আবীর শাকরান মাহমুদ ইহা একখানা নাস্তিকতাবিরোধী লেখা।
নিজ দায়িত্বে ভাবিয়া পড়িবেন,
আর নাহয় পড়িয়া ভাইবেন। কিন্তু, গাল দিয়েন না।
..........................................
ভাইসব, একটা কথা কেন ভুলে যান?
আকাশের দিকে এক দলা থুথু মারলে আকাশ কতটা দূষিত হয়?
তার চেয়ে দূষিত হওয়ার সম্ভাবনা আপনার বেশি।
ধর্ম আপনি একা দূষিত করতে পারবেন না।
তেমনি ধর্মের কোন ঠেকাও পড়েনাই যে, আপনি একটা প্রাণী ধর্মকে না মানলে তা নাস্তানাবুদ হইয়া পড়বে।
আবার, আপনি একা পালন করলেও ধর্ম খুশিতে গদগদ হইয়া সার্থক হবে না।
আমার এক এথিস্ট ফ্রেন্ডের গল্প বলি। তার ফেসবুক একদিন ডিএক্টিভেট পাইলাম।
মাথায় একটা বুদ্ধি খেলল।
ফোন করলাম তারে।
-দোস্ত, কাল এরকম অশ্লীল স্ট্যাটাস আপডেট দিসস কেন?
-ফাযলামি বন্ধ কর।
-কিসের ফাযলামি? তুই এত বড় স্ট্রেট ফরোয়ার্ড কাজ কইরা ফেললি, তোর কাহিনী জানব না? ছ্যাঁকা-টেকা খাইসস?
-কী যা তা কইতেসস। আমার একাউন্ট তো ডিএক্টিভেটেড।
-তো কী হইসে?
-ধুররো।
আরে আমি তো একাউন্টে ঢুকিইনা কয়েকদিন। বেহুদা স্ট্যাটাস আপডেট হইব কইথেকে?
আমি অল্প কইরা একটু কাশি দিলাম।
-দোস্ত, বুঝলাম, তুই আল্লাহ-খোদা মানস না। তাইলে আমারে বুঝা, ভার্চুয়ালি একটা ফেসবুক একাউন্ট থেকে যদি আপনা-আপনি একটা সামান্য স্ট্যাটাস আপডেট না হতে পারে, তাইলে এত্ত বড় লক্ষ লক্ষ লাইটইয়ার ব্যাপ্ত এই বিশ্ব নিজে নিজে আসে কইথেকে?
এটাই কথা।
হতে পারেন আপনি নাস্তিক।
আমি বলার কে? আমি মূর্খ মানুষ। কারো যদি মনে হয়, এ দুনিয়া শূন্য থেকে এমনি এমনি গজাইসে,
মানুষ, পশু-পাখি, জন্তু-জানোয়ার সব আপনা-আপনি নাযিল হইসে ইচ্ছেমত, আমাদের কোন পরিণতি-মহাপরিণতি নাই...
-মানেন...
আমি মানা করার কে?
কিন্তু আপনি কাম নাই-কাজ নাই- আমার ধর্মকে তো গালি দিতে পারেন না।
আমার ধর্ম অন্য ধর্মকে গালি দিতে শিখায় নাই। বরং জোর দিয়ে বলসে,
“শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
(১) বলুন, হে কাফেরকূল,
(২) আমি এবাদত করিনা, তোমরা যার এবাদত কর।
(৩) এবং তোমরাও এবাদতকারী নও, যার এবাদত আমি করি
(৪) এবং আমি এবাদতকারী নই, যার এবাদত তোমরা কর।
(৫) তোমরা এবাদতকারী নও, যার এবাদত আমি করি।
(৬) তোমাদের কর্ম ও কর্মফল তোমাদের জন্যে এবং আমার কর্ম ও কর্মফল আমার জন্যে”
-সূরা কাফিরূন।
মুহম্মাদ (স) তো বলেছেনই, “ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কর না। ”
তাইলে আপনি যদি এতই আদর্শবান হোন, আপনি কেন ভাই আমারটা নিয়া টানাটানি করেন?
তবুও বলি, নাস্তিকতাও একটা ধর্ম।
একটা বিশ্বাস। একটা মূল্যবোধ। মানেন আর না মানেন। আর এজন্যই ফেসবুকে Religious Views এ atheist অপশনটা দিসে। তাই বলে, আপনি লক্ষ লক্ষ পয়গম্বর শোভিত আমার ধর্মের শাপ-শাপান্ত করবেন এটা আমি মেনে নিব কেন?
