জীবিত মানুষ হতে চাই। মিরাকল। এই শব্দটার প্রতি দুই দিন আগেও আমার বিশ্বাস ছিল না। কিন্তু গত দুই দিনে যা ঘটে গেল আমার সাথে তাকে মিরাকল ছাড়া আর কিইবা বলা যায়!কখনো কি ভাবতে পেরেছিলাম এমনটা ঘটবে। কল্পনা এভাবে বাস্তবতা হয়ে ধরা দিবে এটাও ছিল কল্পনার অতীত।
মাঝে মাঝে চিমটি কাটি শরীরে। নাহ,এক বিন্দুও ভুল নয় কোন কিছু। আবেগে আপ্লুত হই। আবার পুরো ঘটনাটা মনে করার চেষ্টা করি। শিহরণ জেগে উঠে সারা শরীরে।
সবকিছুর শুরু গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে। বাইরে থেকে ফিরে হাত-মুখ ধুয়ে সবে মাত্র ল্যাপটপ নিয়ে বসেছি। এমন সময় ফোন আসল মোবাইলে। দেখি একটা অপরিচিত নাম্বার। আমার মোবাইলে এমনিতেই ফোন আসে কম।
ভুঁরু কুঁচকে নাম্বারটার দিকে তাকালাম। চেনার চেষ্টা করলাম। পারলাম না। রিসিভ করতেই একটা মিষ্টি তরুণী কণ্ঠ হ্যালো বলল। চমকে উঠলাম।
এত সুন্দর কণ্ঠও হয়!কে হতে পারে?এমনিতে আমার তেমন ফোন আসে না। রং নাম্বার নয়তো!আমি জিজ্ঞেস করলাম-কে?
-সেজান বলছেন?
আরি!আমাকেই তো চাচ্ছে। আমি জড়সড় হয়ে বললাম-জ্বি বলছি। আপনি কে বলছেন?
আমি ফোনে ভালো করে কথা বলতে পারি না। আর মেয়েদের সাথে তো এমনিতেই কথা বলা হয় না বা পারি না।
তাই গলায় একটু অস্বস্তির ভাব।
-উম্মম,আন্দাজ কর তো!
লেও ঠ্যালা!আপনি থেকে সরাসরি তুমি!তাও আবার রহস্যময় ভঙ্গিতে। কাহিনী পুরা মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। গলাও চিনতে পারছিনা।
আমি কণ্ঠস্বর স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে বললাম-স্যরি,আন্দাজ করতে পারছি না।
আমার অনুমান শক্তি ভালো না। আপনি পরিচয় দিলে ভালো হয়।
-পরিচয় তো অবশ্যই দিব। কিন্তু তার আগে আমাকে তুমি করে বলতে হবে। সমবয়সী কেউ আপনি করে বললে ঠিক মানায় না।
-ও আচ্ছা। বলে একটু চুপ করে গেলাম। মাথার মধ্যে ভাবনার বিদ্যুৎ খেলে যাচ্ছে। এত হেঁয়ালি করে কথা বলছে কেন?ক্লাসে দু’একজন মেয়েবন্ধু ছাড়া আর কেউ আমার ফোন নাম্বার জানে না। তারা কেউ না এটা নিশ্চিত।
আর কে হতে পারে?কলেজের কেউ?কিন্তু এমন ভঙ্গিতে কথা বলতে পারে এরকম কারো সাথে তো আমার কস্মিনকালেও পরিচয় ছিল না। তাহলে?
-কি হল। কোথায় ডুব দিলে?
-‘স্মৃতিতে ডুব দিয়ে খুঁজে দেখলাম অতলে। কিন্তু চেনার মত কাউকে তো পেলাম না।
আমিও হেঁয়ালি করে উত্তর দিলাম।
উত্তর দিয়ে আমিও অবশ্য মজা পেলাম খানিকটা। জড়তা কাটতে চলেছে।
-বাহ,তুমি তো খুব সুন্দর করে কথা বলতে পারো। আই লাইক ইট।
-জ্বি ধন্যবাদ।
আপানার প্রশংসা পেয়ে আমি ধন্য হয়ে গেলাম। তা আপা,আপনি কি পরিচয় দিবেন না আমি ফোন রাখব?
-হা হা হা। আপা!আমাকে দেখলে কিন্তু আর আপা ডাকতে ইচ্ছা করবে না তোমার। আমি নিশ্চিত।
-আচ্ছা,আমি কি আপনাকে চিনি?
-চেনার তো কথা যদি তোমার স্মৃতিশক্তি একান্তই দুর্বল না হয়ে থাকে।
-তাহলে পরিচয় দিতে আপত্তি কোথায়?
