অপ্রয়োজনে অনেক কথা বলে যাই, কিন্তু বলা হয়না আরো অনেক বেশী কথা- অনেক আপন মানুষদেরকে। তাইতো, এই খোলা চিঠি। হয়তো কারোর চোখে পরবে কোনদিন, যখন আমি থাকবোনা..... সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরী হয়ে গেল বলে, বাসা থেকে বের হলাম মধ্য দুপুরে। রাস্তা পার হবার সময় হঠাৎ একটা বাতাসের ঝাটকা যেন আমায় নিয়ে গেল বহু কাল আগের- বহু দুরের সেই জ্যামের শহর ঢাকায়।
গত কয়েকদিনের প্রচন্ড কাজের চাপে সবে-কদর, রোজা কেবল নিয়ম মাফিক করা হয়েছে মাত্র।
কোন আবেগ, অনুভূতি স্থান সেখানে ছিলনা। আগামী কাল থেকে একটানা নয়দিনের পার্টটাইম কাজেরসূচীটা মূলত আমার আজকের মাথাব্যাথার কারন। আজকের মাঝে যতটুকু পড়ালেখা করা যাবে তাই আপাদত সম্বল। তারপর আবার বিকেলে বাসায় ফিরে রান্না করতে হবে আগামী কয়েকদিনের জন্য, ধুতে হবে কাজে যাবার পোশাক ইত্যাদি, ইত্যাদি।
মনে মনে খুশিই হয়েছিলাম , যখন দেখেছিলাম পার্টটাইম কাজের এই ভীড়ের মাঝে ঈদের উপস্থিতি।
ঈদ বলতে এখানে তেমন কোন বিষেশত্ব নেই, যা আছে তা কেবল লোক দেখানো খাওয়া-দাওয়ার হাঙ্গামা আর বিরক্তিকর ক্লান্তি। যার কোনটাতেই আমার অংশগ্রহন থাকবেনা। কেবল একটু অস্বস্থি হচ্ছে, ঈদের নামাজটা পরতে না পারা নিয়ে। হয়তো এটাই আমার এই বিদেশ-বিভূইয়ে শেষ ঈদ। হয়তো এবারই এমনভাবে ঈদের জামাতে যাওয়া।
রং-বেরংয়ের পোশাকে বাস ড্রাইভারকে চমকে দেবার শেষ সুযোগ। ইচ্ছে আছে, ম্যানেজারকে মেনেজ করে দুঘন্টা পরে কাজের যাওয়ার। নামাজের স্থান আর সময় নির্দিষ্ট না হওয়ায়, সে ব্যপারেও কোন পদক্ষেপ নেয়া যাচ্ছেনা। আর ঈদের রাতে এখানকার একবন্ধুর বাসায় গত কয়েকটা ঈদে যাওয়া হয়েছে, তাই এবারও সেখানেই যাব।
চারিদিকের নিস্তব্ধতা।
দুপুরের ক্লান্তিতে গাড়ির কম উপস্থিতি । রোদের তপ্ত ছোয়া। রাস্তায় লান্চ ব্রেকের বিশ্রামের আমেজ । আজকের এই কয়েক সেকেন্ডের বাতাস-ঘ্রান। সব কিছু কেন জানি আমাকে সেই ঈদের আগে, আম্মুর সাথে ঈদের কেনাকাটার কথা, নতুন কাপড়ের সেই কড়কড়ে গন্ধ আর গাউছিয়া-চাদঁনীচকের ভীরকে মনে করিয়ে দিল।
যেন রোজার শেষের দিকের ঈদের সেই প্রস্তুতি, মতিঝিল খালি হবার পরও নিউমার্কেটের গেটে মানিব্যাগটাকে সাবধানে রাখবার হুশিয়ারী মনে করিয়ে দিল। বাসে উঠতেই মনে হলো , না আমি দুর প্রবাসে । তবু খালি বাসের সিটটাও যেন আমাকে নিয়ে গেল, রিক্সার ছোট্ট হুডের নীচে- আম্মুর কাধের চাপের অনুভূতির - গায়ের চাপা ঘ্রানটার কাছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।