যা চাই তাই-ই পাই,তাই পাই যাহা না পাই,যা না পাই তাই-ই চাই... তিন সেকেন্ডে তিন টুকরা হয়ে গেল মিঠু
তিন সেকেন্ডে তিন টুকরা হয়ে গেল মিঠু। পুরো নাম মিনহাজ উদ্দিন চৌধুরী ওরফে মিঠু (২২)। প্রথমে বিচ্ছিন্ন হয় তার বাম পা। পরক্ষণেই দেহের বাকি অংশ ছেঁচড়িয়ে প্রায় একশ গজ সামনে নিয়ে যায়। ট্রেনটি চলে যাওয়ার পর শরীর থেকে মাথাও বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে যায়।
গতকাল বিকাল তিনটার দিকে রাজধানীর কাওরানবাজার মাছের আড়ৎ সংলগ্ন রেললাইনে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, রেললাইনের ওপরে চামড়া ছিলানো একটি পা পড়ে আছে। ওই পায়ের সঙ্গে পেঁচিয়ে ছিল হেডফোন। কাওরান বাজারের দিকে প্রায় একশ গজ এগুতেই দেখা গেল মিঠুর থেঁতলানো দেহ। ধড় থেকে আলাদা শরীর উপুড় হয়ে আছে।
চার দিকে ছিটিয়ে আছে হাত ও পায়ের আঙুলগুলো। স্থানীয় লোকজন বলেন, কমলাপুর থেকে ট্রেনটি ছেড়ে রাজশাহী যাচ্ছিল। বিপরীত দিক থেকে হেঁটে চলছিল মিঠু। তার কানে হেডফোন ও চোখে চশমা ছিল। ট্রেনের হুইশেল বাজানোর সঙ্গে সঙ্গে একাধিক মহিলা তাকে সতর্ক করেছিলেন।
লাইন থেকে নামার জন্য অনেকে চিৎকারও করেছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী রশিদ বলেন, মনে হচ্ছিল কোন কথাই তার কানে যাচ্ছিল না। এরপরেই দ্রুতগতির ট্রেনের ইঞ্জিনবগির চাকায় তার এক পা কাটা পড়ে। বাকি দেহ ছেঁচড়িয়ে সামনে নিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলের পাশে থাকা র্যাবের একটি টহল টিম নিহত যুবকের পকেট থেকে মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ, জাতীয় পরিচয় পত্র ও সাইফুরসের একটি কার্ড উদ্ধার করে।
এসবের সূত্র ধরে নিহতের পরিচয় উদ্ধার করে তার পিতা ও বন্ধুদের খবর দেয়। নিহতের পিতা ফকরুল চৌধুরী পল্টনের হোটেল ক্যাপিটালের অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার ছেলে কেন এখানে এসে এভাবে মারা পড়বে। মিঠুর মায়ের বরাত দিয়ে তার বন্ধু শওকত বলেন, রাজারবাগ শহীদবাগের ৯১২ নম্বর নিজের বাড়ি থেকে সকালে বের হয়েছিলেন মিঠু।
মাকে বলেছিলেন, মোবাইল মেরামতের জন্য মোতালেব প্লাজায় যাবেন। তবে কাওরান বাজারে যাওয়ার কারণ বলতে পারেননি। তিনি বলেন, মিঠু এ বছর সিদ্ধেশ্বরী কলেজ থেকে বিএ পাস করেছেন। পাশাপাশি এমবিএ পড়ছেন সাইফুর’স প্রতিষ্ঠানে। তাকে বিদেশে পাঠানোর চেষ্টা চলছিল।
বাবা-মার তিন সন্তানের মধ্যে মিঠু ছিলেন একমাত্র ছেলে। তার ছোট আরও দুই বোন রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী রবিনা বলেন, ট্রেন আসতে দেখেই আমি দ্রুত রেল লাইন ক্রস করে নিরাপদ দূরতে চলে যাই। যাওয়ার আগে ওই ছেলেটিকে লাইন থেকে নামার জন্য বলি। কিন্তু আমার কথা না শুনে সে হাঁটতেই থাকে।
মনে হলো, ছেলেটি ইচ্ছা করেই মরলো। দেখতে দেখতেই টুকরা টুকরা হয়ে গেল।
আল্লাহ তাকে মাফ করুক,
বেহেস্তে নসিব করুক।
মানব জমিন ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।