-আপত্তি তো নেই। কিন্তু ফোনে আমি আমার পরিচয় দিব না। তোমার আমাকে খুঁজে বের করতে হবে। অবশ্য খুঁজে বের করতে যদি চাও।
-আমার এত শখ নাই আপনাকে খুঁজে বের করার।
-আচ্ছা,শখ না থাকলে না থাকুক। তার চেয়ে বরং চলো আমরা দেখা করি। করবে?
বলে কি মেয়ে!পরিচয় দিতে চায় না,আবার সরাসরি দেখা করতে চায়। তার মানে আমি নিশ্চিতভাবেই চিনি তাকে। কিন্তু ধরতে পারছি না কে সে।
হয়ত খুবই চেনাজানা কেউ,কিন্তু মগজের এন্টেনায় ধরা দিচ্ছে না। অনেক সময় হয় এরকম। দৃষ্টির খুব কাছাকাছি থাকে অথচ চোখে দেখা যায় না। যাই হোক,রহস্যের সূচনা করেছে সে। আমি না হয় রহস্য ভেদ করি।
আর সে নিজেই দেখা করতে চাচ্ছে। এক্ষেত্রে আমার অরাজি হওয়াটা মানায় না।
-ঠিক আছে। আপনি চাচ্ছেন যেহেতু দেখা করলাম। বলুন,কোথায় দেখা করতে চান?
-কাছাকাছি কোথাও দেখা করি।
কি বল?
-করা যায়। কিন্তু আপনার কাছাকাছি আর আমার কাছাকাছি কি এক হবে?আমি তো জানিনা আপনি কোথায় থাকেন।
-সমস্যা নেই। আমি জানি তুমি কোথায় থাক। আমিও কিন্তু তোমার কাছাকাছিই থাকি।
-তাই নাকি?
-জ্বি তাই। তাহলে আমরা কালকে দেখা করছি?
-কালকেই?
-হ্যাঁ। তুমি যদি কোন কাজে ব্যাস্ত না থাক তাহলে কালই দেখা করা যায়। তোমার আগ্রহেরও সমাপ্তি ঘটল।
-আমি কিন্তু এতটা আগ্রহী নই আপনি যতটা ভাবছেন।
আমি খুব সহজেই কোন বিষয়ে নির্লিপ্ত থাকতে পারি। দুই তিন দিন পর হয়ত ব্যাপারটা ভুলেই যাব। সুতরাং..
কথা শেষ করতে পারলাম না। তার আগেই সে বলে উঠল,-না না। থাক।
এত নির্লিপ্ত হবার দরকার নেই। আমরা কালকেই দেখা করছি। নভোথিয়েটার তো চিন,কাল দুপুরে চলে আস ওখানে। দেখা করি। একসাথে একটা শো ও দেখে ফেলা যাবে?কি বল?
বুঝলাম সে আগে থেকেই প্ল্যান করে রেখেছে।
ভালো। খুব ভালো।
জিজ্ঞেস করলাম,-আপনি কি একা আসবেন?
-কেন?সাথে কেউ থাকলে কি সমস্যা হবে?
-না,তা না। ভাবছিলাম আপনি যদি আপনার কোন বান্ধবীকে নিয়ে আসেন তাহলে আমিও না হয় আমার কোন বন্ধুকে নিয়ে আসব। একা একা বোর ও তো হয়ে যেতে পারি।
-আমি একাই আসব। তাহলে ঐ কথাই রইল। আগামিকাল আমরা দেখা করতে যাচ্ছি।
-হ্যাঁ,যদি বেঁচে থাকি।
-তা তো বটেই।
আচ্ছা,তুমি কি আসলেই আমাকে চিনতে পারনি?গলা শুনেও বুঝনি আমি কে?
-না। আপনার সাথে আমার আগে কোনদিন কি কথা হয়েছে?
-ফোনে কথা হয় নি ঠিকই। কিন্তু এমনিতে দু’একবার কথা হয়েছে। আমি ভেবেছিলাম তুমি চিনতে পারবে।
একটু কি বিষণ্ন শোনাল মেয়েটার গলা?কি জানি!
