আমার ভেঙে যাওয়া টুকরোগুলো কুড়িয়ে আবার তৈরী করছি কাউকে, চেনা এবং অচেনায়। কিশোরী মেয়েটার মন কোনও কিছুতেই প্রবোধ মানছিলো না, সিলিংয়ের ধার ঘেষে টেবিল ল্যাম্পের লালচে আলোটা একটা ছুরির ফলা হয়ে আছে। যেন রাতে বিছানায় ঘুমের স্রোতে ভেসে গেলেই ওটা জ্বীবন্ত হয়ে ঝাপিয়ে পড়বে মেয়েটার কণ্ঠের উপরে। বইয়ের পাশে রাখা নীল কলমটা ছুঁতে ইচ্ছেই করছে না। ডায়েরীতে কী লিখবে? ডিয়ার ডায়েরী, আজ রাতে তোমার সাথে আড়ি, আমার মনের মধ্যে বেদনা ফেনিয়ে উঠছে আর তুমি নিশ্চুপ চোখ বুজে আছো? ডিয়ার ডায়েরী, তুমি আজ রাতে মরতে পারো, ডেস্কের পাশে চুলের কাঁটা আছে, বিঁধে দেবো?
কালো বিড়ালটা আজ হারিয়ে গেছে নিচতলার বারান্দা থেকে।
ওটাকে কখনোই ওর পছন্দ হতো না, তারপরও আজ ওর মন যেমন কোথাও গিয়ে একচিলতে হাসিও খুঁজে পাচ্ছে না, ঠিক তেমনই পোড়ামুখো কালো বিড়ালটাও আজ নেই। ওটা যদি ফিরে আসে, কিশোরী মেয়েটা মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয়, পরের বার ওটাকে কিছু একটা খেতে দিতে হবে।
গান? শুনছিলো তো একটা হিন্দি গান। বাস সারে গাম মে জানা, সাঙ্গ হু তেরে/ হর এক মওসম মে জানা, সাঙ্গ হু তেরে/ আব ইতনে ইন্তেহা ভি না লে মেরে। সব দু:খে তোমার পাশে থেকেছি, সব ঋতু কেটেছে এক সাথে, প্রিয়...আজ আর পরীক্ষা নিও না আমার!
সবকিছু কেনো আজ রাতে ধূসর মনে হচ্ছে? ভালোবাসতো সে অনেক কিছুই, সবগুলো কেন আজ ডেকে ডেকে মুখ ভেংচি কেটে বলছে, তোর জীবন অর্থহীন! তুই ভালোবাসা-রিক্ত।
তুই একা। আমি? একা? ভাবে মেয়েটা। কেউ উত্তর দেয় না।
জিজ্ঞাসা করার কেউ নেই। হাতের মুঠো শক্ত হয়ে আসে, গলার কাছে কষ্ট জমে।
চোখ ঠেলে বেরিয়ে আসে নোনা জল। মুখে এখন আবার কিসের হাসি ফোটে? বুক খুলে কাঁদতে পারে ক'জন?
মেয়েটার মনে পড়ে, বাবা একদিন বলেছিলেন, 'মামনি, কেঁদো না। এই পৃথিবী চোখের জলের দাম দিতে জানে না!'
-আরন্যক নীলকণ্ঠ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।