আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যখন বাঁদর ছিলামঃ সোহেল ভাই দ্যা লিজেন্ড,ডাব চুরি ,কাল হার্টস আর জাহিদের বাবা

সোহেল ভাই দ্যা লিজেন্ডঃ শেষ পর্ব ডাব চুরি প্রায় মধ্যরাতে আমরা এক অবিশ্বাস্য নৌকাভ্রমনে বের হলাম। নদীর চরে টিমটিমে আলোতে টং দোকানের গরম মিষ্টি!আহ! অমৃত ছিল যেন। মাঝনদীতে জ্যোৎস্নায় প্রকৃতির অপার্থিব সৌন্দর্যে হাবুডুবু খেলাম। চাঁদের আলোয় কয়েকজন যুবক। জীবনের শ্রেষ্ঠ দিনটাই বোধহয় কাটিয়ে আসলাম।

সেই অপূর্ব রোমান্টিক পরিবেশে সোহেল হেঁড়ে গলায় গান ধরল। আজকের মতো মাফ করে দে,বন্ধু। সোহেলকে থামিয়ে দিলাম আমি। আমার রূঢ় আচরণে সোহেল থমকে গেল। আর আমরা থমকে গেলাম নৈঃশব্দের গলে গলে পড়া সৌন্দর্যে।

সেখান থেকে ফেরার পথে সোহেল ডাব গাছে নিজস্ব মেশিনের পানিবর্ষন করে আসল। প্রতিদান নগদে নিতে ডাব খাবার ইচ্ছাও পোষন করল। "বন্ধু, ডাব পেড়ে দে না" অভিজ্ঞ গেছো মাহমুদকে ধরল সে। মাহমুদ বিনয়ের সাথে তাকে সিটিএন জানাল। তখন আমরা সোহেলকে কথার জালে পেঁচিয়ে গাছে উঠিয়ে দিলাম।

গাড়ির চাকায় পাম্প দিলে চাকা ফুলে যায়। আমাদের সম্মিলিত পাম্পে সোহেল শুধু ফুলল ই না উপরে ওঠা শুরু করল। আর আমাদের অবাক করে দিয়ে অনভিজ্ঞ গেছো সোহেল গাছের অর্ধেকটা উঠে গেল। পরে আবিষ্কার করলাম সোহেল গাছের মাঝখানে স্থির হয়ে আছে। ইব্রাহিম বলল,কি হয়েছে, সোহেল ।

লজ্জাবনত মুখে জানাল সে,আর তো পারিনা,বন্ধু। তাহলে নেমে আয় . . . . বিয়ের পরই ডাব খাস। আমি বললাম। কিভাবে নামব . . .হতাশাগ্রস্ত দেখাল তাকে। লাফ দে . . . . সাচ্চু ভুতের গল্প শুরু করল . . . ."সামনের তেতুল গাছে একবার এক . . . . . ." হঠাৎ ধুপ করে শব্দ হলো ।

না ভুত না, সোহেল লাফ দিয়েছে। ভুতথেরাপিই কাজে দিল . . কাল হার্টস বাসায় ফিরে কার্ড খেলতে বসে মহাবিপদে পড়লাম সোহেলকে নিয়ে। কারন সোহেল ভোদাইকে ব্রীজ খেলা শেখানোর চেয়ে মনে হয় পদ্মায় একটা ব্রীজ বানিয়ে দেয়া সহজ । ভয়াবহ সব চাল দিতে লাগল। তার পার্টনার সাচ্চু রাগে-দুঃখে ওয়াকআউট করলে পরে আমরা হার্টস খেলা শুরু করলাম।

এখানেও LC সোহেলের রাণীর প্রতি দুর্বলতা প্রকাশ পেল। রাণীকে পরম আবেগে নিজের করে নিতে লাগল সে। এর মাঝেই সে তার মোটা মাথাটা খাটাতে লাগল। ধীরস্থির বিরক্তিকর খেলা চলতে লাগল। এর মাঝে একসময় দেখলাম একটা কার্ড হাতে নিয়ে ভাবছে গভীরভাবে।

আমি বললাম খেল। কি খেলব? আরে ভোদাই হার্টের খেলা, হার্টস চাল দে। আরও সিরিয়াস হয়ে বলল ও, চিন্তা করতেছি কোনটা খেলব,হার্টের লালটা নাকি কালটা। জাহিদের বাবা রাতে শোবার সময় সোহেল আবার হিসেব নিকেষে বসল। শত্রু না খুজে পেয়ে তার ঘুম যে হারাম হয়ে যাবার যোগার ।

রুদ্ররোষ থেকে বাঁচতে নিজেদের পক্ষে ওকালতি শুরু করলাম আমরা। কম্পিউটার সাইন্টিস্ট সাচ্চু জটিল প্রোগ্রামিং এ দক্ষ হলেও সোহেলের ব্রেন প্রোগ্রামিং করে নিজের অনুকুলে নিতে ব্যর্থ হলো। "সময়মত হবে প্রতিশোধ। " সোহেলের হুমকিতে ভয়ে ভয়ে সাচ্চু শুতে গেল। আর আমি আর মাহমুদ ঘুমানোর আগে পরের দিনের প্লান ঠিক করে নিলাম।

সকাল সকাল উঠে প্লান বাস্তবায়ন শুরু করলাম। মাহমুদ সাচ্চুকে ডেকে বলল,"সোহেল ওঠার আগেই বাথরুম সেরে আয়। সোহেল জানলে তোর রক্ষা নাই। " সাচ্চু যাবার পর সাথে সাথে সোহেলকে কাঁচা ঘুম থেকে উঠালাম। জানালাম সাচ্চু বাথরুমে,প্রতিশোধ নেবার জন্য এরচে ভাল সুযোগ আর পাবিনা।

আমাদের প্রতি কৃতজ্ঞতার হাসি দিল সে। বাথরুমের ছাদ না থাকায় মাটির ঢিলা গুড়া করে উপর দিয়ে ছিটিয়ে দেয়ার পরামর্শও দিলাম তাকে। সাথে এক বালতি পানিও নিল ও। প্রতিশোধটা যেন কড়ায়গন্ডায় মেটে। বালতি হাতে সোহেল বাথরুমের দিকে এগিয়ে চলল বিজয়ীর ভংগিতে।

অবস্থা বেগতিক দেখে মাহমুদ তার উপস্থিত বুদ্ধির চুড়ান্ত খেল দেখাল। জাহিদকে দেখেই বলল তোমার বাপ এতক্ষন বাথরুমে কি করে? কনফিউজ হয়ে গেল সোহেল। কিংকর্তব্যবিমূঢ় আর হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে গেল ! এরই মাঝে সাচ্চু বেরিয়ে আসল। কাহিনী বুঝতে দেরী হলো না তার। মুচকি হেসে আদেশ করল যেন . . . আমিই জাহিদের বাপ।

নে সালাম কর। সোহেল হা করে তাকিয়ে থাকল । অস্পষ্ট একটা গালির শব্দ কানে আসল. . . .শালা!!!. . . নস্টালজিক বান্দরবেলার আগের পর্বসমূহ . . . . ১ম পর্ব-আমের দেশে ২য় পর্ব-সোহেল এবং ঐশ্বরিয়া ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।