-স্যরি যে আমি চিনতে পারি নি।
তবে দেখা হলে চিনতে পারব বলে আশা করি।
-হুঁ। আচ্ছা রাখি তাহলে। আমি কাল বারটার মধ্যে থাকব সেখানে। তুমি চলে এস।
-ওকে।
-হুম,রাখি এখন। বাই।
আমি ফোন কাটার আগেই সে কেটে দিল। আমি পরলাম মহা ঝামেলায়?কি চায় সে আমার কাছে?আর মানুষটাই বা সে কে?সারারাত এভাবেই ভেবে ভেবে কাটল আমার।
আজ সকালে ঘুম থেকে উঠলাম নয়টায়। শেভ করলাম,গোসল করলাম। কি কাপড় পড়ে যাওয়া যায় কতক্ষণ ভেবে পরে পাঞ্জাবী পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। ওকে একটু ভড়কে দেয়া যাক। আমার বাসা থেকে নভোথিয়েটার যেতে খুব বেশি সময় লাগেনা।
জ্যাম না থাকলে আধা ঘন্টার মধ্যেই চলে যাওয়া যায়। তারপরও ঘন্টা খানিক সময় নিয়ে বের হলাম। কিন্তু সময়মতো পৌঁছাতে পারলাম না। দশ মিনিট দেরি হয়ে গেল। টিকিট কেটে নভোথিয়েটার এ ঢুকতে ঢুকতে ফোন দিলাম ওই নাম্বারে।
প্রথমবার রিসিভ করে নি। আবার ফোন দিতে গিয়েই আমার চক্ষু চড়কগাছ। ওই দূরে ওটা কে বসে আছে? অদিতি না?হ্যাঁ,অদিতিই তো। তবে কি ও ই সেই…। না না,তা কি করে হয়!ও নিজেই বলেছিল ওর বয়ফ্রেন্ড আছে।
হয়ত বয়ফ্রেন্ডের সাথে এখানে ঘুরতে এসেছে। আমি একটু আড়ালে গিয়ে দাঁড়ালাম যেখান থেকে আমি ওকে দেখতে পারি,কিন্তু আমি ওর চোখে পরবো না। সে একাই বসে আছে। আশে পাশে খুঁজলাম সেই মেয়েটি আছে কিনা। পরিচিত হলে তো দেখলেই চিনতে পারব।
না,নেই। আবার ফোন দিলাম মেয়েটাকে। আমার দৃষ্টি এখনো অদিতির দিকে। ফোন বাজছে। কিন্তু রিসিভ করছে না।
এখনো এসে পৌঁছায় নি হয়ত। রাস্তায় আছে তাই বুঝতে পারছে না। আমি আর ফোন দিলাম না। আমি তাকিয়ে আছি অদিতির দিকে। কিন্তু ও একা যে!কেউ নেই নাকি সাথে?ওই তো ও ব্যাগ খুলছে।
মোবাইলটা বের করল। দূর থেকে দেখে একটু ভূঁরু কুঁচকালো বলে মনে হল। তারপর ফোনটা কানে ধরল। কাউকে ফোন করছে মনে হয়। আমাকে আশ্চর্য করে দিয়ে আমার নিজের ফোনটা বেজে উঠল।
সে কি আসলে আমাকেই ফোন করেছে?আশ্চর্য! আমি ফোন ধরতেই জিজ্ঞেস করল-তুমি কোথায়? আমি অস্ফুট স্বরে বললাম,তুমি অদিতি? সে এদিক ওদিক তাকালো। তারপর হাসতে হাসতে বলল,এসে গেছ তাহলে?কোথায়?দেখছি না যে? আমি আড়াল ছেড়ে বের হয়ে এলাম। আমার দিকে তাকালো সে। মুখে হাসি। ধবধবে সাদা একটা জামা পড়ে এসেছে সে।
চুলগুলি খোলা। কয়েকটা চুল মুখের উপর এসে পড়েছে। হাত দিয়ে চুলগুলি সরাতে সরাতে উঠে দাঁড়ালো সে। কি অপরূপই না লাগছে ওকে!মনে হচ্ছে যেন একটি সাদা পরী দাঁড়িয়ে আছে। খুব ধীরে হেঁটে হেঁটে এগুচ্ছি তার দিকে।
পা যেন চলছেই না। এই সেই অদিতি যাকে আমি ভালোবাসি। অথচ আমি যেদিন তাকে জানিয়েছিলাম আমার ভালোবাসার কথা সেদিন ও কত সহজেই না করে দিল। বলেছিল ও আরেকজনের সাথে ইনভলভড। আমি তখন কিছুই বলতে পারি নি।
মোটামুটি নিশ্চিত ছিলাম যে রাজি হবে না। কিন্তু অন্য কাউকে ভালোবাসতে পারে এমনটা ভাবনাতেই ছিল না। তাই ও কথার পরে আমি আর বলার মত কিছু পাইনি। মাথা নিচু করে চলে এসেছিলাম। পরে এক বন্ধু বলেছিল যে তুই যদি তখন বলতি,গোলপোস্টে তো গোলকিপার থাকেই।
তাই বলে কি গোল হয় না!ও মজা করেই কথাটা বলেছিল। কিন্তু আমি বুঝতে পেরেছিলাম স্ট্রাইকার হিসেবে আমি দুর্বল। কিন্তু এখন তো মনে হচ্ছে সত্যি সত্যিই গোল দিয়ে ফেলেছি!
