আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফের মোবাইলের সিম নিবন্ধনের উদ্যোগ

মোবাইল ফোনকেন্দ্রিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আবারও সিম পুনঃনিবন্ধনের উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। বিটিআরসি বলছে, মোবাইল ফোনে চাঁদাবাজি, হুমকি প্রদান, ভয় দেখানো এবং উত্ত্যক্ত করার অসংখ্য অভিযোগ আসছে। অনেক ক্ষেত্রে সরকারও বিব্রত হচ্ছে। নিবন্ধনহীন বা ভুয়া নিবন্ধনের সিম ব্যবহার করে এসব অপরাধ হচ্ছে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণেই সিম পুনঃনিবন্ধনের দ্বিতীয় এ উদ্যোগ।

পুনঃনিবন্ধন পরবর্তী সময় ভুয়া তথ্যের নিবন্ধন বা অনিবন্ধিত সিম পাওয়া গেলে প্রতিটির জন্য অপারেটরকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। এতদিন এ অপরাধে ৫০ ডলার জরিমানার বিধান ছিল। এখন তা টাকার অঙ্কে আনা হচ্ছে। বিটিআরসি এ সংক্রান্ত একটি বিধিমালাও চূড়ান্ত করে এনেছে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এটি অনুমোদনের জন্য টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

পরে সব মোবাইল ফোন অপারেটরকে নিজ দায়িত্বে পুনঃনিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সময় এবং অন্যান্য শর্ত জানাবে বিটিআরসি। এ কার্যক্রমের প্রথম ধাপে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে নতুন সিম বিক্রিতে প্রি-অ্যাক্টিভিশন বন্ধ করা হয়েছে। তাতে সিম কিনেই তাৎক্ষণিক আর কেউ কথা বলতে পারবেন না। বরং সিম কেনার পর সঠিক তথ্যে ফরম পূরণ হয়েছে কি-না তা যাচাই-বাছাইয়ের পর সিমটি ব্যবহার উপযোগী (অ্যাক্টিভেট) হবে। এরই মধ্যে এ নির্দেশনা সব অপারেটরকে জানানো হয়েছে।

পুনঃনিবন্ধনের সিদ্ধান্ত নিলেও দিনক্ষণ ঠিক হয়নি। বিটিআরসি বলছে, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এগুলো চূড়ান্ত হবে। এ দফায় গ্রাহকদের সময় ও পরিশ্রম বাঁচাতে অনলাইনে পুনঃনিবন্ধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিটিআরসি। সেক্ষেত্রে অপারেটররা এসএমএস পাঠিয়ে গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর চাইবে। অপারেটররা কাছে থাকা তথ্যের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটাবেজে গ্রাহকের ছবি এবং নাম-ঠিকানা মিললে তার নিবন্ধন সম্পন্ন করবে।

কারও নাম, ছবি ও ঠিকানা না মিললে নতুন করে সব তথ্য-প্রমাণ দিয়ে নিবন্ধন করাতে হবে, না হলে সংযোগ বন্ধ করা হবে। বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান মো. গিয়াসউদ্দিন সমকালকে জানান, প্রথমে প্রি-অ্যাক্টিভেশন বন্ধ করে তারপর পুনঃনিবন্ধনে যাবেন তারা। সে কারণে এক্ষেত্রে একটু সময় লাগতে পারে। তা ছাড়া নির্বাচন কমিশনের বিষয়টিও হিসাবে নেওয়া হচ্ছে। ব্যবহারকারীর পরিচয় শনাক্ত করতে ২০০৮ সালেও একবার ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিক্রীত সব সিমের পুনঃনিবন্ধন করা হয়।

সে সময়ও ভুয়া তথ্যেও পুনঃনিবন্ধন হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন সময় সিমের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে অদ্ভুত সব নাম এবং ঠিকানা পেয়েছে। ব্যবহারকারীর নাম মোহাম্মদ আটা, বাবার নামের স্থানে মোহাম্মদ সুজি_ এমন তথ্যও পাওয়া যায়। এসবের পরিপ্রেক্ষিতেই এ বিষয়ে কড়া অবস্থান নেয় বিটিআরসি। পরে দফায় দফায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নির্বাচন কমিশন, মন্ত্রণালয় এবং মোবাইল ফোন অপারেটরদের সঙ্গে বৈঠকও হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম দফায় ডিলার এবং খুচরা বিক্রয় প্রতিনিধিদের নিবন্ধন করা হয়। যাতে কোথায় সিমটি বিক্রি হয়েছে এবং ভুয়া নিবন্ধনের জন্য কে দায়ী সেটি শনাক্ত করা যায়। জানা গেছে, পুনঃনিবন্ধনের ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও (এনবিআর) আগ্রহ দেখাচ্ছে। সম্প্রতি এনবিআর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, নতুন সিম বিক্রির চেয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া সংযোগ নাম পরিবর্তন করে বিক্রি করতে অপারেটররা বেশি আগ্রহী। ফলে সরকার সিমপ্রতি ৬০০ টাকা শুল্কবঞ্চিত হচ্ছে।

সূত্র জানায়, এনবিআর যাতে শুল্কবঞ্চিত না হয় সে জন্য এক নামের সিম অন্য নামে নিবন্ধনের পথও এবার রুদ্ধ হবে। ফলে আগে এক নামে ছিল_ এমন সিম অন্য নামে নিবন্ধন দেওয়া হবে না। সূত্র জানায়, এরই মধ্যে পুনঃনিবন্ধন সংক্রান্ত একটি বিধিমালা ইংরেজিতে করা হয়েছে। সেটি বাংলায় অনুবাদের পরই মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। বিধিমালায় বলা হয়েছে, গ্রাহকের পরিচয় নিশ্চিত করার দায়িত্ব অপারেটরের।

এক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রকেই দেওয়া হচ্ছে সর্বাধিক গুরুত্ব। সেক্ষেত্রে অল্পদিনের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্রের অনলাইন ভেরিফিকেশন পাওয়া গেলে সেটি অথবা জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি সংগ্রহের কথা উল্লেখ থাকছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক সমকালকে জানান, তারা পরিচয়পত্রের ডাটাবেজ অনলাইন এবং অফলাইন দুই পদ্ধতিতেই তৈরি করছেন। অল্পদিনের মধ্যে এ সেবা দেওয়া হবে। এ বিষয়ে কিছু নীতিমালা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

Click This Link ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।