নিতান্তই একজন জুনিয়র ব্লগার।
"ফারহান"
আমার সবচেয়ে আদরের পিচ্চি দুষ্ট ভাগিনা, "দুষ্টের শিরোমণি লঙ্কার রাজা" বলতে যা বুঝায়, ও হয়তো তাই। ও যতক্ষণ বাসায় থাকে ততক্ষন আমার বিনোদনের জন্য অন্য কিছুর দরকার হয় না, ওর প্রত্যেকটা কাণ্ডই আমাকে আনন্দ দেয়, হাসায়।
চলুন, দেরি না করে আমার সেই ভাগিনা এবং তার কয়েকটি উদ্ভট কাণ্ড ও কথার সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিই।
গত ৩ দিন আগের ঘটনা,
আমি একটা গল্পের বইয়ে মুখ ডুবিয়ে বসে আছি, ও দেখি একটু পরপর ঘুরে ঘুরে আমার কাছে এসে বলছে "মামা, আমাকে ঈদে কি কিনে দিবা?"(যদিও ওর ঈদের কেনাকাটা সব শেষ)।
গল্পের বইয়ে মনোযোগ থাকার কারনে বারবার ওর প্যানপ্যানানিতে একটু বিরক্ত হয়ে আমি ওকে বললাম "যা, তোকে এবার জাঙ্গিয়া কিনে দিবো"।
আমার কথা শুনে ও কি বুঝল না বুঝল, দেখলাম খুশী মনে চলে গেলো।
সারাদিন পর রাতে দুলাভাই ঘরে ফিরতে না ফিরতেই দেখি ফারহান দৌড়ে দুলাভাইয়ের কাছে গিয়ে বলছে "বাবা, আমাকে জাঙ্গিয়া কিনে দিবা কখন?"
দুলাভাইতো ওর এমন কথা শুনে ঝাড়া ১০ সেকেন্ড থ হয়ে ছিল, তারপর ওকে বলল, কে বলেছে তোমাকে জাঙ্গিয়া কিনে দিবে?
ফারহানের নির্লিপ্ত জবাব, মামা বলছে এবার তাকে জাঙ্গিয়া কিনে দেয়া হবে সুতরাং তাকে জাঙ্গিয়া কিনে দিতেই হবে, না দিলে ভ্যাএএএএএএএএএ।
পরে ওর এ কাণ্ড নিয়ে বাসায় আমরা অনেক হাসাহাসি করি।
যাহোক, এই গেলো একদিনের ঘটনা।
আরেকদিনের ঘটনা,
আমি ঘরে বসে বসে শিঙ্গাড়া, সমুচা খাচ্ছিলাম, আর ঐদিক দিয়ে আমার বাথরুমের দরজার সামনে উনি উনার সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং কর্ম সেরে দৌড়ে এসে আমার হাত ধরে টেনে টেনে বাথরুমের সামনে নিয়ে গিয়ে উনার কর্মটি আমাকে দেখিয়ে বলছে "মামা দেখো, আমি শিঙ্গাড়া বানাইছি"। ওর ঐ কাণ্ড দেখে ঐদিনের মতো আমার শিঙ্গাড়া খাওয়ার ১২ টা বেজে গিয়েছিলো। যাহোক এ গেলো আরেকদিনের ঘটনা।
কয়েকমাস আগে আমাদের সবার গ্রামের বাড়ি বেড়াতে যাওয়া হয়,
গ্রামে গিয়ে তো ফারহান বেজায় খুশি, কারন ঢাকায় এমন খোলামেলা জায়গা সহজে পায় না তাই। তো, একদিন দুপুরে দেখি ও খুব কান্না করছে "দম" খাবে বলে।
সবাইতো রীতিমতো পেরেশান ওর "দম" শব্দটি নিয়ে, ওর "দম" শব্দটির মানেও কেউ বুঝতে পারছে না আবার এদিক দিয়ে ওর কান্নাও থামছে না, অবশেষে আমি তাকে একটা একটা করে এটা সেটা দেখাতে দেখাতে আবিষ্কার করলাম "দম=কলা", যাহোক শেষমেশ "দম" দিয়ে তাকে ঠাণ্ডা করা হয়েছিল। এ গেলো দুপুরের ঘটনা।
ঐদিনই সন্ধ্যায় আমি বাহির থেকে ঘুরে ফিরে বাসায় ঢুকবো, অমন সময় দেখি উঠোনে একটা কাঠি নিয়ে দাড়িয়ে ফারহান চিল্লায়া চিল্লায়া কিছু একটাকে বলছে "দুক, বাইয়াম" "বুক্কা, বাইয়াম"।
প্রথমে কিছু বুঝতে না পারলেও কিছুক্ষণ পর ওর কথার মানে বুঝতে পারলাম যে, আসলে ও মুরগীর বাচ্চাগুলোকে বলছে "দুক" আর মুরগীকে বলছে "বুক্কা" এবং বাইয়াম মানে হচ্ছে "মাইর দিমু"।
ওর এমন কথা শুনে আমি খালি হাসি আর ভাবি করি ও শিঙ্গাড়া বানানোর মতো এমন ব্রিলিয়ান্ট আইডিয়া আর এমন উদ্ভট কথাবার্তা যে কোথেকে আবিষ্কার করে(!)
যাহোক, ভাগিনাকে নিয়ে আর বেশী কিছু লিখবো না,
সবশেষে এইটুকু লিখি, যেই জন্য আমার ভাগিনাকে নিয়ে আমার আজকের ব্লগ লিখা, সেটা হলঃ
আজকে আমার সেই ভাগিনার জন্মদিন, কিন্তু তার শরীরটা বেশী একটা ভালো না।
তার জন্য ও তার সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থী।
সব ব্লগারদের ঈদ আনন্দে কাটুক, সবার জন্য রইলো ঈদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
ঈদ মোবারক ।
[বি.দ্র: ব্লগে নতুন লিখি, ঘুছিয়ে লেখার অভ্যাস নাই, ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন সবাই] ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।