আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফিতরার গল্প

আমাদের কুমিল্লায় ঈদের সময় ফিতরার প্রকোপ বেড়ে যায়। কিছু কিছু মানুষ হঠাৎ যেমন মুসলমান হয়ে উঠে তেমনি কিছু মানুষ মৌসুমি ভিক্ষুকে পরিণত হয়। আমি খেয়াল করে দেখেছি এরা দান খয়রাতের বেলায় গরিব আত্মীয়স্বজনদের খুব একটা গননায় রাখতে চায় না। অথচ যতদুর জানি আগে আত্মীয়স্বজন তারপর অন্যজন। আমি ঠিক শিওর না কেন এমন টা হয়।

আবার যেসব মানুষ সারা বছর দিব্যি কাজকর্ম করে খায় তারা হঠাৎ কেন যেন ১৫ রোজার পর থেকে ভিক্ষা শুরু করে দেয়, তাও আবার যেমন তেমন ভিক্ষা না। রীতিমত দল বেঁধে বেরোয়। প্রতিটা মহিলা গড়ে ৩/৪ জন সাঙ্গ পাঙ্গ নিয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দল তৈরি করে। সিসটেমিকেলি টিম ওয়ার্ক যাকে বলে। প্রতিজন মহিলার সাথের সঙ্গিরা কিন্তু ভীষণ ছোট ছোট শিশু।

এতো এতো শিশু কোত্থেকে এরা যোগার করে কে জানে। ১৮-১৯ বছরের মহিলাদের সাথে ৪/৫ টা বাচ্চা ঠিক যেন মানায় না। আমরা যারা ফিতরা দেই তারাও আবার খুব দেখে শোনে বেছে বেছে দেবার চেষ্টা করি। লাভ হয় না। তীব্র চিৎকার চেচামেচি করে এরা দুনিয়া মাথায় তুলে ফেলে।

সো, দিলে সবাইকে দাও আর না দিলে কাড়ি কাড়ি গালি খাও। আমার মনে যেসব ভাবনা কাজ করে তার মধ্যে একটা হল , আমি কোন দলে পড়ি। আমি কি ফিতরা দেই না নেই? আমিও তো নিঃস্ব রিক্ত হত দরিদ্র। উদাহরন দিতে চাই না। লোকে হেসে গড়াগড়ি খাবে।

যাই হোক, আজকে আমি বিষয়ক কোন গল্প নেই। আমরা যেখানে ছিলাম সেখানে ফিরে গেলেই বরং ভাল। আমি চেম্বারে যাবার জন্য রেডি হয়ে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। এমন সময় একটা ছোট শিশুর কান্নায় আমার মনোযোগ আকৃষ্ট হল। দেখলাম এক মহিলা তার দুই হাতে দুটো বাচ্চাকে প্রায় ঝুলিয়ে দৌড়ে নিয়ে যাচ্ছে।

এর মধ্যে যেটি কাঁদছিল তার বয়স কিছুতেই দুই এর বেশি হবেনা। সে না পারছে হেঁটে না পারছে দৌড়ে। সম্ভবত সে কোলে উঠার বায়না ধরেছিলো। সেলুকাস, মহিলাটা দল থেকে না পিছিয়ে পড়ে এই ভয়ে কি বাচ্চাটাকে এমন মার দিল যে আমি শিউরে উঠলাম। না হয় রাগের মাথায় মেরেছে তারপর তো মা তাকে কোলে তুলে নিয়ে আদর করেছে।

গল্পটার এমন একটা সমাপ্তি হতে পারতো। কিন্তু বাবুটার ভাগ্য সেদিন আরও একটু বেশি-ই খারাপ ছিল। মহিলাটা তাকে একটা উচিত শিক্ষা দেবার ব্যবস্থা করল। আর যেন কোন সময় এমন ভেজাল না বাঁধায় তাই সে তাকে রাস্তায় ফেলে যাওয়া মনস্থির করলো। উনি আগের মতোই উড়ে উড়ে এগোচ্ছেন পাছে তার ইনকাম না কিছুটা কমে যায়।

খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তাকে সব গুলো বাসার ফিতরা কালেকশান শেষ করতে হবে। অনেক কাজ বাকি পড়েছে। এই শয়তান বাচ্চাটার জন্য অনেক গুলো মূল্যবান সময়ের শুধু শুধু অপচয় হয়েছে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।