আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উই আর ব্লাডি ইন্ডিয়ান !

শুনেছি বৃটিশরা নাকি ভারতিয়দের, মানে আমাদের পুর্বপুরুষদের ব্লাডি ইন্ডিয়ান বলে গালি দিতো । গালি নাকি আরো অনেক গুলৈ দিতো ; যেমন ব্লাডি ব্ল্যাক ইত্যাদি। কিন্তু ওরা ব্লাডি ইন্ডিয়ান বলে যে গালি টা দিতো, সেটা যে একেবারেই সঠিক দিতো, তার প্রমান পেলাম । গতকাল ছিলো ভারতিয় সিনেমার শত বর্ষ উদযাপনের উদ্বোধনি আলোচনা অনুষ্ঠান । যাদুঘর মিলনায়তনের ঐ অনুষ্ঠানে মার্কিন রাষ্ট্রদুত, ভারতিয় রাষ্ট্রদুত, দুতাবাসের কালচারাল সেক্রেটারি, বাংলাদেশের সংস্কৃতি সচিব, তথ্য মন্ত্রি, বিখ্যাত ভারতিয় চলচ্চিত্র ব্যাক্তিত্ত 'উমরাও জান' ছবির পরিচালক মুজাফ্ফর আলি, ফারুক শেখ প্রমুখ ।

আমার যেতে ১টু দেরি হয়েছিলো; তাই মুজাফ্ফর আলির বক্তৃতা থেকে শুনতে শুরু করলাম । তিনি পুরো বক্তৃতাটা দিলেন ইংরেজি তে । হলের সর্বত্র তাকিয়ে দেখলাম মার্কিন রাষ্ট্রদুত ড্যান মজিনা আর তার সঙ্গি ছাড়া হিন্দি বা বাংলা না বোঝার মতো আর কেউ নেই । আর আমার বিশ্বাস ইংরেজির চেয়ে আমাদের দেশের যে কোন মানুষ হিন্দি বোঝে ভালো; ভারতিয়রা তো অবশ্যই । আরেকটা প্রমান দেই হিন্দি ভাষার সহজগ্রাহিতার ।

আমার ৫ বছরের বাচ্চা টিভি দেখে হিন্দি শিখে ফেলেছে, বাসায় সে বাংলার চেয়ে হিন্দিতে বাতচিত করতে পছন্দ করে । যে যাই বলুক, আমি তাতে খুশি । কারন মুফতে এমন সুন্দর আর প্রতিবেশি ভাষা শিখেছে । কিন্তু সে ইংরেজি অনুষ্ঠান নিয়মিত দেখার পরও, ইংরেজিতে অতো সঠিক আর ফ্লুয়েন্টলি কথা বলে না । যাই হোক ভারতিয় পক্ষের কেউই হিন্দি বা বাংলায় কোন কথাই বললেন না।

এটা দুতাবাসের কোন বাধাধরা কোন নিয়ম বলে আমার মনে হয় না । কারন আগের রাষ্ট্রদুত পিনাক রঞ্জনকে দেখেছি সবখানে বাংলায় কথা বলতে । যথারিতি আমি তাদের অর্ধেক কথা বুঝলাম আর অর্ধেকে মনযোগই দিতেপারলাম না । আমার যে বন্ধু আমাকে ইনভাইট করেছিলো তাকে এ ব্যাপারটা বললাম । সে নানান যুক্তি দেখাতে লাগলো , তাদের ইংরেজিতে কথা বলার স্বপক্ষে ।

আমার কোনটাই গ্রহনযোগ্য মনে হলো না । যেই বললাম আজ রাতেই এ নিয়ে লিখবো ; সে বলে বসলো, এতো প্যাচালে কেমন হবে ! আমি বললাম, আমিলেখক, আমি তো প্যাচাবৈ । অথবা সবাই যেটা সাভাবিক ভাবে নেবে, আমি সেটা প্যাচাই বলেই তো আমি লেখক ; ওটাই তো আমার যোগ্যাতা-বৈশিষ্ট । যা বলছিলাম, আচ্ছা, আপনারা আমাকে বলুন তো -ভারত তাহলে কোন মরাল বা নোবল রিজনে বৃটিশদের কাছ থেকে স্বাধিন হয়েছিলো ! আজকের ভারত অর্থনৈতিক ভাবে তো বৃটিশ কলোনির চেয়ে বেশি উন্নতি করতে পারে নি ! এটা অবশ্য আমার নিজের স্টাডি, সবাই একমত নাও হতে পারেন । আমি মনে করি, ইউরোপিয়ান সাম্রাজ্যবাদ দেশে দেশে রেনেসার মতো বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে ।

এর ঐতিহাসিক প্রমান ভারত, কানাডা, আমেরিকা, অষ্ট্রেলিয়া, সাউথ আফ্রিকার ইত্যাদি। পাঠকরা, দয়া করে ১টু ভেবে দেখুন তো আমেরিকার রেড ইন্ডিয়ানরা, অষ্ট্রেলিয়ার এ্যাব অরিজিনালরা বা সাউথ আফ্রিকার ব্ল্যাকরা কি ঐ দেশ গুলো এতো সুন্দর করে গড়তে পারতো ! এটা আমার সাধারন মতামত, চাইলে এ নিয়ে অনেকে অনেক গভির বিতর্ক করতে পারেন । অর্থনৈতিক ছাড়া আর কারন হতে পারে ঐতিহ্য রক্ষা । সেটা অপ্রয়োজনে ইংরেজি ভাষায় কথা বলে কি ভাবে রক্ষা হবে, সেটা আমার বুদ্ধিতে আসে না । অর্থাত ওরা উদ্বোধনেই ভারতিয় চলচ্চিত্রের ঐতিহ্যটাকেই অগ্রাহ্য করলো ।

আরো ১টা বিষয় না বলে পারছি না । এই লেখাটা লিখতে গিয়ে এর রেফারেন্স খুজতে বাংলায় লিখে সার্চ দিয়ে পেলাম আর ইংরেজিতে পেলাম । এখন আপনারাই দেখুন, আমি কেন এ কথা বললাম । আমার কাছে মনে হয়েছে, ইয়েস, উই আর দি ব্লাডি ইন্ডিয়ান; দে ওয়্যার রাইট । [ আমার 'ব্লাডি' সিরিজের পরের লেখাটি হবে, উই আর ব্লাডি সিভিলিয়ান ] ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।