আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আ লিটল জার্নি বাই টেম্পু ফ্রম মাইমেনসিং টু ফুলবাড়িয়া উইথ আ স্ট্রীট চাইল্ড

ইসলাম একটি রাজনৈতিক মতাদর্শ, এটা অস্বীকার করার মতো বোকামি ধার্মিকরা করতে পারেনা ০৭.০৯.২০১২ তারিখ শুক্রবার, সকাল ৯.৩০ মিনিট ময়মনসিংহ শহরের চড়পাড়া মোড়, রোদ প্রচণ্ড রোদ ! চামড়া ভেদ করে যেনো গায়ের মাংস পুড়িয়ে দিচ্ছে। দাড়িয়ে আছি একটা সিএনজি অটোরিক্সা অথবা টেম্পু রিজার্ভ করার জন্যে, কিছু স্যানেটারি সরঞ্জামাদি নিয়ে ফুলবাড়িয়ার গ্রামের বাড়িতে যেতে হবে। অনেকক্ষণ ধরে কোনো গাড়ি পাচ্ছিনা, গাড়ি যা আসছে আনন্দমোহন কলেজের দিকে ছুটছে সেখানে কিসের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভাড়াও বাড়িয়ে নিচ্ছে তাই অন্য রুটে ভাড়া খাটার গাড়ি পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়লো। অবশেষে পেলাম একটা টেম্পো, ২০০ টাকা ভাড়াতে।

আমি আর ৬টা টাইলেসর প্যাকেট যাবে, হুট করেই বসয় ৬ বা ৭ হবে একটা পথ শিশু গাড়িতে লাফিয়ে উঠলো, আমি নামিয়ে দিতে চাইলেও ড্রাইভার বললো থাক, সমস্যা নাই। শিশুটার যা অবস্থা, রাস্তায় ঘুমানো আর রাস্তায় খাওয়া পুরো শরীরটা এত্তো ময়লা, মুখটা ময়লায় ছোপ ছোপ আর দাতগুলোও। কারো গায়ের সাথে গা ঘেষলেই ময়লা লেগে যেতে বাধ্য। তবে স্বাস্থ্য ভালো। আমি এক দৃষ্টে দেখছি ছেলেটাকে, অসহায় হয়ে ভাবছি- কিছু করতে পারতেছিনা এদের জন্যে, এদের আমরা গড়ে তুলতে পারছিনা দেশের কল্যাণের কাজে, আমাদের ব্যর্থতা আমাদের লজ্জা যদিও গাড়িটা রিজার্ভ করেছিলাম যেহেতু সিটগুলো সব ফাকা তাই ড্রাইভারও কিছু উপরি ইনকামের আশা করছিলো, কিন্তু সিটে এই রকম একটা নোংরা ময়লা ছেলে বসে থাকায় গাড়িতে কেউ উঠতে চাইছিল না তবু দু'একজন উঠে আমার পাশে বসলো।

গাড়ি কিছু দূর যাওয়ার পথ শিশুটা ঘুমাতে শুরু করলো ঢুলে ঢুলে, প্রচন্ড ঘুমে পড়ে যেতে চাইছে, একবার ধমক দিলাম ঘুমাচ্ছিস কেন্ পড়ে যাবি তো, কে শোনো কার কথা, ও ঘুমিয়েই যাচ্ছে, একবার ঢুশ দিয়ে আমার হাটুতে ওর মাথা লাগলো, মনে হয় কিছুটা ব্যাথাও পেলো (মুখে বিরক্তিরছাপ স্পষ্ট)। ওর শরিরের কিছু ময়লা আমার জামায়ও লেগে গেলো, আমি রেগে ওঠেও সামলে নিলাম, চিন্তা করলাম আমিও সকীর্ণতার উর্দ্ধে উঠতে পারতেছিনা , জামায় সামান্য ময়লা লাগাও আমাকে রাগিয়ে দিচ্ছে। এরই মধ্যে একজন বয়স্ক নারী আমার পাশে বসেছেন, তিনিও বারবার ছেলেটা সতর্ক করছেন এই বলে: '' এই ছেড়া, ঘুমাইস না, পইড়া যাবি তো '' কিন্তু তার কোনো গা-গরজ নেই, সে আপন মনে ঘুমাচ্ছেই ড্রাইভার কে বললাম, এই তোমার পোলা (গাড়ির হেল্পার হবে হয়তো) তো যেভাবে ঘুমাচ্ছে, গাড়ি থেকে ছিটকে পড়বে তো ! ড্রাইভার একপলক পেছন ফিরে দেখলো টেম্পোটা দাপুনিয়া বাজার আসলে ড্রাইভার পোলাটাকে ধমক দিয়ে উঠলো: '' এ্যাই রহিম, নাইম্যা যা, ছেলে: না সূচক মাথা নাড়লো, ড্রাইভার: যা গিয়া ঘুমা গা, ছেলে: করুণ মুখে না সূচক মাথা নাড়লো, ড্রাইভার: ক্ষেপে গিয়ে পেছনে আসতেই ছেলেটা লাফিয়ে নেমে ড্রাইভারকে মিনতি শুরু করলো তার সাথে রাখতে, খুব করুন চোখের মিনতি না, ড্রাইভার শুনলোনা তার মিনতি ছেলেটাকে নামিয়ে দিয়ে আমাকে আবার চলতে শুরু করলো গন্তব্যের দিকে। বাড়ির সামনে এসে থামলো গাড়িটা, নেমে ভাড়া দিলাম ২০০ টাকা, তার আরো দশটাকা বেশির আর্জি, দিলাম মালপত্র মাথায় নিয়ে ছুটলাম বাড়ির দিকে ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।