আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

- যখন 'বনলতা সেন ' পড়তাম ! ...এবং...এখনকার ' বনলতা সেন ' পড়া !

''' কারাগারে দ্বারি গেলে তখনই কি মুক্তি মেলে আপনি তুমি ভিতর থেকে চেপে আছো যার দারখান ! '' . নজরুলের মতো এই বিশ্বাসে বিশ্বাসী । রবীন্দ্রনাথের মত আমিও এই বিষয়ে সচেতন যে , '' বোঝা যায় আধো প্রেম , আধখানি প্রেম সম্পুর্ন তার কে বুঝেছে কখন ! '' -- তাই সব '' হাজার বছর ধরে আমি পথ হাটিতেছি পৃথিবীর পথে ! '' - ... এখানে জীবনানন্দ দাশ বুঝিয়েছিলেন ভালোবাসার ব্যাপ্তির কথা ... প্রেম-ভালোবাসা কখনো সময়ের সংকীর্নতায় আবদ্ধ নয় , এটা অসীম , অনন্ত ...আর পরিপুর্ন ব্যাখ্যা করা যায় না বলেই তা রহস্যাবৃত এবং সুন্দর । তাইতো সিঙ্ঘল সমুদ্র, মালয় সাগর পেরিয়ে এক ক্লান্ত-প্র ান পথিক-কবি তার পথিকবৃত্তির শেষ ঠিকানা , আশ্রয় খুঁজেছেন বনলতার সৌন্দর্য্যে । এখানে ভালোবাসার আকুতি নিয়ে যে চিরপথিকবৃত্তি তা অবশেষে খুঁজে পেয়েছে শেষ গন্তব্য । চারিদিকে জীবনের এত কোলাহলের মাঝেও পথিকরুপী কবি দুদন্ডের শান্তি খুঁজে পেয়েছেন বনলতা সেনের প্রেমে ! ( এখন যেমনটি দেখি ভার্সিটির সিনেট ভবনের বেঞ্চিতে, সন্ধ্যায় গাছতলার অন্ধকারে প্রেমিক প্রেম খুঁজে পায় প্রেমিকার উন্মত্ততায় ! ... আশাকরি তেমনটি নয় ! ) '' চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা, মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য '' - ...কবির আজন্ম সৌন্দর্য পিপাসু পথিক-দৃষ্টি অবশেষে গিয়ে বিঁধল বনলতার চোখে ।

বনলতার অন্ধকার মেঘের ন্যায় চুল কবিকে মনে করিয়ে দেয় সেই প্রাচীন বিদিশা নগরীর নিঝুম কোন এক রাত্রির কথা , তার মুখ যেন শ্রাবস্তী নগরীর কারুকার্যময়তায় অনুপম ; যা দিকভ্রান্ত পথিককে সঠিক পথে চালিত করে , কবি খুঁজে পান পথের সন্ধান । পাখির নীড় যেমন পাখির আশ্রয় , কবির আশ্রয় তেমনি বনলতা সেন । ( ... এখন কি আর একজনের কাছে আশ্রয় মেলে ! ... কি নারী কি পুরুষ ! ... ভালোবাসার আশ্রয় পাওয়া এখন আর চারটিখানি কথা নয় !... তাই সেই আশ্রয় খুঁজতে এক নারী থেকে অন্য নারীতে, এক পুরুষ থেকে অন্য পুরুষে আমরা সতত আবর্তনশীল । ) '' সব পাখি ঘরে আসে-সব নদী-ফুরায় এ জীবনের সব লেনদেন;... থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন'' - সব পাখি যখন ঘরে ফেরে , ডানার রোদ্রের গন্ধ যখন মুছে ফেলে চিল অর্থাৎ জীবন সায়াহ্নে যখন শিশিরের নিস্তব্ধতা আর জোনাকির আলো থাকে চারিদিকে ; সেই নিস্তব্ধতা শান্তির ভিতর কবি যেন মুখোমুখি বসে থাকেন তার প্রেমের সামনে ভালোবাসার নিগূঢ় অনুভবে । জীবনের সমাপ্তিতে কবির ভালোবাসার মৃত্যু হয় না বরং তা বেঁচে থাকে পুর্বাপর সকল ভ্রমনে , কবির মননে , তার চিরপথিকবৃত্তির আবর্তনে ।

( শারীরিক চাহিদা নিবৃত্তি থেকে যেখানে প্রেমের জন্ম নেয়... আর অশ্লীল আলাপনের মধ্য দিয়ে যার পরিপুষ্টি , সেখানে একথা বললে খুব হাস্যকর শোনাবে যে , ভালোবাসা বা প্রেমের প্রকৃত আনন্দ বিরহে , না পাওয়ার অতৃপ্ততায় , ভাবের গভীরতায় । ) ... আসলে যে সব কবিরা বা সাধারন মানুষেরা বিরহে সুখ খুঁজেছেন বোধকরি তারা পাগল বৈ আর কিছু নন আমাদের কাছে । মাঝে মাঝে ভ্রম হয় , - এই যান্ত্রিক সময়ে ভালোবাসা বোধকরি কারো আরাধ্য নয় এটি একটি প্রয়োজন মাত্র ! ... ... ... ... ... এস এম মামুন ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।