হঠাত করেই পেছন থেকে একজন সেজান ভাই বলে ডাক দিল। আমি তখন অদিতির কাছ থেকে কয়েক কদম দূরে। পেছনে তাকাতেই ভূত দেখার মত চমকে উঠলাম।
আমার হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে গেল। কলেজের ইউনিফর্ম পড়ে নীরা দাঁড়িয়ে আছে। তার চোখে মুখে অসম্ভব কোন কিছু আবিষ্কার করে ফেলার আনন্দ ঝলমল করছে। ওরা এই শহরেই আছে জানতাম। কিন্তু যোগাযোগ ছিল না অনেকদিন থেকেই।
ওর সাথে আবার দেখা হবে এমনটা কল্পনা করি নি। তাও আবার এমন একটা জায়গায়,এমন একটা মূহুর্তে। আজকে আমার ক্রমাগত হতভম্ব হবার পালা। নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করলাম। চট করে একবার অদিতির দিকে তাকালাম।
স্থির চোখে তাকিয়ে আছে সে নীরার দিকে। আমিও সেদিকে ফিরলাম। -আরে নীরা,কেমন আছো?অস্বস্তি নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম। অদিতি কি ভাবছে কে জানে! -জ্বি,ভালো আছি। তুমি ভালো আছো?সপ্রসন্ন দৃষ্টিতে জিজ্ঞেস করল নীরা।
ও আমাকে তুমি করেই বলত। আমার ছোট বোনের বান্ধবী ও। খুব ছোটবেলা থেকেই চিনি পরস্পরকে। -হ্যাঁ ভালো। তুমি এখানে কি করছ? -বন্ধুরা মিলে শো দেখতে এসেছি।
খেয়াল করলাম কিছুটা দূরে আরো কয়েকটা ছেলেমেয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করছে। সবার পরনেই কলেজের ইউনিফর্ম। -স্বাতীর কি খবর ভাইয়া?অনেকদিন ওর সাথে যোগাযোগ নেই। । কেমন আছে ও? -সে ভালো আছে।
এমন সময় নীরার হাতের মোবাইল বেজে ওঠল। মিসকল মনে হয়। সে তার বন্ধুদের দিকে তাকাল। তার মানে ডাক পড়েছে। বাহ,দুনিয়া তো ভালোই ডিজিটালাইজড হয়ে গেছে।
নীরা বলল-আচ্ছা ভাইয়া আসি। বন্ধুরা ডাকছে। শো এখনই শুরু হয়ে যাবে। আমি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। অদিতি কি রাগ করছে?করতে পারে।
আমি তাকালাম ওর দিকে। এদিকে আর তাকিয়ে নেই এখন বসে আছে। মোবাইল নাড়াচাড়া করছে।
নীরা আবার বলল-তোমার ফোন নাম্বারটা দাও তো সেজান ভাই। তুমি বাড়ি গেলে স্বাতীর সাথে কথা বলা যাবে।
আমি বললাম,তাহলে বাসার নাম্বারটা দিই। তাহলে আজকেই ওর সাথে কথা বলতে পারবে। -না না। তোমারটাই দাও। তোমার সাথেও কথা আছে।
নীরার কন্ঠে অস্থিরতা। -ও।
বলে আমি নাম্বার দিলাম। যাবার আগে বলে গেল ফোন দিবে শীঘ্রই। মহা মুসিবতে পড়া গেল।
কাছে যেতেই অদিতি জিজ্ঞেস করল-মেয়েটা কে?ওর গলায় রাগ কিংবা অভিমান নেই। বললাম ছোট বোনের বান্ধবী। অনেকদিন পরে দেখা ইত্যাদি ইত্যাদি। ও বলল-মেয়েটা তো মনে হয় তোমাকে ভালোবাসে। আমি বললাম-তাই নাকি? -ওর চোখ দেখলেই বুঝতে পারতে।
তুমি খেয়াল করো নি? এরকমটা অবশ্য আমারও মনে হয়েছে। কিন্তু ব্যাপারটা চেপে গেলাম। এই মূহুর্তটা নীরাকে নিয়ে কথা বলার জন্য নয়। অদিতি আবার বলল-তুমি ওর কাছ থেকে অবশ্যই দূরে দূরে থাকবে। আমি হেঁয়ালি করে উত্তর দিলাম-যে আমাকে ভালোবাসে তার কাছ থেকে কি দূরে থাকা উচিত?নাকি দূরে থাকা যায়? -যায় না।
কিন্তু দুইজনের কাছাকাছি কিভাবে থাকবে শুনি? আমি বুঝলাম ও ঘুরিয়ে কথা বলতে পছন্দ করে। তবুও যেহেতু সরাসরি কিছু বলে নি তাই পুরোপুরি আশ্বস্ত হওয়া যাচ্ছে না। হাজার হলেও মেয়ে মানুষ।
