somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অমুসলিম ভাইদের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠিঃ মুহম্মদ(স) আপনাদের শত্রু নয়(মুসলিমদের জন্যও উন্মুক্ত)

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিয় অমুসলিম ভাইয়েরা,

আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইল। আমি একজন ধার্মিক মুসলমান হিসেবে নিজেকে পরিচিত করতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। কিন্তু আজকের এই খোলা চিঠিতে আমি কোন ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করছি না। আমি স্রেফ একজন সভ্য মানুষ হিসেবে এই চিঠিটি উপস্থাপন করছি। আপনারা জানেন ইসলাম ধর্মের শেষ নবী মুহম্মদ(স)। তিনি ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে আরবের মরু প্রান্তরে জন্ম গ্রহণ করেন। ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত যে, ওই সময়টা ছিল মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক চরম বাজে সময়। অন্যান্য ধর্মের প্রচারক মহাপুরুষদের মত তিনিও তখন আলোকবর্তিকা হাতে কাজ করেছিলেন সমগ্র মানব জাতির কল্যাণে। কিন্তু তিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করতে গিয়ে অনেক নির্যাতনের সম্মুখীন হয়েছেন তখন। হয়ত আপনারা বলবেন, তিনি শুধু ইসলামের কল্যাণে কাজ করেছেন। একথা ঠিক নয়, কারণ তিনি ইসলাম ধর্ম প্রচার করেছেন যেমন ইসলামের জন্য, তেমনি মানুষকে অন্ধকার জগত থেকে বের করে আনতে। ইতিহাস সাক্ষী দেয় যে তিনি কাউকে জোর করে ইসলাম চেপে দেননি। বরং তিনি সব ধর্মের মানুষকে নিয়ে একত্রে বসবাস করেছেন। অমুসলিমদের সাথে সন্ধি স্থাপন করেছেন, যদিও তারা বারবার তাঁর সাথে প্রতারণা করেছে। তথাপি তিনি অন্য ধর্মানুসারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সারাজীবন কাজ করে গেছেন। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গড়ে তুলেছেন তাঁর অনুসারীদের। মক্কা বিজয়ের সময় অমুসলিমদের গায়ে আঁচড়টি পর্যন্ত লাগতে দেননি। বরং তাঁর আপন চাচাকে হত্যা করে যে ব্যক্তি নাক-কান কেটে মালা গেঁথে পড়ে ঘুরেছে, কলিজা কেটে চিবিয়ে খেয়েছে, তাঁকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয় তাঁর ঘরকে সবার জন্য নিরাপদ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। সর্বোপরি একজন মহামানব কখনও কারোর শ্ত্রু হতে পারেন না, তিনি শুধু সবার জন্য কল্যাণময়ই হতে পারেন। মহামানবকে বুঝতে না পারাটা তাঁর অপরাধ নয়, বরং আমাদের অক্ষমতা। যাই হোক, এই মহামানবের আগমন সম্পর্কে অমুসলিমরা অনেক বেশি ওয়াকিবহাল ছিলেন। তাঁর আগমনের পূর্বে বিভিন্ন ধর্মের পণ্ডিতেরা ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন তাঁর আগমন সম্পর্কে। ইতিহাস বলে পণ্ডিতেরা জানতেন কারণ, তাদের ধর্ম গ্রন্থে এই মহামানবের আগমনী বার্তা ছিল। এতো গেলো ওই সময়ের কথা। এই যুগের বিখ্যাত অমুসলিম মনিষীর গ্রন্থও দাবী করে যে, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট মহামানব মুহাম্মদ(স)।