নিজে যেটা বিশ্বাস করেন, সেটা ভালোভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করেন।
অন্যকে গালি দিয়া নয়। আমার ধর্মকে গালি দিতে আপনার যে বুদ্ধিমত্তার প্রয়োজন, তা আপনি তিনবার জন্মাইয়া আসলেও হবে না।
তবুও বলি, আপনি হয়ত পাশ্চাত্য কাউকে না কাউকে দেখে প্রভাবিত হয়ে এ ধরণের নাস্তিকধর্মী চিন্তা বেছে নিয়েছেন। ভাল। তবুও অনুরোধ, উনাদের অনুসরণ করুন।
উনারা ধর্মের বিপক্ষে কথা বলেছেন মাত্র। কিন্তু স্পেসিফিকালি গালা-গালির তুবড়ি ছুটান নি।
আচ্ছা তবুও ধরে নিলাম, কোন এক সময়ে উনাদের কেউ একজন গালি দিয়েছেন আমার ধর্মকে। তাহলে,
ভাই, একটা কথা ভুলে যান কেন?
আপনার প্রয়োজনেই আপনি ধর্ম পালন করবেন। এতে ধর্মের কোন লাভ নাই।
লাভ আপনার, আমার।
আর কেউ যদি ধর্ম পালন নাও করেন, ধর্মের তাতে কোন ক্ষতি নাই। ক্ষতি আপনার, আমার।
আমার কথাই বলি, ধর্ম আমার কোন অধর্ম করেন নি। বরং, ধর্ম আমার নীতি-নৈতিকতাকে শাণিত করেছে।
বিবেককে করেছে সংযমী। চরিত্রকে হয়ত ফুলের মত পবিত্র করেনি, কিন্তু তা ধর্মের দোষ নয়। দোষ আমার নিজের। ভাই, আমিও পারফেক্ট মানুষ না। খারাপ কাজ জীবনে কম করিনাই।
কিন্তু, তবুও আমি একটা মিথ্যা কথা বলার আগে ধর্মের কথা ভেবে পিছপা হই। এটা ভেবে না, এই মিথ্যা বললে আব্বা-আম্মা কি আমাকে মাইর দিবে? অথবা, মানুষ আমাকে নিয়ে কি ভাববে...
তাহলে, যদি ধর্ম কোন অধর্মই না করে, তাহলে ধর্ম পালন করতে দোষ কই?
নেগেটিভিটি সব কিসুতেই আছে। এটাও বেঠিক না, ধর্ম নিয়া অধর্ম কম হয়নাই। কিন্তু ভুলে গেসেন, এক ফুল থেকে মৌমাছি আহরণ করে মধু। আর, মাকড়শা বিষ।
(বত্ব, আমি এই রেফেরেন্সটির সত্যতা নিয়ে ১০০% নিশ্চিত না। ছোটবেলায় কোন না কোন এক বাংলা রচনায় পড়েছিলাম। কেউ এ বিষয়ে পন্ডিত হইলে আমাকে ধন্য কইরেন কিছু ধার দিয়ে...)এখন কেউ যদি ধর্ম নিয়ে অকাজ করতে চায়, সে বিবেকের কাছেই একদিন বিব্রত হবে। ধর্মকে ইউজ করার কারণে।
যেমন হবেন আপনিও, ধর্মকে অবমাননা করার কারণে।
হুম। সত্যি এটাই। আপনার বাবা-মায়ের দিকে তাকান। উনাদের মত বয়স আপনাদেরও একদিন হবে। এরকম ওয়ার্ম ব্লাডেড যৌবন সেদিন থাকবে না।
এদেশের মানুষের গড় লাইফ এক্সপেন্টেন্সি ৬০ বছর (এপ্রক্সিমেটলি)।
ভেবে দেখসেন কি যে, আপনি লাইফের গড় তিন ভাগের এক ভাগ খরচ করে ফেলসেন। কী করলেন এই লাইফে? আর কিসুদিন যাক। নিজের যখন সন্তান-সন্ততি হবে, তাদের সেফটির জন্য তখন উপরওয়ালাকে ঠিকই ডাকবেন। রোগ-ব্যাধি যখন আস্তে আস্তে বাসা বাঁধবে দেহের অর্গান-সিস্টেমে, তখন ক্ষমা চাইবেন খোদার কাছে।
বলাই বাহূল্য, নাস্তিকতা তখন পিছনের দরজা দিয়ে পালাবে।
সে দরজা- আপনার ঘরেরই হোক। আর নিজের দেহেরই হোক।
তখন এসে বইলেন না, ভাই, আপনি যা বলসিলেন, ঠিক বলসিলেন...
আমি এক কাঙ্গাল।
কাঙ্গালের কথা বাসি হলে ফলে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।