তাই আমিই সরাসরি জিজ্ঞেস করলাম-অন্যজনটা কে?সেটা কি তুমি? অদিতি হাসল। ওর মধ্যে কোন জড়তা নেই।
নার্ভাসনেসও নেই। তৈরি হয়েই এসেছে। তারপরও একটু কি বুক কাঁপছেনা ভেতরে ভেতরে?হৃদপিন্ডটায় নিশ্চয়ই হাতুড়ি পেটা চলছে ঢক ঢক করে। চলছে অবশ্যই। কিন্তু মুখে এর ছাপ নেই।
আশ্চর্য কঠিন এক মেয়ে! আমি কি বলব আর বুঝতে পারছি না। ও ফোন বের করেছে। কাকে যেন ফোন করল। মিনিটখানেক পরে শম্পা এসে উপস্থিত হল। বুঝতে বাকি রইল না যে সে ই এসবের নাটের গুরু।
শম্পা আমাদের ক্লাসমেট। আমি যে অদিতিকে পছন্দ করি এটা প্রথমে ওর সাথেই শেয়ার করি। সে ই আমাদের দুজনের প্রথম দেখা হবার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। অবশ্য আমাকে আগে থেকেই সাবধান করেছিল যে অদিতি রাজি নাও হতে পারে। আমি যাতে পরে মন খারাপ না করি।
কিন্তু মন খারাপ না করে থাকা যায় নি। যাকে ভালোবাসি সে যদি অন্য কাউকে ভালোবেসে থাকে তখন কোন আদমসন্তানের পক্ষেই মন খারাপ না করে থাকা সম্ভব হবে না। আমি শম্পাকে অগ্রাহ্য করে অদিতির দিকে তাকিয়ে বললাম,কিন্তু তুমি না বলেছিলে একা আসবে? -একাই তো এসেছি। আমি আর শম্পা দুজনে আলাদাভাবে এসেছি। তবে একা।
আমি বললাম-আচ্ছা।
তারপর অনেক কথা হল। জানলাম ওর বয়ফ্রেন্ডের কথাটা মিথ্যে ছিল। সরাসরি না বলতে চায়নি বলেই মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছিল। ভেবেছিল এটা শুনলে আমি হয়ত খুব তাড়াতাড়ি তাকে ভুলে যেতে পারব।
কিন্তু ভালোবাসার মানুষকে ভুলে যাওয়ার ক্ষমতা জগতসংসারে খোদাতায়ালা কাউকেই দেন নাই। আমি হতাশ হলেও ওর কথাই ভাবতাম সারাদিন। কত বিষাদী কবিতা লিখেছি ওকে না পেয়ে। হতাশার কথা,কবিতা নিয়মিত ফেসবুকে শেয়ার করা হত। ব্যাপারটা অনেকটা আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখার মত।
গন্তব্যহীন। কারণ ওর ফেসবুকে একাউন্ট ছিল না। বন্ধুরা সব সময় সান্ত্বনা দিত। কিন্তু এতে মন খারাপের ভাব কমত না একটুও।
শম্পা ভেবেছিল আমি ব্যাপারটা কাটিয়ে উঠতে পারব।
কিন্তু পারি নি আমি। ধীরে ধীরে ক্লাসে যাওয়া কমিয়ে দিতে লাগলাম। কারণ গেলেই ওর সাথে দেখা হত। খারাপ লাগা আরো বাড়ত। আবার যেদিন ক্লাসে যেতাম,আমি অনেকসময়ই ওর দিকে তাকিয়ে থাকতাম।
দু'একবার ধরাও পরেছিলাম। বুঝতে পারতাম ব্যাপারটা ওর জন্য যন্ত্রণাদায়ক। তখন আরো বেশি খারাপ লাগত যে আমার জন্য ওকে যন্ত্রণা পোহাতে হচ্ছে। তাই ক্লাসে যাওয়া আরো কমিয়ে দিলাম। পরীক্ষাগুলোতে খারাপ করতে শুরু করলাম।
এসব দেখে শম্পা অদিতির সাথে কথা বলে। ওকে বোঝাতে চেষ্টা করে যেন ব্যাপারটা নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবে। রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে বলেই হয়ত অদিতি এসব থেকে দূরে সরে থাকতে চাইত। শম্পাও নাছোড়বান্দা। মাঝে মাঝে কম্পিউটার ল্যাবে গিয়ে অদিতিকে নিয়ে আমার ফেসবুকে পোস্ট করা কবিতা আর হাহাকার মেশানো লেখাগুলি দেখাত।
তখন একটু একটু করে অদিতির আমার প্রতি করুণা হতে লাগল। সেই করুণা ধীরে ধীরে রূপ নিল ভালোবাসায়। তারপর দুজনে মিলে এই নাটক সাজালো। আচ্ছা করুণা থেকে যে ভালোবাসা সৃষ্টি হয় তার গভীরতা কতটুকু?স্থায়িত্ব কতটুকু?সেটা কি কেউ মাপতে পেরেছে?
