাপ বা সমস্যায় পড়লে... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×