ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশনে আজ শনিবার ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। সকাল আটটা থেকে ভোট নেওয়া শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে তা বিকেল চারটা পর্যন্ত চলে। এখন চলছে গণনা।
ভোট উপলক্ষে আজ চার সিটির নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি ছিল। নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্বাচন উপলক্ষে কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের গতকালের ও আজকের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও চার কমিশনার আজ কমিশনে বসেই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন। দাপ্তরিকভাবে কমিশনার আবদুল মোবারক খুলনা, আবু হাফিজ রাজশাহী, জাবেদ আলী বরিশাল ও মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ সিলেট সিটির নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেন।
ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ ও আনসার-ভিডিপির সদস্য মোতায়েন করা হয়। প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ২২ জন ও গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) কেন্দ্রে ২৪ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করেন।
এ ছাড়া নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে চার সিটিতে ভ্রাম্যমাণ (মোবাইল) ও স্ট্রাইকিং (অপেক্ষমাণ) ফোর্স হিসেবে পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), র্যাব, কোস্টগার্ড, ব্যাটালিয়ন আনসার ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়। সব মিলিয়ে চার সিটিতে ১১৮টি ভ্রাম্যমাণ ও ৪০টি স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত ছিলেন।
এ ছাড়া চার সিটিতে ২১ প্লাটুন বিজিবি এবং আলাদাভাবে খুলনা ও বরিশালে পাঁচ প্লাটুন কোস্টগার্ড মোতায়েন করা হয়। আজ ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পরও আরও দুই দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করবে।
নির্বাচনী অপরাধের তাত্ক্ষণিক বিচারের জন্য ভ্রাম্যমাণ ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে মোট ৯১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেছেন।
প্রতিটি সিটিতে পাঁচজন করে বিচারিক হাকিম নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকের পাশাপাশি কমিশনের নিজস্ব পর্যবেক্ষকও মাঠে ছিল বলে কমিশন সচিবালয় জানিয়েছে।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট শুরু থেকে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে আসছিল। এ কারণে নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন, এই নির্বাচন বর্তমান কমিশনের জন্য আস্থা অর্জনের পরীক্ষা।
রাজশাহী: রাজশাহী সিটি করপোরেশনে ৩০টি ওয়ার্ডে মোট ভোটারের সংখ্যা দুই লাখ ৮৬ হাজার ৯১৭।
এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৪৩ হাজার ৩৯৫ ও নারী এক লাখ ৪৩ হাজার ৫২২ জন। মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত এ এইচ এম খায়রুজ্জামান তালা, বিএনপি-সমর্থিত মো. মোসাদ্দেক হোসেন আনারস ও মো. হাবিবুর রহমান চশমা প্রতীক নিয়ে। সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর সংখ্যা ৬৬ জন ও সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর সংখ্যা ১৫৫।
খুলনা: খুলনা সিটির ৩১টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার চার লাখ ৪০ হাজার ৫৬৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ২৪ হাজার ৫০৪ ও নারী দুই লাখ ১৬ হাজার ৬২ জন।
মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত তালুকদার আবদুল খালেক তালা, বিএনপি-সমর্থিত মো. মনিরুজ্জামান আনারস ও দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে মো. শফিকুল ইসলাম। ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর সংখ্যা ৪৫ ও সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর সংখ্যা ১৩৭।
বরিশাল: এই সিটির ৩০টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার দুই লাখ ১১ হাজার ২৫৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ সাত হাজার ৬২৫ জন ও নারী এক লাখ তিন হাজার ৬৩২ জন। আওয়ামী লীগ-সমর্থিত শওকত হোসেন টেলিভিশন ও বিএনপি-সমর্থিত আহসান হাবিব আনারস প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মাহমুদুল হক খান। সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর সংখ্যা ৪৫ ও সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর সংখ্যা ১১৬।
সিলেট: এই সিটির ২৭টি ওয়ার্ডের ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৯১ হাজার ৪৬। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৫৭ হাজার ১৮১ এবং নারী এক লাখ ৩৩ হাজার ৮৬৫ জন। মেয়র পদে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত বদরউদ্দিন আহমদ কামরান আনারস ও ১৮ দল-সমর্থিত আরিফুল হক চৌধুরী টেলিভিশন প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তালা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন ছালাহ উদ্দিন। সংরক্ষিত নয়টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ৩৫ ও সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ১৩৯ জন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।