হতেও পারে ১ম পর্ব
এর আগের পর্বে কিছু বিশ্বাসঘাতকদের নিয়ে সংক্ষেপে লিখেছিলাম , আজ সেইরকম আরও কয়েকজন বিশ্বাসঘাতককে নিয়ে লিখবো
এফিয়েলটস
আমার ধারনা আমাদের মধ্যে অধিকাংশ ব্লগারই 300 সিনেমাটা দেখেছেন । সিনেমাটা সত্য ঘটনার উপর তৈরী । গ্রীক ঐতিহাসিক হিরোডাটাস এর নথিতে এই ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়, যেটাকে তিনি “Battle of Thermopylae’” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। খৃস্টপূর্ব ৪৮০ সালে ৩০০ বা তার থেকে বেশী কিছু সৈন্য নিয়ে পার্সীয়ান রাজা জেরেক্সের বিশাল সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে । স্পার্টান রাজা লিওনাইডাসের যুদ্ধকৌশলের জন্য যুদ্ধটা স্পার্টানদের অনুকূলে ছিলো ।
কিন্তু এফিয়েলটস নামক এক স্পার্টান ,পার্সীয়ান রাজার সাথে হাত মিলিয়ে তাদের স্পার্টান যোদ্ধাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় । এফিয়েলটস পার্সীয়ান সৈন্যদের একটি গোপন পথ দেখিয়ে দেয় , যেটা দিয়ে সহজেই স্পার্টানদের পিছন দিক দিয়ে আক্রমন করা যায় । পরবর্তীতে উভয়মুখী আক্রমনের জন্য স্পার্টান রাজা লিওনাইডাস সহ অন্যান্য যোদ্ধারাও মৃত্যুর মুখে পতিত হন।
Ming-Tan
চেঙ্গিস খানের নেতৃত্বে মঙ্গোলরা পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী সেনাবাহিনীতে পরিনত হয় , যার ফলসরূপ তারা এই পৃথিবীর বুকে বৃহত্তম সাম্রাজ্য গড়ে তুলতে সমর্থ হন । কিন্তু হয়তো মঙ্গোলরা এত সহজে এত বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলতে পারতো না , যদি না Ming Tan এর মত বিশ্বাসঘাতকরা না থাকতো ।
১২১১ সালে চেঙ্গিস খান চীন আক্রমন করেন , যখন চীনে জিন রাজবংশের শাসন চলছিলো । এই জিন সেনা প্রধানের বার্তাবাহক ছিলো ming tan , যে কিনা মঙ্গোলদের কাছে চাইনিজ সৈন্যদের অবস্থান সহ অন্যান্য তথ্যাদি পাচার করে দেন । যার ফল হয়েছিলো ভয়ানক চাইনিজরা মঙ্গোলদের বিরুদ্ধে নূন্যতম প্রতিরোধও গড়ে তুলতে পারে নাই । তবে তার পরিণতি কি হয়েছিলো সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানা যায়নি
জুডাস
অনেকের মতে পৃথিবীর সবথেকে জঘন্য বিশ্বাসঘাতক । মাত্র ৩০ রৌপ্য মুদ্রার বিনিময়ে জুডাস যীশুকে রোমান সৈন্যদের হাতে ধরিয়ে দিতে সহায়তা করে ।
রোমান সৈন্যদের সাথে চুক্তি অনুযায়ী, জুডাস লাস্ট সাপারের পরে যীশুর গালে চুমো খাবে , এবং জুডাসের চুমো দ্বারাও যীশুকে সনাক্ত করা হবে। ঐ চুমোটা ছিলো একটা ইশারা মাত্র এবং লাস্ট সাপারের পরে যখন জুডাস , যীশুর গালে চুমো খায় তখনই রোমান সৈনিকরা যীশুকে চিনতে পারে এবং যীশুকে গ্রেপ্তার করে ।
জুডাসের চুমোটি পৃথিবীর অন্যতম বিখ্যাত বা বিতর্কিত চুমোগুলোর মধ্যে একটি
Wang Jingwei
চাইনিজ ইতিহাসের সবথেকে বড় বিশ্বাসঘাতক হিসেবে Wang Jingwei কেই ধরা হয়। তিনি ছিলেন চাইনিজ বামপন্থী দলের অন্যতম সদস্য এবং চীনের বিখ্যাত নেয়া সান ইয়াত সেনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী । সান ইয়াত সেনের মৃত্যুর পর তিনি দলনেতা হবার চেস্টা করেন , কিন্তু ব্যার্থ হন তবুও তিনি দল ছেড়ে যাননি ।
কিন্তু ১৯৩৭ সালে জাপান যখন চীনে আগ্রাসন চালায় , তখন সে আগ্রাসনের পক্ষে অবস্থান নেয় , চীনে পুতুল সরকার বসানো সহ এবং অন্যান্য প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে।
বিশ্বাসঘাতক হওয়া সত্ত্বেও তার ভাগ্য অনেক ভালো ছিলো , কারন তাকে কোন বিচারের সম্মুখীন হতে হয়নি , জাপানীরা পরাজয় বরন করার পূর্বেই তিনি মৃত্যুবরন করে।
রসেনবার্গ দম্পতিঃ
জুলিয়াস এবং ইথেল রসেনবার্গ । আমেরিকান এই দম্পতি মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে আমেরিকান পারমানবিক প্রযুক্তি সম্পর্কে অনেক গোপন তথ্য রাশিয়ানদের কাছে পাচার করে । ১৯৫৩ সালে তাদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়।
মীর জাফরঃ
এই ব্যাক্তির সম্পর্কে আর কি বলবো , এই উপমহাদেশে বিশ্বাসঘাতকতার সমার্থক শব্দ । যার জন্য আমাদের বরন করতে হয়েছিলো ২০০ বছরের পরাধীনতা ।
***
উপরের ছবির জঘন্য কীটগুলোর নাম আমি বললাম না , কারন তাদের নাম মুখে আনার সাথে কিছু জঘন্য গালিও চলে আসে , যেগুলো লিখলে মডুরা আবার রাগ করতে পারে । এই পর্ব সহ আর দুই পর্বে যাদের কথা বলেছি , তাদের সবার থেকেও জঘন্য হচ্ছে উপরের *****। দেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেই এরা থেমে থাকে নি , চালিয়েছে পৃথিবীর বর্বরতম গনহত্যা
এবং এখনো অবিরাম চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছে এই সোনার বাংলাকে পাকিস্তানে পরিনত করতে ।
এইরকম জঘন্য কাজ করার পরেও যাদের মধ্যে বিন্দুমাত্র অনুতাপ নেই ।
আর জাতি হিসেবে আমরাও কম অধম নই , কারন আমাদের মধ্যে অনেকেই তাদের বাচাতে আন্দোলনে নামে ,তাদের বসাতে চায় পবিত্র সংসদে , তাদের গাড়িতে লাগাতে চায় জাতীয় পতাকা । ধিক তাদের কে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।