অনেক তৃপ্তি নিয়েই বিকেলে মেসে ফিরলাম। অদিতির সাথে অনেকটা সময় কাটাতে পেরেছি বলে মনটা খুব ফুরফুরে লাগছিল।
এতদিনের হতাশার ভাবটা এক ঝটকায় মুছে দিয়ে গেল আজকের দিনটি। তবে মনটা যে খানিকটা খচখচ করছে তাও বুঝতে পারছিলাম। এতদিন পরে নীরার সাথে দেখা হল। তাও আবার এমন একটি দিনে। অন্তত আজকে দেখা না হলেও চলত।
অথচ কয়েকটা বছর আমি কাটিয়ে দিয়েছিলাম শুধুমাত্র একটাবার দেখা হবার অপেক্ষায়। কিন্তু হয় নি। পাঁচ বছরেরও বেশি সময় পর ওকে দেখলাম। কৈশোরের কোল হতে জেগে সে এখন তারুণ্যে পা রেখেছে। কিন্তু মুখখানা আগের মতই আছে।
হাসলে এখনো গালে টোল পড়ে। ওর সাথে এতদিন পর দেখা হল ঠিকই। কিন্তু বড্ড দেরি হয়ে গেল যে!বড্ড দেরি। যা ভেবেছিলাম তাই। রাতেই নীরা ফোন দিল।
উত্ফুল্ল ভঙ্গিতে কথা শুরু করল সে। কুশলাদি বিনিময়ের পর হঠাত জিজ্ঞেস করল,আচ্ছা সেজান ভাই,তোমার সাথে কতদিন পর কথা হচ্ছে!শেষ কবে কথা হয়েছিল সেটা মনে আছে? আমার মনে ছিল। এসব দিনগুলি আমি ভুলিনি কখনো ভুলবও না। মুখে শুধু বললাম,হ্যাঁ,মনে আছে। প্রায় বছর পাঁচেক আগের এক ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি একটি দিন ছিল।
-হুম। আমি জানতাম তোমার মনে থাকবে। তুমি আমাকে একটা প্রশ্ন করেছিলে। আমি বললাম,তুমি তো তার উত্তর দাও নি। -আমি কিন্তু চেষ্টা করেছিলাম।
তুমি আমাকে ভাবার জন্য একটা দিন সময় দিয়েছিলে। আমি বলেছিলাম আমি নিজেই তোমাকে ফোন করে জানাব। কিন্তু তোমার বাসায় জানুক তা চাওনি বলে না করে দিয়েছিলে। বলেছিলে তুমি নিজেই পরে যোগাযোগ করবে।
-বাসায় কিন্তু পরে ঠিকই জানানো হয়েছিল।
আমি বললাম। -হ্যাঁ,কিন্তু তাতে আমাদের কোন দোষ ছিল?সে সময় তুমি এতটা পাগলামি না করলেও পারতে। তুমি চাওনি তাই না জানানোটাই ঠিক করা হয়েছিল। আমি অবশ্য এর প্রতিবাদ করলাম না। কথা একবিন্দু ভুল নেই।
আসলেই আমি খুব বড় পাগলামি করেছিলাম। তার জন্য এখনো আমার লজ্জা হয়। তারপর আমি বলতে চাইলাম-কিন্তু আমার তখন কিইবা করার ছিল বল?তোমার সাথে যোগাযোগ করার সব পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমি তো শুধু উত্তরটা জানতে চাইছিলাম। শুধু হ্যাঁ অথবা না বলে দিলেই হত।
অবশ্য আমি সেসময় সেই পাগলামিটা না করলেও পারতাম। তার জন্য আমি দুঃখিত। কিন্তু তুমি পরে একবার যোগাযোগ করতে যদি। তোমার পক্ষে তো তেমন কঠিন ছিল না। -কঠিন ছিল না ঠিক।
কিন্তু সহজও ছিল না। আমাকে সবসময় চোখ চোখে রাখা হত। অথচ আমিও তোমাকে না ই হয়ত বলতাম। কিন্তু বাসায় কেউ চায় নি আমি তোমার সাথে যোগাযোগ করি। তারপরও লুকিয়ে ঈদের দিন তোমাদের বাসার ফোনে ফোন করেছিলাম।
ভাগ্য খারাপ ছিল। স্বাতী ফোন ধরে। -আমাকে চাইতে পারতে। স্বাতী নিশ্চয়ই মানা করত না! -তা হয়ত করত না। কিন্তু রিস্ক নিতে চাইনি।
আর তোমার কাছে যে নাম্বার ছিল তা আমার কাছে ছিল না। তাই বাসার নাম্বারে ফোন করেও তোমাকে চাইবার উপায় ছিল না। কারণ তুমি চাওনি তোমার বাসায় জানাজানি হোক। আমি কথাটা রাখতে চেয়েছি। ব্যাস এইটুকুই।
