somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবমাননাকর চলচ্চিত্র : বিশ্বজুড়ে ধিক্কার

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্যক্তিস্বাধীনতার কথা বলে যে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান রচিত, তাতে বলা হয়েছে : যে-কেউ তার মত প্রকাশ করতে পারবেন, তবে অন্যের স্বাধীনতা ুণœ করে নয়। সেই দেশটিতে ইসলাম ধর্মের নবী মুহাম্মদ সা:কে নিয়ে যে ঘৃণ্য ও শিষ্টাচার-বহির্ভূত চলচ্চিত্র ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস’ করেছে একজন ইহুদি। এ নিয়ে তামাম দুনিয়ায় চলছে ছি ছি, ধিক্কার।
বিশেষ করে ইন্টারনেটের কারণে দুনিয়াজোড়া মানুষের প্রতিক্রিয়া সহজেই সবার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। বাংলা ভাষাভাষীরাও এ প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন। সাম হয়্যার ইন ব্লগ ও সোনার বাংলাদেশ ব্লগে গতকাল এ নিয়ে একাধিক ব্লগার তাদের মতামত তুলে ধরেছেন। ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, গুগল প্লাসসহ সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন সাইটেও এ নিয়ে নিন্দার ঝড় বইছে।
মিসরের প্রধানমন্ত্রী হিশাম এর নিন্দা করে সহিংসতা এড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর নিন্দা জানাবেন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে। গতকাল হজযাত্রীদের এক অনুষ্ঠানে তিনি এমনটি বলেছেন।
ভিডিও শেয়ারের অন্যতম প্রধান ওয়েব পোর্টাল ইউটিউবে দেখা গেছে, কয়েক লাখ মানুষ চলচ্চিত্রটির কিপিংস দেখেছেন। এতে সর্বাধিক সাড়ে ১৩ মিনিটের যে ট্রেলরটি দেখানো হচ্ছে, তাতে নবী মুহাম্মদ সা:, নবীর প্রথম স্ত্রী খাদিজা রা: এবং ইসলাম সম্পর্কে কুৎসিত ও অশ্রাব্য মন্তব্য করা হয়েছে।
কোনো সুস্থ মস্তিষ্ক থেকে এমনটা আশা করা কঠিন উল্লেখ করে একজন ব্লগার লিখেছেন আমি অনেকটা নাস্তিক। তবে ট্রেলরটি দেখে আমার খুবই কষ্ট হয়েছে। একজন নবীকে এভাবে আক্রমণ করা কোনোভাবেই সমর্থন করা যায় না। অন্তত জীবনে যারা একবার কালেমা পড়েছেন তারা এটি করতে পারেন না।
ফেসবুকে একজন প্রথিতযশা কবি ও কথাশিল্পী লিখেছেন এ নির্মাতাকে পশুর সাথে তুলনা করলে পশুদের অপমান করা হবে। নির্মাতাকে ‘বেয়াদব’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড বিশ্বের শান্তিই নষ্ট করবে নাÑ একই সাথে ধর্মের সাথে ধর্মের সংঘর্ষ বাড়াবে।
চলচ্চিত্রটির ট্রেলারে দেখানো হচ্ছে একটি পর্নো কিপও। এতে বলা হচ্ছে, ইসলামের অনুসারীরা টেররিস্ট (সন্ত্রাসী)। একই সাথে তারা আড়ালে চরিত্রহীন। যেটি তারা ধর্মের লেবাসে ঢেকে রাখে। ফিলিস্তিনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে সেখানে মুসলমানেরা খ্রিষ্টানদের ক্রুশ চিহ্ন দেখা মাত্রই হত্যা করছেন বলে চিত্রায়িত করা হয়েছে। নবী মুহাম্মদ সা: সম্পর্কে এমন সব মন্তব্য ও সংলাপ রয়েছে, যেটি লেখা সম্ভব হচ্ছে না।
তারা নবী মুহাম্মদ সা: ও বিয়ে নিয়ে শ্লেষাত্মক মন্তব্য করেছে চলচ্চিত্রটিতে। এতে ইসলামের মূল কথা কুরআনই মুসলমানদের সংবিধান ও নবী মুহাম্মদ সা: আল্লাহর প্রেরিত পুরুষÑ এটি উল্লেখ করা হয় কয়েকজন উগ্রবাদীকে দিয়েÑ যারা হত্যা ও লুটের সাথে জড়িত। এ চলচ্চিত্রে নবী সা:-এর সময়কার বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে ধরে তাচ্ছিল্য করা হয়েছে। ঘোড়াকে প্রশ্ন করা হয়, সে মুসলিম কি না? তার নাম কী?
মোট কথা চলচ্চিত্রটির ট্রেলর দেখে যে-কেউ এ ধরনের ঘৃণ্য আয়োজনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন এটি খুবই স্বাভাবিক।
তবে ব্লগ, ফেসবুক ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, এর সহিংস প্রতিবাদ কতটা বাঞ্ছনীয়। এর জবাবও তুলে ধরেছেন ব্লগারেরা। তারা বলেছেন, এ ঘটনা নিয়ে কাউকে হত্যা অবশ্যই অপরাধ। কিন্তু এ রকম একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে শিষ্টাচার-বহির্ভূতভাবে যে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়েছেÑ এটি বিশ্বের দেড় শ’ কোটিরও বেশি মুসলমানকে আঘাত করেছে। এতে অনেকে ক্ষিপ্ত হতে পারেন এবং সহিংস হতে পারেন। এটা নিয়ন্ত্রণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে এখনই চলচ্চিত্রটি নিষিদ্ধ করা উচিত।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে পুলিশ চলচ্চিত্রটির প্রযোজক নাকৌলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এ ব্যক্তি ব্যাংক জালিয়াতির দায়ে দণ্ডিত। বর্তমানে সে জামিনে মুক্ত রয়েছে। সেখানকার পুলিশকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমগুলো খবর প্রচার করছে, তাকে মূলত জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে যে, সে জামিনের কোনো শর্ত লঙ্ঘন করেছে কি না। এতে ইন্টারনেট ব্যবহারকরীদের অনেকে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
ইউটিউব-জুড়ে কেবল সিনেমাটির ট্রেলর নয়, এর পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন বক্তব্যও আপলোড করা হচ্ছে। এতে বিশ্বের দেশে দেশে মুসলিমদের ুব্ধ প্রতিক্রিয়া ও তার ভিডিওচিত্র আপলোড করে এটাকে জঙ্গি উত্তেজনা হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে। তবে সেটাকেও মোকাবেলা করছেন মুসলিমদের অনেকে। তারা বলছেন, এটি একটি স্বাভাবিক প্রতিবাদ। এটা ভুলে গেলে চলবে না, যাকে নিয়ে এ শিষ্টাচার-বহির্ভূত চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়েছে তিনি মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা:।
তথ্যজ্ঞান ও বিজ্ঞানময়তার এ যুগে এ রকম একটি জঘন্য চলচ্চিত্র নির্মাণ হতে পারে তা অনেককে অবাক ও বিস্মিত করেছেন। বিশ্বের ুদ্রতম সংবিধান দিয়ে পরিচালিত বৃহৎ যুক্তরাষ্ট্রের এ কলঙ্কময় কর্মকাণ্ডে তাই বিশ্বজুড়ে বিবেকবান মানুষ বিুব্ধ। সবারই আশা যুক্তরাষ্ট্র সরকার এর এমন একটি সমাধান বের করবে যাতে মুসলিম সমাজের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করবে।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×