স্কুল থেকেআসার পথে একটা গার্লস স্কুলের পাশে এক লোক বসা থাকতো টিয়া নিয়া। সেই টিয়াওয়ালার ব্যাপক ক্ষমতা। টিয়া দিয়া ভাগ্য পরীক্ষা, ভবিষ্যৎ বলার পাশাপাশি তিনি চুলনাকি নাশক বিক্রি করতেন। সেই লোকের আয় নিয়া আমার এখনও অনেক সন্দেহ। প্রতিদিন দেখতাম অসংখ্য মানুষ তাকে টাকা ছুড়ে দিচ্ছে।
টাকার বন্যা হইয়া যাইত। কিন্তু প্রায়ই ফেরার পথে তাকে দুপুর বেলা শুধু রুটি আর চা খেতে দেখতাম। এত টাকা যেত কই?
সকাল আর বিকেল বেলায় দুটি সময় অনেক লোক ঐ লোকটাকে ঘিরে থাকত? সবাই কি করত তা দেখার সুযোগ আমাদের কখনোই হয়নি একটা নিদিষ্ট বয়স পর্যন্ত। স্কুলের অনেক বড় ভাইরা দেখলেই দৌড়ানি দিত। যা ভাগ।
ঐলোকটা একটু পর পর বলত ছোট নাবালক পুলাপাই চলে যাও। ছোট পুলাপাইনগুলাকে বাইর কইরা দেন।
অনেক বছর পার করতে হয়েছে সেই বিশেষ কথা এবং ছবিগুলা দেখার ভাগ্য অর্জন করতে। অনেকেই তার কাছ থেকে বিশেষ বড়ি কিনলে একবার ফ্রি ভাগ্য পরীক্ষা কইরা দিতেন। আবার কারো বা ভাগ্য পরীক্ষা করলে ফ্রি ছবি দেখার সুযোগ মিলত।
ছোটবেলায় সেই লোকটাকে কত ক্ষমতাশীল মনে করতাম। হাজারো রোগের বড়ি তার হাতের মুঠোতে।
আমি সেই লোকের কাছে আমার ভাগ্য পরীক্ষা করিয়েছিলাম। টিয়া দিয়া পরীক্ষার ফলাফল কাগজে লেখা ছিল আমি অনেক সুনাম অর্জন করব। আমি জিজ্ঞাসা করলাম ভাই এই টিয়া কি সত্যি ভাগ্য বলতে পারে ।
টিয়াওয়ালা কইল আল্লাহর বোবা প্রাণী মিথ্যা বলবে কেন? আমি আমার ভাগ্য ভাল এইটা জেনেই খুশি। টিয়া আর কাউয়া যে আমার ভাগ্য ভাল কইব আমি তাই বিশ্বাস করি।
এখন অনেক সময় পার করলাম। সেই ক্ষমতাশালী ভাগ্য পরীক্ষরা এখন আরও শক্ত অবস্থান। প্রযুক্তির উন্নতির ফলে ঐ সর্বরোগের বড়ি বেচা লোকগুলাকে খুবই শক্তভাবে আকড়ে থাকে সমাজে ।
দেশের যেকোন সমস্যায় তাদের কাছে ছুটে চলে টিভি ক্যামেরা। তারা দেশের ভাগ্য পরিক্ষা করেন টিয়া দিয়া। সাথে বড়িও দিয়া দেন। সেই বড়ি নিয়া দেশ বেশ কয়দিন ব্যাপক মাখামাখি কচলাকচলি চলে। আমরা শহরে পুলাপাই বড়ি বিক্রেতা আর ভাগ্যওয়লার কাছে যাইত মূলত ছবি দেখার উদ্দেশ্য নিয়া।
এই বড়ি বিক্রেতার কি দেখায়া জানি না তারপরও এখনও মানুষ/মিডিয়া তাদের কাছে ছুটে ভাগ্য পরিক্ষা করতে বড়ি কিনতে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।