আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হায় আম্রিকা ! তুমি এত পঁচে গেছ ! (মাত্র দুটি মুভির রিভিউ লেখার অপচেষ্টা)

অদ্ভুত আঁধার এক চারিদিকে শুধু হলিউডি মুভি দেখার সমস্যা হল হলিউড মুভিগুলো বানায়-ই এমন ভাবে যেন আম্রিকা স্বর্গভূমি আর বাকি সব ডাস্টবিন । তো হঠাৎ-ই দু খানা মুভি পেলাম যেখানে আমেরিকার কদর্যতার কিছুটা দেখতে পাওয়া যায় । এবং যা দেখা যায় তা যথেষ্টই ঘৃণা উদ্রেককর । Fair Game (2010) সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত । দৃশ্যপট ইরাক আক্রমন ।

জর্জ ডব্লিউ বুশ ইরাক আক্রমণের জন্য অজুহাত খুঁজছে । খবর পাওয়া গেল ইরাক আফ্রিকার দেশ নাইজার থেকে বেশ কিছু অ্যালুমিনিয়াম টিউব এবং ইউরেনিয়াম কিনেছে । উদ্দেশ্য চিকিৎসা গবেষণা । কিন্তু বুশ প্রশাসন মনে করছে ইরাকের উদ্দেশ্য নিউক্লিয়ার বোমা তৈরী । ভ্যালেরি প্লাম (নাওমি ওয়াটস) সিআইএ এজেন্ট ।

একটা বিষয় হয়তো বর্ন মার্কা মুভি দেখতে দেখতে বুঝে গেছেন, সিআইএ এজেন্ট দের পরিচয় গোপন করা থাকে । তারা অন্য একটা পরিচয় সবার সাথে ব্যবহার করে । এবং তাদের পরিচয় প্রকাশ করে দেওয়াটাও অপরাধের পর্যায়ে পড়ে । ভ্যালেরির প্রকৃত পরিচয় জানে শুধু সিআইএ, তার হাসবেন্ড এবং তার বাবা-মা । তার হাসবেন্ড জোসেফ উইলসন (শন পেন) একজন কূটনীতিক ।

সে অ্যাম্বাসেডর হিসেবে বেশীরভাগ সময় দায়িত্ব পালন করেছে । ভ্যালেরির টিমের উপর দায়িত্ব দেওয়া হল ইরাক কী কী কিনেছে এবং কেন কিনেছে সেটা বের করার । ভ্যালেরির কাছে যে তথ্য আছে তাতে দেখা যায় চিকিৎসা গবেষনার উদ্দেশ্যেই কেনা হয়েছে । জো এর যোগ্যতা এবং ব্যাকগ্রাউন্ডের কারনে ভ্যালেরির সিআইএ কলিগ এবং বসরা ভ্যালেরিকে বলে তাকে কাজে লাগাতে । জো নাইজারে যায় ।

তার যত নেটওয়ার্ক ছিল সব ব্যবহার করে । সে জানতে পারে কোন ইউরেনিয়াম কেনা-বেচা হয়নি । আর অ্যালুমিনিয়াম টিউব যেটা বিক্রি হয়েছে সেটা নরমাল মিসাইল এ ব্যবহার করা হয় । জো ফিরে এসে ভ্যালেরি এবং ভ্যালেরির বসদের সামনে বিস্তারিত সব বলে এবং লিখিত রিপোর্ট দেয় । ভ্যালেরি জো’র কাজকে অ্যাপ্রেশিয়েট করে ।

কিন্তু কিছুদিন পরে স্টেট অফ দা ইউনিয়ন ভাষণে বুশ ঘোষণা দেয়, তাদের কাছে নিশ্চিত প্রমাণ আছে ইরাক নিউক্লিয়ার প্রোগ্রামে জড়ীত যার উদ্দেশ্য বোমা তৈরী করা । এবং অতি তাড়াতাড়ি ইরাক আক্রমণ শুরু হয়ে যায় । জো এর প্রতিবাদ হিসেবে নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় আর্টিকেল লেখে । পুরা ব্যাপারটা সে বিস্তারিত লেখে । এবং তথ্যগতভাবে প্রমাণ দেয় ইরাক নাইজার থেকে এমন কিছু কেনে নি যা নিউক্লিয়ার প্রোগ্রামে ব্যবহার করা যায় ।

জর্জ W. বুশ মিথ্যাবাদী । হোয়াইট হাউস বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে দেয় । ভ্যালেরি প্লামের আসল পরিচয় ফাঁস করে দেয় একই পত্রিকায়, নিউইয়র্ক টাইমস-এ । ফাঁসের ব্যাপারটায় সরাসরি জড়িত থাকে হোয়াইট হাউস, ভাইস প্রেসিডেন্টের চিফ অফ স্টাফ এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজর, স্কুটার লিব্বি । ভ্যালেরিকে সাথে সাথেই সিআইএ থেকে বহিস্কার করা হয়, ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যায়, তার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, এমনকি জো এর সাথেও সমস্যা শুরু হয় ।

এরপর শুরু হয় শন পেনের অভিনয়। আর লিখব না । দেখে নিয়েন । শন পেন একটা জিনিস । টরেন্ট লিঙ্ক Crossing Over (2009) পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে বৈধ-অবৈধ উপায়ে আমেরিকা এসে বৈধ নাগরিকত্ব পাওয়ার সংগ্রাম হল ক্রসিং ওভার ।

এই সিনেমায় আছে বর্ডার, আছে ইমিগ্রেশন দূর্নীতি, আছে অ্যাসাইলাম এবং গ্রিন কার্ড, আছে কাউন্টার টেররিজম এবং কালচারাল ক্ল্যাশ । মুভিতে একটা বাংলাদেশী ফ্যামিলির কথা আছে । বাবা-মা, বড় মেয়ে (তাসলিমা জাহাঙ্গির, ১৫) বাংলাদেশ থেকে এসেছে। আমেরিকায় এরপর আরও দুইটা ছেলে-মেয়ে হয়েছে, তারা আমেরিকান নাগরিক, বাকিরা এখনও নাগরিকত্ব পায় নি । তাসলিমা স্কুলে একটা গাধামি করে ।

সে স্কুলে একটা পেপার উপস্থাপন করে যাতে সে বলে, ৯/১১ এর সাথে যারা জড়িত ছিল তাদের বুঝার চেষ্টা করতে হবে, কেন তারা এরকম করল । এইসব উচ্চমার্গীয় কথা ক্লাসের পোলাপাইনদের পছন্দ হয় নি, তারা প্রিন্সিপালকে বলে । প্রিন্সিপাল FBI কে বলে । FBI তাসলিমার বাসায় যায় । তার কম্পিউটারে ইসলামিক সাইট দেখতে পায়, তার ডায়রিতে সুইসাইডের কথা দেখে ।

তাকে আমেরিকার জন্য হুমকি মনে করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় । যেহেতু তাসলিমার ছোট ভাই-বোন আমেরিকান, তাদের দেখাশোনার জন্য বাবা-মা থাকতে পারবে, শুধু তাকে চলে যেতে হবে । পরে ঠিক হয়, তাসলিমার বাবা থেকে যাবে, তাসলিমার সাথে তার মা চলে যাবে। এই পুরা বাংলাদেশী অংশটা অনেক কষ্টের । পুরাটা লিখতে পারলাম না, দেখে নিয়েন।

টরেন্ট লিঙ্ক ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।