পরে তোমার বোকামির জন্যই সেটা প্রকাশ পেয়ে যায়। তার জন্য তুমি নিশ্চয়ই আমাদেরকে অভিযুক্ত করতে পার না। -আমি আসলে অভিযোগ করছি না। আমার অপরাধ আমি মেনে নিয়েছি। তবে এতটা দিনের মধ্যে তোমার একবারও মনে হয় নি আমি অপেক্ষা করে আছি।
-আমার কিছু করার থাকলে আমি অবশ্যই করতাম। সুযোগ খুঁজেছি,পাইনি। আর তখন আমার বয়স কম ছিল। এখন বড় হয়েছি। আর এতদিন ধরে তুমি অপেক্ষা করবে আমি ভাবি না।
তুমি কি এখনো অপেক্ষা করে আছো? আমি হেসে বললাম,শুনি তোমার উত্তর। যদিও জানি তা কি হবে। -সেজান ভাই,অবস্থা এখন অনেক বদলেছে। পাঁচ বছর আগে আমি কিছু না ভেবেই হয়ত কিছু একটা বলে দিতাম। কিন্তু ধীরে ধীরে বয়স বাড়ল।
অনেক কিছু বুঝতে শিখলাম। কিন্তু এটা সত্য যে তুমিই আমাকে প্রথমবারের মত প্রপোজ করেছ। সুতরাং সে হিসেবে এই ব্যাপারটা সব সময়ই আমার মাথায় ছিল। একটা সময় ভাবলাম,খারাপ কি?তোমাকে অপছন্দ করার তেমন কোন কারণ নেই। তোমার সম্পর্কে মোটামুটি সবই জানা আছে।
সেই হিসেবে কিছু একটা হলেও হতে পারে। অবশ্য ব্যাপারটা নিজের মধ্যেই রেখে দিলাম। আর সুযোগ খুঁজতে থাকলাম তোমার সাথে যোগাযোগের। কিনারা করা গেল না। তবে তোমাকে নিয়ে ভাবতাম প্রতিদিনই।
দেখা কিংবা কথা হলে কি বলব তা ঠিক করতাম। অবশ্য কয়দিন পরপরই আইডিয়া বদলে যেত। নতুন নতুন কথা যুক্ত হতো। আর আশায় থাকতাম তুমি যেন আর কয়েকটাদিন আমায় মনে রাখো। মেডিকেলে কিংবা বিশ্ববদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারলে তখন না হয় কথা বললে একটা গ্রহণযোগ্যতা থাকত।
আজকে তোমার সাথে ঐ মেয়েটাকে দেখে প্রচণ্ড ধাক্কা খেয়েছি। যদিও তোমাকে সেটা বুঝতে দিইনি। অনুভুতি চেপে রাখা জিনিসটা ভালোমতই শিখে গেছি।
একটানে কথাগুলো বলে থামল নীরা। অদিতির সাথে দেখেছে এই কথায় তেমন চমকালাম না।
সেটা আমার ধারণার মধ্যেই ছিল। কিন্তু ও আমার জন্যে অপেক্ষায় ছিল এটা শুনে আমার দমবন্ধ হয়ে আসছিল। আমি কি তাহলে ঠকালাম নীরাকে?তাই বা কি করে হয়। আমি তো ওর জন্য অপেক্ষা করেছি। ওর উত্তরের অপেক্ষা করেছি।
স্বাভাবিকভাবেই ধরে নেবার কথা যে সে আমাকে পছন্দ করবে না। অন্তত যেরকম পাগলামি করেছিলাম তার পর। অবশ্য যা করেছিলাম তা ছিল ওর জন্যই। আমি এখনো বলতে পারব না যে আমি ওকে ভালোবাসি না। ভালোবাসি।
আগের চেয়ে কোন অংশে কম না। কিন্তু আমি এখন অন্য কারো। অদিতির প্রেমে পড়ার পেছনে নিঃসঙ্গতা হয়ত একটা কারন ছিল। কিন্তু এর উপর আমার হাত ছিল না। এটা জাস্ট হয়ে গেছে।
এখন আমি কি উত্তর দিব নীরাকে?সিদ্ধান্ত নিলাম যা সত্যি তাই বলব। অবস্থান ব্যাখ্যা করার বিষয় না এটা। সামান্য ভুল হয়ত করেছি,কিন্তু সেটা সব স্বাভাবিক মানুষের জন্য সত্য।
-নীরা শোন।
-শুনছি।
তার গলায় আগের স্ফুর্তি আর নেই।
-আমাকে ভুল বোঝ না প্লিজ। আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করিনি এটা বলব না। হয়ত আরো একটু অপেক্ষা করতে পারতাম। আসলে মনের ব্যাপারগুলি সবসময় নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকেনা।
আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রিত রাখতে পারিনি।
আমি ভাবিনি এতদিন পরেও তুমি আমাকে মনে রাখবে। আর মনে যদি করতেও অন্তত কোনরকম একটা আভাস পেলে হয়ত আজকের বর্তমানটা অন্যরকম হত। আর তাও বা কি করে বলি বল?কেউ ইচ্ছা করলেই কারো প্রেমে পড়তে পারে না। এটা এমনিতে হয়ে যায়।
নিয়তি হয়ত এভাবেই লেখা থাকে। আমিও এর আগে যতবারই কাউকে ভালো লেগেছে আমি সেখান থেকে সরে আসতে পেরেছি। আমি ভাবতাম অন্য কারো প্রতি আকর্ষিত হলে বুঝি তোমার প্রতি আমার ভালোবাসার অপমান হবে। আমি তোমাকে এখনো ভালোবাসি। সারাজীবন ভালোবাসব।
কারণ আমি বিশ্বাস করি ভালোবাসার কখনো মৃত্যু হয় না। আবেগের-অনুভূতি কমে যায়। প্রেম কমে না। কিন্তু এখন বুঝতেই পারছ যে কোথাও একটু সুর কেটে গেছে। চাইলেই আর কিছু বদলানো যাবে না।
অদিতি যদি আমাকে ভালো নাও বাসত তাহলেও আমি তোমাকে আজ এই কথাই বলতাম। তার কারণ হল যেদিনই বুঝতে পারি যে সত্যিকারভাবেই আমি অদিতির প্রতি আকৃষ্ট হয়েছি এবং তাকে চাইতে শুরু করেছি,সেদিন আমি বুঝে গিয়েছিলাম যে তোমার প্রতি সকল অধিকার আমি হারিয়ে ফেলেছি। তোমাকে পাওয়ার এমনকি চাইবার অধিকারও আমি হারিয়ে ফেলেছি। এখন যদি ভবিষ্যতে কোন কারণে আমার অদিতিকে পাওয়া নাও হয় তবুও আমি তোমাকে চাইতে পারব না। পুরাতন চাওয়াটাকে আর কখনোই ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না।
আমাকে ক্ষমা করো।
-যদি আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করি? -কেন অপেক্ষা করবে তুমি। যে তোমার জন্য অপেক্ষা করতে পারে নি তার জন্য কেন তুমি পথ চেয়ে থেকে কষ্ট পাবে?অপেক্ষার যন্ত্রণা কত তীব্র তা আমি জানি। আমি চাইনা আমার জন্য তুমি আর কষ্ট পাও। তারচেয়ে নিজেকে ভালোভাবে গুছিয়ে নিতে চেষ্টা করো।
আমাকে ভুলতে বলি না। সেটা পারবে বলেও মনে হয় না। শুধু দৈনন্দিন জীবনে একপাশে সরিয়ে রেখো। মাঝে মাঝে ইচ্ছে হলে তাকিও। তাই বলে থেমে থেকো না।
আমার ভালোবাসার দোহাই দিয়ে হলেও আমি চাইব তুমি যেন ভালো থাকো,থাকার চেষ্টা করো। এরচেয়ে বেশি কিছু আর কিই বা চাইতে পারি এখন? ওপাশ থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস শোনা গেল। আমার মনটাই খারাপ হয়ে গেল। ও আবার দৃশ্যপটে ফিরে না এলে ক্ষতি কি ছিলো?সে নিজে ভালো থাকতে পারত। আমিও হয়ত সারাজীবন ভেবে নিতাম নীরা আমাকে ভালোবাসে না।
নিজের উপর শ্রদ্ধাও হারিয়ে ফেলতাম না। আর কোনদিন কি আমি স্বতস্ফূর্তভাবে ভালোবাসার কথা উচ্চারণ করতে পারব?মনে হয় পারব না। প্রতিবারই মনে হবে নীরাকে আমি ঠকিয়েছিলাম। আমি তাকে ভালোবাসতাম,সেও আমাকে ভালোবাসত। অথচ আমি তাকে আপন করে নিতে পারি নি।
এই যন্ত্রণা বোধ হয় সারাজীবন আমাকে তাড়িয়ে বেড়াবে। অদিতি কি পারবে আমার এই যন্ত্রণা লাঘব করতে?তার ভালোবাসার শক্তি আমার অপরাধবোধকে চিরতরে মুছে দিতে পারবে কি?আমি জানি না। আমি আসলেই জানি না। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।