আমরা আজকে নিজেদের সভ্য বলে প্রমাণ করার চেষ্টায় ব্যস্ত। অথচ একজন মহামানবকে নিয়ে, তাঁর প্রচারিত ধর্মকে নিয়ে, তাঁর উপর নাযিলকৃত ধর্মগ্রন্থকে নিয়ে কুৎসা রটাতে আমাদের শিক্ষিত, সভ্য হৃদয় একটুও ব্যথিত হয় না। শুধু তাই নয়, এই মহামানব এখন মৃত। একজন মৃত মানুষকে নিয়ে কুৎসা রটাতে অনুমতি দিয়েছে কি কোন ধর্ম, কোন শিক্ষা, কোন সভ্যতা? সভ্য মানুষ হিসেবে কি আমরা একবারও চিন্তা করে দেখেছি, যাকে নিয়ে কুৎসা রটাচ্ছি, অবজ্ঞা করছি সেই ব্যক্তির অনুসারীর সংখ্যা ১৫০ কোটিরও বেশি। যারা তাঁকে মনে প্রাণে ভালোবাসে। একজনের বাজে একটা কটূক্তিতে ১৫০ কোটি মানুষ কতটা কষ্ট পায়, ভেবে দেখেছেন? আপনাদের নিজেদের বেলায় এমনটা ঘটলে কেমন লাগত, একবার ভাবুন? সবাই জানি সমাজের গুটি কয়েক চরম অসভ্য লোকের কাজ এগুলি। কিন্তু বারবার একই রকম চরম অসভ্যতা, উগ্রতা, নিকৃষ্টতা দেখানোর পরও কিন্তু আমরা ওদের থামাতে পারিনি। কারণ ওদের কোন বিচার আমরা করতে পারিনি। বরং ওদেরকে প্রশ্রয় দিয়ে গিয়েছি। এর ফলে কী হচ্ছে? বিভিন্ন ধর্ম গোষ্ঠীর মাঝে বিভেদ, হানাহানি, অবিশ্বাস শুধুই বাড়ছে। আধুনিক বা সভ্য মানুষ যা কখনোই করতে পারে না।

তাই আসুন আমরা আধুনিক, শিক্ষিত, রুচিশীল, সভ্য মানুষজন মিলে সুন্দরভাবে বাঁচতে চেষ্টা করি। আমাদের পৃথিবীকে আমরা সুন্দর করে গড়ে তুলি। সকল জ্ঞানী-গুণী, বিখ্যাত ব্যক্তি, মহামানব সর্বোপরি সকল মানুষকে শ্রদ্ধা করতে শিখি, ভালবাসতে শিখি। আর পরমতসহিষ্ণুতার চর্চা করি।

কৃতজ্ঞতা

ভেজা আকাশ
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৪৪
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্যামুয়েল ব্যাকেট এর ‘এন্ডগেম’ | Endgame By Samuel Beckett নিয়ে বাংলা ভাষায় আলোচনা

লিখেছেন জাহিদ অনিক, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৮



এন্ডগেম/ইন্ডগেইম/এন্ডগেইম- যে নামেই ডাকা হোক না কেনও, মূলত একটাই নাটক স্যামুয়েল ব্যাকেটের Endgame. একদম আক্ষরিক অনুবাদ করলে বাংলা অর্থ হয়- শেষ খেলা। এটি একটা এক অঙ্কের নাটক; অর্থাৎ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রায় ১০ বছর পর হাতে নিলাম কলম

লিখেছেন হিমচরি, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১

জুলাই ২০১৪ সালে লাস্ট ব্লগ লিখেছিলাম!
প্রায় ১০ বছর পর আজ আপনাদের মাঝে আবার যোগ দিলাম। খুব মিস করেছি, এই সামুকে!! ইতিমধ্যে অনেক চড়াই উৎরায় পার হয়েছে! আশা করি, সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাঙ দমনের নেপথ্যে এবং রাষ্ট্রীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমন্বয়

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৭


ব্যাঙ দমনের বাংলায় একটা ইতিহাস আছে,খুবই মর্মান্তিক। বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানির কোন সার কেনা হতো না। প্রাচীন সনাতনী কৃষি পদ্ধতিতেই ভাটি বাংলা ফসল উৎপাদন করতো। পশ্চিমবঙ্গ কালক্রমে ব্রিটিশদের তথা এ অঞ্চলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন বন্ধু শুভ, ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৫


.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামে ভুল থাকলে মেজাজ ঠিক থাকে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৫


বেইলি রোডে এক রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে একজন একটা পোস্ট দিয়েছিলেন; পোস্টের শিরোনামঃ চুরান্ত অব্যবস্থাপনার কারনে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডকে দূর্ঘটনা বলা যায় না। ভালোভাবে দেখুন চারটা বানান ভুল। যিনি পোস্ট দিয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×